ডোনাল্ড
ট্রাম্প কি সত্যি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান দীর্ঘদিনের যুদ্ধ এক
দিনে বন্ধ করতে পারবেন? আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট
হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মত প্রকাশ করেছেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের
গঠিত টিমের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনের ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য পদ লাভের
সময় পিছিয়ে দেওয়াই যুদ্ধ বন্ধের জন্য যথেষ্ট নয়। গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট
হিসেবে নির্বাচিত হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি টিম রাশিয়া ও ইউক্রেনের
মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই তারা
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের প্রস্তাবিত সদস্য পদ লাভের বিষয়টি
যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে দীর্ঘদিনের জন্য ঝুলিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
ট্রাম্প
তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে অর্থাৎ প্রচারণার সময় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার
জন্য কিয়েভকে দেওয়া অর্থ সাহায্যের বিরুদ্ধে বিদায়ি বাইডেন প্রশাসনের
তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে
তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। সেটি কার্যকর করতে হলে ইউক্রেনকে কী ধরনের
ছাড় দিতে হবে, তা নিয়ে ন্যাটোর সদস্যরা অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েছিল, যা
এখনো চলমান। ট্রাম্পের ধারণা ছিল যে যুদ্ধ চালানোর ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে যতই
অর্থ কিংবা অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করা হোক না কেন, তাতে ইউক্রেনের বিজয়
নিশ্চিত হবে না।
ইউক্রেন কোনোমতেই চলমান যুদ্ধে সাফল্যের মুখ দেখবে না। এ
ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রসহ জোটভুক্ত পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থসম্পদেরই অপচয়
হবে। সুতরাং এই চলমান যুদ্ধ অবসানের জন্য প্রথমেই দরকার একটি লম্বা
যুদ্ধবিরতি। তবে এ ব্যাপারে ট্রাম্পের টিম যে প্রস্তাব দিয়েছে, রাশিয়া তা
প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবে এটি এখানেই থেমে থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। ট্রাম্পের টিম এ ক্ষেত্রে আরো অনেক বিকল্প রাস্তা খুঁজে দেখছে বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার
প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো অবশ্যই এই চলমান যুদ্ধ
থামাতে ব্যাকুল, তবে তাদের সুবিধাজনক শর্তে সেটি হতে হবে বলে কূটনৈতিক
মহলের বিশ্বাস। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী ছিল ট্রাম্পের প্রাথমিক প্রস্তাব,
সেটি জানার জন্য সবাই অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। প্রেসিডেন্ট
ট্রাম্প এক নিঃশ্বাসে তার সব বিরোধ নিষ্পত্তির কার্ডগুলো খেলতে রাজি নন।
তিনি
পর্যায়ক্রমে সব প্রস্তাব উত্থাপন করবেন বলে কূটনৈতিক মহল মনে করে। সে
কারণেই প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রাম্প তার সব নির্ধারিত অপশন প্রকাশ না করে একে
একে সেগুলো মস্কোর কাছে বিবেচনার জন্য পেশ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের ধারণা জন্মেছে যে মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা নিরসন করা রাশিয়া-ইউক্রেন
যুদ্ধের চেয়ে অনেক সহজতর হতে পারে। কারণ তার মতে, রাশিয়া ও ইউক্রেন ভৌগোলিক
অবস্থানগতভাবে প্রতিবেশী হলেও অতীতের সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত রাষ্ট্র
ব্যবস্থার কারণে রাশিয়ায় সামরিক ও বাণিজ্যিক অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে অনেক
পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তা ছাড়া পরিবর্তিত রাশিয়ার এখনো সাম্রাজ্যবাদীদের
কাছ থেকে আগ্রাসন কিংবা নিরাপত্তাজনিত আশঙ্কা কাটেনি। তার মূলে রয়েছে
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ইউক্রেনকে তাদের প্রভাববলয়ে সংযুক্ত করার পুরনো
সিদ্ধান্ত। রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন পদ্ধতির অবসান ঘটলেও
পশ্চিমা সামরিক জোট এখনো তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যূহ রচনা করতে তৎপর। তা
ছাড়া অবস্থানগতভাবে কৃষ্ণ সাগরের বাণিজ্যিক ও সামরিক গুরুত্ব পশ্চিমাদের
কাছে অনেক বেশি। সে অবস্থায় ইউক্রেনের বর্তমান শাসক ভোলোদিমির জেলেনস্কি
তার দেশ ইউক্রেনকে দ্বারস্থ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য পদ লাভের
প্রত্যাশায়। জেলেনস্কি মনেপ্রাণে চাচ্ছেন যে অতি তাড়াতাড়ি তারা পশ্চিমা
সামরিক জোটেও অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন।
উপরোল্লিখিত একটি অবস্থায়
যুক্তরাষ্ট্রে অবসান ঘটেছে কট্টরপন্থী সাম্রাজ্যবাদী প্রেসিডেন্ট জো
বাইডেনের শাসনকাল। নবনির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের
কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সাম্রাজ্যবাদী কিংবা সামরিক
প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাণিজ্যিক স্বার্থ
কিংবা অর্থনৈতিক সাফল্য।
ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব
নিরাপত্তাব্যবস্থা অত্যন্ত বলিষ্ঠ। এ ক্ষেত্রে ন্যাটো জোটের ইউরোপীয়
সদস্যদের নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিজেদেরই গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য তাদের
নিরাপত্তাসংক্রান্ত ব্যয় বহুলাংশে বৃদ্ধি হবে এবং নিজেদের
নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। ট্রাম্প তার আগের শাসনকালেও (২০১৬-২০) এ
বক্তব্য বারবার প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক
স্বাভাবিক করতে অত্যন্ত আগ্রহী। সে কারণেই তিনি চান ইউক্রেন তার নিকটতম
প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গে যাবতীয় ঝামেলা মিটিয়ে ফেলুক এবং এই কাজটি যত দ্রুত
করা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তা ততই মঙ্গলজনক। এখন থেকে দু-এক দশক পর
বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা এ রকম থাকবে না। তখন পশ্চিমা সামরিক জোট
ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা কোথায় কতটুকু থাকবে, তা নিয়ে চিন্তা করে ট্রাম্প চীনের
ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উত্থানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান আধিপত্য
হারাতে চান না। তিনি বিশ্ববাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অত্যন্ত
শক্তিশালী করতে আগ্রহী। সে কারণেই ট্রাম্প ইউক্রেন কিংবা ইহুদিবাদী রাষ্ট্র
ইসরায়েলের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থসম্পদ খোয়াতে মোটেও আগ্রহী নন। এর
চেয়ে বিশ্ববাণিজ্য ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্প চীনকে একটি নির্দিষ্ট
অবস্থানে আটকে ফেলতে চান। সে কারণে প্রথম থেকেই প্রেসিডেন্ট (নির্বাচিত)
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ওপর তার জোটের সদস্য কিংবা অন্য মিত্রদের
নির্ভরশীলতা কমাতে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালে তিনি ডেমোক্রেটিক
দলীয় প্রতিপক্ষ জো বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়ার কারণে তার সম্পূর্ণ
প্রক্রিয়াটিই বিপরীত মুখে ধাবিত হয়েছিল। সে কারণেই পরিবর্তিত অবস্থায় এখন
ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে অতি দ্রুত একটি
স্থিতিশীল ব্যবস্থায় পৌঁছতে অত্যন্ত তৎপর হয়ে উঠেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প
গত ৬ নভেম্বর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে প্রদত্ত এক গুরুত্বপূর্ণ
সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি অবিলম্বে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ স্থগিত করতে চান।
সে লক্ষ্যে কিয়েভের প্রত্যাশিত ন্যাটো সদস্য পদ অন্তত ২০ বছরের জন্য পিছিয়ে
দিতে চান। এতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই চলমান যুদ্ধ থামাতে
আগ্রহী হতে পারেন। পুতিন যুদ্ধ থামাতে আগ্রহী, তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি
মোকাবেলায় অত্যন্ত দ্বিধান্বিত। পুতিন মনে করেন, সার্বিক বিষয়টি এখন
অত্যন্ত জটিল পর্যায়ে চলে গেছে। এই বিষয়টির সার্বিক সমাধান খুঁজে পাওয়ার
জন্য গভীর পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও মতবিনিময় প্রয়োজন। এ ব্যাপারে
বাস্তবতার নিরিখে সব পক্ষ আন্তরিক ও সহানুভূতিশীল না হলে চলমান যুদ্ধ
স্থগিত হতে পারে, কিন্তু আসল সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ
অবস্থায় ট্রাম্পের নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স তার নির্বাচিত
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিস্তারিত পরিকল্পনার ব্যাখ্যা তুলে
ধরেছেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স গত নভেম্বরে সেসব তথ্য প্রকাশ
করেছেন, যা নির্বাচনী ডামাডোলে এখনো খুব একটা গতি লাভ করেনি।
২০
জানুয়ারি এই নতুন টিমের (ট্রাম্প-ভ্যান্স) শপথ গ্রহণের পর বিষয়টি অত্যন্ত
গুরুত্বসহকারে উত্থাপিত হবে বলে তথ্যাভিজ্ঞমহলের ধারণা। ভ্যান্স বলেছেন,
রাশিয়া ও ইউক্রেনের বর্তমান বিভক্তি লাইনকে একটি অসামরিক কিংবা বেসামরিক
জোনে পরিণত করা হতে পারে। এতে রাশিয়া আর ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ চালাতে পারবে
না। এই প্রস্তাবিত জোন এক হাজার ২৯০ কিলোমিটার বা ৮০০ মাইল দীর্ঘ হতে পারে
বলে তার বিশ্বাস। ভ্যান্স বলেন, প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে কিছু
ভূমি রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হবে। এতে রুশ ভাষাভাষী ইউক্রেনের
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার দীর্ঘদিনের
বিরাজিত সমস্যার একটি যুক্তিগ্রাহ্য সমাধান হতে পারে বলে ট্রাম্পের টিম
সদস্যদের ধারণা। এখানে উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়া ইউক্রেনের
প্রায় ২০ শতাংশ ভূমির ওপর তাদের দখলদারি প্রতিষ্ঠা করেছে। এই সার্বিক
সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ নভেম্বর ডোনাল্ড ট্রাম্প জেনারেল (অব.) কিথ
কেলগকে বিশেষ দূত মনোনীত করেন রাশিয়া-ইউক্রেন বিষয়ে কাজ করার লক্ষ্যে।
জেনারেল কেলগ এর আগে প্রস্তাব করেছিলেন যে ইউক্রেন যদি রাশিয়ার সঙ্গে
প্রস্তাবিত শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে রাজি হয়, তবে ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য
দেওয়া অব্যাহত রাখা যেতে পারে। এ পর্যায়ে ইউক্রেনের প্রার্থিত ন্যাটো
সদস্য পদ ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি শান্তি আলোচনায় যোগদানের জন্য
রাশিয়ার ওপর থেকে কিছু অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
জেনারেল কেলগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু বিশেষ সুবিধা দিয়ে দুই পক্ষকে
প্রস্তাবিত শান্তি আলোচনার টেবিলে উপস্থিত হতে উৎসাহিত করা। এ রকম একটি
উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক উদ্যোগ যখন সামনে এগোচ্ছিল, ঠিক সে সময় ইউক্রেন গত
মাসে রাশিয়ার ভূমিতে মিসাইল আক্রমণ চালিয়েছে। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির
জেলেনস্কির সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনকে প্রদত্ত এক
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জেলেনস্কির সেই মিসাইল আক্রমণের নিন্দা জানান। তিনি
অভিযোগ করেন, বর্তমান অবস্থায় কিয়েভের উচিত হয়নি রাশিয়ার শত শত মাইল
অভ্যন্তরে মিসাইল আক্রমণ পরিচালনা করা। এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশ্ন
তোলেন। ট্রাম্প বলেন, এ ধরনের অবিবেকোচিত কাজ শুধু সংকটকে আরো ঘনীভূত
করবে, নিরসন করতে সাহায্য করবে না। তা ছাড়া সেই মিসাইলগুলো ছিল
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নির্মিত। এতে শান্তিকামী মানুষের মনে
বিশ্বব্যাপী এক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট
ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৬ ডিসেম্বর তার বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের প্রার্থিত সদস্য পদের বিষয়টি পিছিয়ে
দিলেই দুই দেশের মধ্যে বিরাজিত সব সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি বলেছেন,
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার গভীরে তিনি এখনো প্রবেশ করতে পারেননি। এ
ধরনের একটি প্রস্তাব ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও পেশ করেছিলেন। এতেও
ন্যাটোতে ইউক্রেনের প্রস্তাবিত সদস্য পদ ১০ থেকে ১৫ বছর পিছিয়ে দেওয়ার
উল্লেখ ছিল, কিন্তু তাতে বিরাজমান মূল সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। কারণ
দৃশ্যমান পরিস্থিতিতে মূল সমস্যা সমাধানের কোনো মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন
দেখা যাচ্ছে না। সে কারণে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভও একই
পন্থায় তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনের
প্রার্থিত সদস্য পদ ২০ বছর পিছিয়ে দিয়ে ইউক্রেনের সীমান্তে যুক্তরাজ্য ও
ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী সেনা মোতায়েন করার ফলে প্রকৃত সমস্যার কি কোনো সমাধান
হবে? সমস্যার গভীরে নিহিত বিষয়গুলো সামনে এনে যুক্তিগ্রাহ্যভাবে সেগুলো
সমাধানের ওপর জোর দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ।
সে জন্য প্রথমেই প্রয়োজন একটি পরিষ্কার ও বিস্তারিত পরিকল্পনা, যা
সত্যিকার অর্থেই মূল সমস্যার সমাধান ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিবেদিত।
কূটনীতির কূটচালে যেন সব কিছু শেষ পর্যন্ত ভেস্তে না যায়। স্লোভাকিয়ার
প্রেসিডেন্ট ফিকো ইউক্রেনে ইউরোপীয় সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবকে অবাস্তব বলে
উল্লেখ করে এর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন,
‘এরা কি আসলেই শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে আসবে, নাকি সেখানে ভিন্ন কোনো
মতলব নিহিত রয়েছে?’
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক