কুমিল্লার
মনোহরগঞ্জে যুবদলের কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় অভিনব ও ‘ভয়ঙ্কর’
অস্ত্রের প্রদর্শনী দেখা গেছে। রিকশা-সাইকেলের ধারালো চেইন-হুইল কেটে অভিনব
কায়দায় বানানো কুড়াল আকৃতির এসব অস্ত্র দিয়ে ধাওয়া ও মহড়ায় আতঙ্ক দেখা
দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে মনোহরগঞ্জ উপজেলা
সদরে যুবদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা
ধাওয়া ও সংঘর্ষের এ ঘটনায় উভয়র পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা
গেছে। সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক
আবুল কালামের সমর্থকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে
অস্ত্রধারীরা কোন পক্ষের সমর্থক তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সংঘর্ষের
সময় প্রদর্শিত ভারতের প্রাদেশিক (তামিল-মালায়লাম-মারাঠি) সিনেমায় দেখানো
ভয়ংকর ধারালো অস্ত্রের মতই দেখতে এসব কুড়ালের ছবি দেখে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে
স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে
সাত আটজনের হাতে থাকা এসব অস্ত্রের দৃশ্য। এদের মধ্যে দুই জনের পরিচয়
নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের আবুল ভান্ডারের
দুই ছেলে আবু সাঈদ ও জহিরুল ইসলাম। সূত্র বলছে, স্থানীয় ওয়ার্কশপে বানানো
হয়ে থাকতে পারে এসব কুড়াল। গ্রামগঞ্জের ওয়ার্কশপে সন্ত্রাসীরা নিজেরাই এসব
অস্ত্র বানিয়ে থাকতে পারেন।
যদিও মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
(ওসি) বিপুল চন্দ্র দে বলেছেন, সংঘর্ষের সময়ে দেখা যায়নি কারো হাতে কোন
অস্ত্র। তবে অনেকেই লোহার তৈরি দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করেছেন বলে তিনি
শুনেছেন। এ ঘটনায় রাত পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে
জানা গেছে, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, টিকটক কিংবা সিনেমায় দেখে সাইকেলের চেইন
হুইলের ধারালো অংশ কেটে আলাদা লোহার রডের সাথে ঝালাই করে বানানো হয়েছে এসব
ধারালো দেশীয় অস্ত্র। এসব অস্ত্রের আঘাতে শুধু জখম কিংবা অঙ্গহানি নয়,
প্রাণহানির শঙ্কাও রয়েছে। অনলাইন তথ্যসূত্রে জানা গেছে এসব ধরনের অস্ত্র
মধ্যযুগীয় যুদ্ধের সময়ে ব্যবহৃত হালবার্ড বা টাঙ্গি কুড়ালের মতই দেখতে।
বৃহস্পতিবার
দুপুরে জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলা সদরে যুবদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে
বিএনপির দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়
গ্রুপের ১০ জন আহত হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন জেলা
যুবদলের সাংগঠনিক টিমের নেতারা। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয় এই
সময়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠনকে
কেন্দ্র করে জেলা যুবদলের একটি সাংগঠনিক টিমের সফর নিয়ে স্থানীয় বিএনপির
বিদ্যমান সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আনোয়ার উল আজীম ও কেন্দ্রীয় বিএনপির
শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামের সমর্থিতদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ও
সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এ সময় পুরো উপজেলা সদরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়
গ্রুপের ১০ জন আহত হয়। এক পর্যায়ে সাংগঠনিক সভার জন্য মনোহরগঞ্জ কলেজ মাঠে
তৈরিকৃত মঞ্চ ও অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে কালাম গ্রুপ সমর্থিতরা চলে যান। পরে
সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।