নিজস্ব
প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে কুমিল্লায় গুলিতে এক
তরুণকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম
বাহাউদ্দীন বাহারকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার
দুপুরে বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।
মামলায় সাবেক এমপি বাহার ছাড়াও
শহরের ছাতিপট্টি এলাকার আবু তাহের ভূইয়া ওরফে পিস্তল তাহের, সদর দক্ষিন
উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাকতলা এলাকর আবদুল হাই বাবলু, মোগলটুলী ফারুকী
হাউজের সানজিদ, সদর উপজেলার রাইচরের কবির হোসেন, কামাইড়বাগ এলাকার শাহ আলম
ওরফে শুটার আলম, রেইসকোর্সের পুরাতন পাসপোর্ট গলির সুমন ওরফে ল্যাংড়া সুমন,
ঢুলিপাড়ার কামরুল হাসান লিটন ওরফে বোমা লিটন, শ্রিমন্তপুরের দুলাল হোসেন
অপ, পশ্চিম রেইসকোর্সের শাহআলম, ঠাকুরপাড়া আলিফ টাওয়ারের সালেহ আহমেদ
রাসেলসহ ৬৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা কুমিল্লা মহানগরী ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির
সহসভাপতি এবং কুমিল্লা কোটবাড়ি এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী। এর আগে বাহারের
বিরুদ্ধে কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ডজনাধিক
মামলা হয়েছে।মামলার অপর আসামিদের মধ্যে অধিকাংশই বাহাউদ্দীনের অনুসারী।
মামলায়
অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন
চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোডের পূর্ব পাশে
কুমিল্লা শহরমুখী সড়কে বিক্ষোভ মিছিল চলছিল। সেখানে অন্যান্য ছাত্র-জনতার
মতো সাগরও যোগ দেন। একপর্যায়ে প্রধান আসামির (বাহাউদ্দীন) নির্দেশে মামলার
অন্য আসামিরা হত্যার উদ্দেশে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে
হামলা চালায়। এতে গুলিতে সাগরের বাঁ চোখে, মুখে ও মাথার বিভিন্ন অংশে
গুলিবিদ্ধ হয়। আহত ওই তরুণ দেবিদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ গ্রামের আবদুল
মমিনের ছেলে। গুলিবিদ্ধ সাগর হোসেনকে নিজ দোকানের কর্মচারী হিসেবে মামলায়
উল্লেখ করেছেন বাদী গোলাম মোস্তফা।
মামলার বাদী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা
বলেন, সাগর আমার দোকানে প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করে। সেদিন আসামিরা তাকেসহ
আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশে এভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিল।
আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই। সাগরের একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। ছেলেটার পুরো
শরীর ছররা গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গেছে। বলতে গেলে ছেলেটার জীবনই শেষ। আশা করি
আমরা ন্যায়বিচার পাবো।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী চৌধুরী মুহাম্মদ আহাদ
বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তাকে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে
রাতে সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক বলেন, আদালত
থেকে অভিযোগের কপি এখনো থানায় পৌঁছেনি। অভিযোগ পেলে আদালতের নির্দেশনা
অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।