নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লায় জেঁকে বসেছে শীত। পৌষের শেষ ভাগে এসে প্রকৃতিতে দেখা
দিয়েছে শীতের তীব্রতা। মাঝে মাঝে দেখা দিচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র শীতে
ঠান্ডা জড়িত রোগের প্রকোপ বাড়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ
বেড়েছে দ্বিগুণ। জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও চর্মসহ নানা রোগে আক্রান্ত
সেবা প্রত্যাশীদের সেবা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক,
কর্মকর্তারা- কর্মচারীরা। তবে রোগীর চাপ সবচেয়ে বেশি ৫শ বেডের এ হাসপাতালের
বহির্বিভাগ, মেডিসিন ও শিশু বিভাগে।
শনিবার ৪০ বেডের শিশু ওয়ার্ডে
ঠান্ডা ছাড়াও শিশুরোগ নিয়ে ভর্তি আছেন প্রায় দ্বিগুণ রোগী। একই অবস্থা
হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডেও। বেড সংকটে বারান্দা এবং ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা
নিতে দেখা গেছে রোগীদের। একে তো রোগির চাপ, তার উপর শিশু রোগীদের সাথে
অতিরিক্ত স্বজন থাকায় তৈরি হয়েছে গেঞ্জি পরিবেশ।
হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের তীব্রতায় এসময় জ্বরসহ শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া,
সাইনাস, টনসিলাইটিস, এ্যাজমা, এলার্জি জনিত সমস্যায় আক্রান্ত রোগিই বেশি
দেখা যাচেছ। শিশুরা সাধারণ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরণের রোগ
নিয়ে হাসপাতালে আসছে। কুমিল্লা ছোড়াও জেলার আশপাশ থেকেও হাসপাতালে আসছে
দূরদূরান্তের রোগীরা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
একই অবস্থা কুমিল্লার আড়াইশো বেডের সরকারি জেনারেল হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুমিল্লার ছোট-বড় হাসপাতালগুলোতেও।
ব্রাহ্মণবাড়ির
কসবা থেকে আসা শিশু আবু রায়হান সপ্তাহখানের থেকে প্রচন্ড কাশি, শ্বাসকষ্টে
ভুগছেন। শুরুতে আক্রান্ত হয় জ্বরে। তার মা রিতা আক্তার বলেন, স্থানীয়
হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ালেও অবস্থার অবনতি দেখে দ্রুত
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন। হাসপাতালে প্রয়োজীয় চিকিৎসা
পাওয়ায় বর্তমানে অনেকটাই সুস্থতার দিকে। তবে রোগির চাপের কারণে বেড না
পাওয়ায় কষ্টতেই কাটাতে হয়েছে ফ্লোরে।
শীতে ঠান্ডাজনতি রোগে আক্রান্ত হয়ে
কুমিল্লা দেবিদ্বার থেকে এসের আবুল খায়ের। ভর্তি আছেন কুমিল্লা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে। জ্বর, সর্দি, কাশি থেকে তার শ্বাসকষ্ট
শুরু হয়। এ্যাজমা রোগে আক্রান্ত ছিলেন জানতেন না তিনি। এ্যাজমা থাকায় তিনি
ঠান্ডা রোগগুলো থেকে সুস্থ হচ্ছিলেন না।
শীতে অতিরিক্ত ঠান্ডায় অন্যান্য
রোগীদের তুলনায় শিশুদেরকে পুষ্টিকর খাবার এবং উষ্ণতায় রাখার পরামর্শ দিয়ে
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মিয়া
মনজুর আহমেদ বলেন, শীতের সময় শিশুদের ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না। প্রয়োজন চাড়া
ঘরের বাইরে শিশুদের না নেয়াই ভালো। ঠাণ্ডা খাবার খাবেনা, উষ্ণ পানিতে গোসল
দিতে হবে এবং শিশুদের বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন,
শীতের এই সময়টাতে বাইরে ধুলাবালি বেশি থাকে ফলে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
কম থাকে তারা দ্রুত রোগাক্রান্ত হয়। ফলে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষদের এই
সময়টাতে সতর্ক থাকতে হবে।