হোমনা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন সবজি চাষে উৎসাহী হয়ে
উঠেছে। কিন্তু কৃষি প্রণোদনার সরকারি বরাদ্দে বিনামূল্যের সার ও বীজ প্রকৃত
কৃষকরা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রম
শুরু হলে উপজেলার সুবিধাবঞ্চিত কৃষকরা এমন অভিযোগ করেছেন।
কৃষকদের
অভিযোগ, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বেশিরভাগ প্রকৃত ও দরিদ্র কৃষকই
প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু
কর্মকর্তা তাদের সিন্ডিকেটের লোকজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে হাত
মিলিয়ে নামের তালিকা তৈরি করে। এরপর প্রণোদনার সার-বীজ উত্তোলন করে কম
টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করে। পরে প্রকৃত কৃষকরা ডিলারদের কাছ থেকে চড়া
দামে সেগুলো কিনতে হচ্ছে।
এ দিকে প্রকৃত কৃষকরা বাজারে সার, বীজ ও
শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়া স্বত্ত্বেও কৃষি বিভাগের সহায়তা ছাড়াই তারা
সবজির আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছে।
এ ছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারি ভাবে
২৩৮ টি প্রদর্শনী মাঠ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ প্রদর্শনী মাঠের কোন তথ্য
দিতে পারে নাই স্থানীয় কৃষি অফিস। কখন বরাদ্ধ আসে কখন তালিকা করেন তা কিছু
সংখ্যক সুবিধাভোগী ছাড়া কেহ জানেন না।
পৌর সভার হোমনা কান্দা এলাকার
কৃষক ফজলুল হক জানান, মাঠপর্যায়ের অসাধু কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে প্রকৃত
কৃষকরা সার, বীজ ও প্রণোদনা পাচ্ছে না। মাঠ কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট
রয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে প্রকৃত কৃষকরা কৃষি অফিসের আওতায় বিভিন্ন
সুযোগ-সুবিধা থেকে সব সময় বঞ্চিত হচ্ছে। মাঠ কর্মকর্তারা প্রতি বছর
ঘুরেফিরে তাদের পছন্দের লোকদের তালিকাভুক্ত করে সার, বীজ ও কৃষি প্রণোদনা
দিচ্ছেন।
কারারকান্দি গ্রামের কৃষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমি প্রায় ৬০
শতাংশ জমি চাষ করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোনো সুযোগ-সুবিধা
পাইনি। কৃষি অফিসের লোকদের সঙ্গে যাদের ভালো সম্পর্ক, তারাই সব সময় সরকারি
প্রণোদনা পায়।
চুনারচর গ্রামের কৃষক মান্নান মিয়া জানান, সবজিচাষে
সমস্যা লেদা পোকা। শীতের সবজি ফুলকপি, পাতাকপি, লালশাক, পালংশাক ও মুলাসহ
বিভিন্ন সবজির চারা খেয়ে ফেলছে এ পোকা।কিন্ত কৃষি অফিস কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে
না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান বলেন,
প্রণোদনার বরাদ্ধ বিএডিসি থেকে সরবরাহ করে থাকে। আমরা তালিকা করে সার্বিক
ভাবে কৃষকদের সহায়তা করে বিল ভাউছার সমন্বয় করে থাকি। মাঠপর্যায়ে
পরামর্শসহ সামগ্রিক বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সহায়তা
করছেন। কেউ যদি অনিয়ম করে প্রকৃত কৃষকদের সার, বীজ ও প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত
করে, তাহলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, প্রণোদনার
মাধ্যমে খাদ্য সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষে প্রণোদনা বিতরণ করা হচ্ছে। এতে
কোন অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।