নিজস্ব
প্রতিবেদক: রাজশাহী নগরের কুমারপাড়া এলাকায় রিকশায় বসে ছিলেন চালক আবদুল
জব্বার। আজ শুক্রবার সকালে রোদ উঠলেও তাঁর গায়ে মোটা গরমের কাপড়। মাথায়
মোড়ানো মাফলার।
আবদুল জব্বার বলছিলেন, রোদ উঠেছে কিন্তু রোদের তেজ কমিয়ে দিচ্ছে ঠান্ডা বাতাস। এই রোদ না থাকলে আরও শীত পড়ত।
রাজশাহী
জেলার ওপর দিয়ে আজ বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। দিনের বেলায় রোদ উঠলেও কনকনে
ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে। দেশের যে ১৩ জেলায় আজ
শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে, এর মধ্যে রাজশাহী একটি। সেখানে আজ সর্বনিম্ন
তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়।
আবহাওয়া
অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়া এবং রংপুর
বিভাগে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রংপুর বিভাগের জেলার সংখ্যা ৮। তাই সব
মিলিয়ে আজ ১৩ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ।
শুধু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া
জেলাগুলোতেই নয়, রাজধানীসহ দেশের প্রায় সর্বত্রই আজ তীব্র শীতের প্রকোপ
ছিল। এর মধ্যে গতকাল শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আবার যেসব এলাকায় রোদ উঠেছে, সেখানে তীব্রতা কমেনি শীতের। এ কারণে জনজীবনে
অনেক স্থানেই নেমে এসেছে স্থবিরতা। আজ ছুটির দিন এমনিতেই রাস্তাঘাটে
মানুষের চলাচল কম থাকে। তীব্র শীত তা আরও কমিয়ে দিয়েছে। নিম্ন আয়ের
মানুষদের বিপত্তি বেড়েছে; কারণ, তাঁদের এই শীতেও কাজের সন্ধানে বাইরে
বেরোতে হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচলে বিপত্তি দেখা দিয়েছে অনেক
স্থানে। শীতজনিত নানা অসুখে হাসপাতালসহ চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে রোগী বেড়েছে।
রাজধানীতে
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সূর্যের দেখা নেই। আগামীকালও রাজধানীতে কুয়াশা
থাকতে পারে। তবে রোদ ওঠারও সামান্য সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ। তিনি আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন,
রাজধানীতে তিন দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। আর
হঠাৎ তাপমাত্রার এই পতনের কারণেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। তাপমাত্রা কমার
আরেকটি কারণ ঘন কুয়াশা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত ৩০
ডিসেম্বর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল বৃহস্পতিবার তা হয় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এ তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে
হয়েছে, ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতিদিন দেশের
৫১টি স্টেশনের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে। সেখানে দেখা গেছে, আজ এর মধ্যে
শুধু দুই স্টেশন বাদ দিয়ে সবখানেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বা এর নিচে। কক্সবাজারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ এবং ওই জেলার কুতুবদিয়া
স্টেশনে তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর
রশীদ বলেন, আগামীকাল তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কুয়াশা
পুরোপুরি কাটতে আগামী আরও তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে।