নিঃসঙ্গ অচরিতার্থ প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ
আনোয়ারুল হক ।।
নিঃসঙ্গ অচরিতার্থ প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ (১৯৪৮-২০২৪) অনন্তলোকে যাত্রা করেছেন। তাঁর প্রস্থানের সংবাদ ইতিমধ্যে সকলেই জেনে গেছে। একজন কবি শতজনারণ্যে যেমন একা থাকেন, মৃত্যু-যাত্রায়ও তেমনি নিঃসঙ্গতার অন্যতম দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন আমাদের সময়ের কবি হেলাল হাফিজ। উনসত্তুর থেকে তিনি আমাদের মননে মগজে ‘নিঃসঙ্গ শেরপা’ হয়ে আছেন।
কবি হেলাল হাফিজের সঙ্গে আমাদের পরিচয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর উনসত্তুরের গণ-আন্দোলনের সময়। তখন যেকোন যুবক, কবিতা-প্রেমী জীবনের জন্য দিন-রাত সমান। জনারণ্যে মিছিলে মিছিলে এগিয়ে গেছে সময়। টাউনহলের মঞ্চে কবিতা-পাঠে, গণ-সঙ্গীতের ঢেউয়ের আগায় দোলায়। সেই সময় সারাদেশে যারা কবিতার জোয়ারে ভেসে চলেছে অজানায়, আমরা কুমিল্লার কান্দিরপার, সুইটহোম, জলযোগ, পেড়া-ভাণ্ডারের আড্ডায়, তাদের মুখে মুখে ফিরতো অগ্রজ কবি হেলাল হাফিজের বিখ্যাত কবিতার পংক্তি-
এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়....
যুগের শ্রেষ্ঠ সময়ে কবি হেলাল হাফিজের বলিষ্ঠ উচ্চারণ এক লহমায় তারুণ্যকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। উনসত্তুরের অগ্নিগর্ভ সময়ে তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মিছিলের সম্মুখভাগে রাজপথে যৌবনের পাঞ্জেরি। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রাক্কালে সময়ই যেন তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে কালজয়ী সব কবিতা। 'নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়' চুম্বকের মতো টেনেছে রাজপথের মিছিলকে। 'ব্যবধান' কবিতায় তিনি যখন বলেন, ‘অতো বেশি নিকটে এসো না, তুমি পুড়ে যাবে’! এই উচ্চারণে সাথে সাথে আমরাও পুড়েছি। 'অশ্লীল সভ্যতা' নামক মাত্র ৬ শব্দের কবিতার পংক্তি আমাদের চমক দিয়ে দিয়েছে। -‘নিউট্রন বোমা বোঝো, মানুষ বোঝো না!’ কিন্তু কবিতা প্রেমিরা এই পংক্তির মর্ম বুঝে-শুনে নিজেরাই এক-একটি নিউট্রোন বোমা হয়ে উঠেছে।
দ্রোহে, সংগ্রামে, প্রেমে-বিরহে যাপিত জীবনের প্রতিক্ষণে কবিতাই ছিল হেলাল হাফিজের নিঃসঙ্গ জীবনের একমাত্র অবলম্বন, সঙ্গী। ছিল না সংসার, ছিল না কোন নিশ্চিত আবাস। শেষ শয্যার পাশে কোন প্রিয়মুখ। নিঃসার দেহটি পড়ে ছিল হোটেলের বাথরুমের দরজার পাশে। প্রাণহীন কবিতার শরীর যেখান থেকে এসেছিল সেখানেই ফিরে গেছে। জনশ্রুতি, নিজের এলাকায় ভালোবাসতেন হেলেন নামে একটি মেয়েকে। তাঁদের এই ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দেয়নি মেয়েটির পরিবার। পারিবারিক চাপে অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে হেলাল হাফিজ জীবনের প্রথম প্রেম কখনো ভুলতে পারেননি। বিয়ে না করে কবিতায় উৎসর্গ করলেন নিজেকে। প্রেম-সত্যকে বিশ্বাস করে লিখলেন, ‘ভালোবাসা মিলনে মলিন হয়, বিরহে উজ্জ্বল’। বলেছেন, ‘বেদনা আমার খুব প্রিয়। আমি মনে করি সুখ আমার জন্য অতটা জরুরি নয়। কারণ সুখ শিল্পের জন্যে তেমন কোনো প্রেরণা দেয় বলে আমি মনে করি না। শিল্পের জন্যে জরুরি হচ্ছে বিরহ, বিচ্ছেদ, বেদনা।’
বলা বাহুল্য, প্রেমে তিনি ব্যর্থ হয়ে দুঃখ পেয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন আজীবন। মাত্র তিনটি কবিতার বইয়ের শেষ কাব্যগ্রন্থটির নাম, ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’। আশ্চর্য এই যে, বর্তমান সময়ের কবিদের প্রতিবছর কবিতা-গ্রন্থ প্রসবের তুলনায়, হেলাল হাফিজের প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ থেকে তুতীয় কাব্য গ্রন্থের দূরত্ব তাঁর সারা জীবন। মনে রাখার মতো, হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো, প্রেমে বিরহে নিভৃতে একাকীত্বে উচ্চারণের মতো একাধিক বিরল কবিতা আছে তাঁর কাব্য-ভাণ্ডারে। যে তারুণ্য, যৌবন প্রেমে ব্যর্থ হয় সে খুব অনুচ্চ কণ্ঠে উচ্চারণ করতেই পারে হেলাল হাফিজের ‘ইচ্ছে ছিল’ (যে জলে আগুন জ্বলে, ১৯৮৬) কবিতার পংক্তি-
ইচ্ছে ছিল তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো,
ইচ্ছে ছিল তোমাকেই সুখের পতাকা করে
শান্তির কপোত করে হৃদয়ে ওড়াবো।
ইচ্ছে ছিল সুনিপুণ মেকাপ-ম্যানের মতো সূর্যালোকে কেবল সাজাবো,
তিমিরের সারাবেলা
পৌরুষের প্রেম দিয়ে তোমাকে বাজাবো, আহা তুমুল বাজাবো!
ইচ্ছে ছিল নদীর বক্ষ থেকে জলে-জলে শব্দ তুলে
রাখবো তোমার লাজুক দুই চঞ্চুতে,
জন্মাবধি আমার শীতল চোখ
তাপ নেবে তোমার দু’চোখের।
ইচ্ছে ছিল রাজা হবো-
তোমাকে সম্রাজ্ঞী করে সাম্রাজ্য বাড়াবো,
আজ দেখি-
রাজ্য আছে
রাজা আছে
ইচ্ছে আছে,
শুধু তুমি অন্য ঘরে।
কবি হেলাল হাফিজ সেই সৌভাগ্যবানদের একজন যাঁর কবিতা পাঠকপ্রিয়। আমরা নিশ্চিত, তাঁর কবিতাই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে। আনন্দলোকে অথবা অন্যলোকে প্রস্থানের আগেই ‘প্রস্থান’ নামের কবিতায় জানিয়ে গেছেন, প্রেমিক ভুলে যায় না শাশ্বত প্রেমকে, অথবা জীবনকে যার কোন মরণ নেই। সে আর কতটুকু কষ্ট দেয়, কবি নিজে কষ্ট না পেলে- হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে উচ্চারিত শব্দমালায় তিনি খুব সহজ। সহজ উচ্চারণের জন্যেই হয়ে উঠেছেন চিরকালের মন-জয়ী প্রেমিক কবি।
তখন প্রযুক্তির যুগ নয়, ফেসবুকে, মেসেঞ্জারে প্রেম বিলির কালও নয় সত্তুর-আশির দশক। আমরা হাতে লিখে প্রেমপত্র দেওয়া-নেওয়া করেছি, সেই যুগ। কবি হেলাল হাফিজ সেকালের স্পর্শে, গন্ধে, আবেগে বেড়ে ওঠা কণ্ঠস্বর। সেই সময়ে আমাদের প্রতিদিন সকাল ছিল রঙিন খামে চিঠি লেখার যুগ, পাওয়ার কাল। ডাকবাক্সের বুক থেকে তখন খাকি পেশাকের পিয়ন স্বর্গীয় দূত জিবরাইলের মতো প্রেম-সংবাদ বিলি করে যেতো প্রেমিক-প্রেমিকার হাতে। হেলাল হাফিজের নিম্নোক্ত কবিতার পংক্তি সেই সময় কারো কারো চিঠিতে হৃদয়ের সংবাদ হয়ে ওঠেনি এমন পাষণ্ড প্রেমিক তখন কেউ ছিল না-
এখন তুমি কোথায় আছ কেমন আছ, পত্র দিয়ো।
এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালী তাল পাখাটা
খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিয়ো।
ক্যালেন্ডারের কোন্ পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত
ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিয়ো।
...
আর না-হলে যত্ন করে ভুলেই যেয়ো, আপত্তি নেই।
গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?
আমি না-হয় ভালোবেসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,
নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে
পাঁচ দুপুরের নির্জনতা খুন করেছি, কী আসে যায়?
এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে,
এক মানবী কতোটা আর কষ্ট দেবে!
....
কোন্ কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানে
কোন্ স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে
পত্র দিয়ো, পত্র দিয়ো। -(যে জলে আগুন জ্বলে-১৯৮৬)
অথবা 'ফেরিঅলা' কবিতাটি। কবিতা-প্রেমী অথবা প্রেমে-পড়া তরুণ-তরুণীর মুখে একবারও এই কবিতার চরণ উচ্চারিত হয়নি এমন কাউকে সেকালে যেমন পাওয়া যাবে না, একালেও তেমনি। মনে রাখার মতো কবিতাটির অংশবিশেষ-
কষ্ট নেবে কষ্ট?
হরেক রকম কষ্ট আছে,
কষ্ট নেবে কষ্ট!
লাল কষ্ট, নীল কষ্ট, কাঁচা হলুদ রঙের কষ্ট,
পাথর চাপা সবুজ ঘাসের সাদা কষ্ট,
আলোর মাঝে কালোর কষ্ট,
‘মাল্টি-কালার’ কষ্ট আছে,
কষ্ট নেবে কষ্ট?
...
প্রেমের কষ্ট, ঘৃণার কষ্ট, নদী এবং নারীর কষ্ট,
অনাদর ও অবহেলার তুমুল কষ্ট,
ভুল রমণী ভালোবাসার
ভুল নেতাদের জনসভার
...
কার পুড়েছে জন্ম থেকে কপাল এমন,
আমার মতো ক’জনের আর সব হয়েছে নষ্ট,
আর কে দেবে আমার মতো হৃষ্টপুষ্ট কষ্ট!- (যে জলে আগুন জ্বলে, ১৯৮৬)
বস্তুবাদীরা নিয়তিকে মানুন আর নাই মানুন, তাঁর জীবনে কেন এমন হলো ? এই প্রশ্নের উত্তরে কখনোই একমত হওয়া যাবে না। কবি হেলাল হাফিজ কেন প্রেমে ব্যর্থ হলেন ? কেন তাঁর জীবনটা তাঁর নিঃসঙ্গতায় কেটে গেলো তার জবাব তিনি ‘কেন’তেই জিজ্ঞাসা রেখে দিয়েছেন। ‘যাতায়ত’ নামের নিচের এই কবিতাটি পাঠে পাঠক নিজেও কোন জবাব খুঁজে পাবে না। বলছেন-
কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো!
কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না,
রাত কাটে তো ভোর দেখি না,
কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না, কেউ জানে না!
...
জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো,
শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক;
চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি,
বললো না কেউ─ তরুণ তাপস এই নে চারু শীতল কলস।
লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলাম, তবু এলাম।
....
কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম─ ভালোবাসি। -(যে জলে আগুন জ্বলে, ১৯৮৬)
বঞ্চনার জীবন কেবল তাঁর নিজের নয়। রাষ্ট্রে, সমাজে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে অসাম্যের জীবন হেলাল হাফিজ দেখেছেন। বেশি কথা বলার কবি তিনি নন। নম্রকণ্ঠের দৃঢ়তার কবি হেলাল হাফিজ। ‘একটি পতাকা পেলে’ অনেককিছু পাবার কথা ছিল বাংলাদেশের মানুষের। পায়নি। মুক্তি আসেনি। না পাওয়ার বেদনা সাধারণ মানুষের মুখ থেকে উঠে এসেছে সময়ের কবির কলমে। যেমন-
কথা ছিল একটি পতাকা পেলে
আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা।
...
কথা ছিল একটি পতাকা পেলে
পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে
ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।
কথা ছিল একটি পতাকা পেলে
ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,
বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসম্মানে সাদা দুধে-ভাতে।
কথা ছিল একটি পতাকা পেলে
আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,
সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ
সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে। -(যে জলে আগুন জ্বলে, ১৯৮৬)
কবিতার সংসারে নিজেকে সঁপে দেওয়া হেলাল হাফিজের নিজের ঘর-গেরস্থালি হয়নি। হয়নি অন্যের ঘরে চলে যাওয়া তাঁর প্রেমিকা হেলেনেরও। বিয়ের পর স্বামী কর্তৃক ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কবিতা গ্রন্থটি হাতে পেয়ে অন্তর্দহনে হেলেনের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ‘তালাক’ প্রাপ্ত হয়ে পিতৃগৃহে তারও করুণ জীবনাবসান হয়। অকপট, সহজ, সরল ভাষ্যের প্রেম ও বিরহ, দুঃখ, কষ্টের শিল্পস্রষ্টা কবি হেলাল হাফিজ অচরিতার্থ প্রেমের জীবন আজন্ম কষ্টের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করেছেন নির্মোহ স্বভাবে। কাউকে বুঝতে দেননি। নিজেই পুড়েছেন। মনের ভিতরে অযুত ‘ইচ্ছে’র খামার বয়ে নিয়ে চলে যাওয়া কবির সংখ্যা বাংলা সাহিত্যে কম নেই। জগতের সব কষ্ট কবির একার বলেই তিনি হয়ে ওঠেন অবিনাশী কবি। চেয়েছেন, ‘আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,/ সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ/ সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।' -জেনে গেলেন না তাঁর আশা পূর্ণ হয়েছে কি না। মনে হয়, ভালই হয়েছে। বলতে ইচ্ছে করে খুব, যদিও অলীক স্বপ্ন বাস্তবে,
‘এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পত্র দিয়ো। এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালী তাল পাখাটা/ খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিয়ো।/ ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত/ ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিয়ো।’
সৈয়দ মুজিবুর রহমান দুলাল'র
একগুচ্ছ অনুকাব্য।
।।এক।।
লুকোচুরি
আমি যখন থাকি বিভোর ঘুমে
তুমি তখন করো ডাকা ডাকি।
আমি যখন জেগে উঠি
তুমি তখন বন্ধ করো আঁখি।
।।দুই।।
তরঙ্গের শব্দ
সমূদ্রের কাছে ছুটে গেছি
সমূদ্র আমায় টানে।
ওই সমূদ্রের তরঙ্গের শব্দ
এখনো বাজে কানে।
।।তিন।।
পড়ন্ত বিকেলে
রেলগাড়িটি পড়ন্ত বিকেলে
ছুটছে আপন বাড়ি।
নীল আকাশে রক্তিমাভা,
মন নিয়েছে কাড়ি।
।।চার।।
নীল আকাশ
আকাশের বুকে বিশালতার উপমা,
তোমার হৃদয়ও কম কি ?
দিগন্ত জুড়ে নীল আকাশ,
হাতছানি দিয়ে ডাকছে দেখি।
।।পাঁচ।।
শুধুই বালুচর।
আমি যাকে ভাবছি আপন
সে ভাবছে পর।
বুকটা আমার মরুভূমি
এখন শুধুই বালুচর।
।।ছয়।।
উড়ো উড়ো মন
উড়ো উড়ো মন গোধূলী লগন
দেখতে বেশ চমৎকার।
নীল আকাশে আজ রক্তিমাভা
হাতছানি দিচ্ছে বারবার।
।।সাত।।
শূন্যতা
সবাই একদিন ছেড়ে যাবে
পড়ে রবে মায়া।
শূন্য খাঁচায় রইবেনা কেউ
থাকবে কেবল কায়া।
।।আট।।
উচ্ছ্বাসিত মন
ছেঁড়া দ্বীপে তুমি উচ্ছ্বাসিত মনে
দাঁড়িয়ে আছো সাগরে।
গোধূলী লগনে তোমায় ছুঁয়েছে পানি
পুলকিত মন শিহরে।
।। নয়।।
ঘাটে আসতে মানা
কেমন করে আসবো বলো
পুকুর ঘাটে কচুরীপানা।
জল ভরিবো কেমন করে,
ঘাটে তাই আসতে মানা।
।। দশ।।
আসবেনা ঘাটে
জল ভরিয়া নিতো বধু,
কলসী কাঁকে ভিজতো অঙ্গ।
তোমায় দেখে আসবেনা সে,
একটুখানী দিতে সঙ্গ।