কুমিল্লার
চান্দিনায় পুলিশ পরিচয়ে এক রাতে দুই বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে তিন শিশুর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি
দিয়ে আলমারীর চাবী আদায় করে ডাকাতদল। লুটে নেয় নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও
স্বার্ণালংকার সহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ
করেছে ভূক্তভোগীরা। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) দিনগত রাতে চান্দিনা উপজেলার ১নং
শুহিলপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামে যুবদল নেতা মো. মকবুল হোসেন ও প্রবাসী
মিজানুর রহমানের বাড়িতে পৃথক এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে পরদিন
মঙ্গলবার সকালে চান্দিনা থানা পুলিশ সহ উপজেলা যুবদল নেতা ইসমাইল হোসেন
ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।
প্রবাসী মিজানুর রহমান এর মেয়ে মাহমুদা আক্তার
জানান, সোমবার রাত অনুমান ২টার দিকে আমাদের ঘরের দরজায় পরপর কয়েকটি ধাক্কা
দিয়ে দরজা খুলতে বলেন। আমরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমরা
পুলিশের লোক, থানা থেকে এসেছি’। আমরা দরজা খোলার সাথে সাথেই আমাদেরকে
ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে। এসময় আমার দশ মাস
বয়সী শিশুকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে স্টিলের আলমারীর চাবী
দিতে বলে। আমরা তাতেও চাবী না দেয়ায় আমাদের ঘরের আরও দুই শিশুর গলায় ছুরি
ধরে। বাধ্য হয়ে আমরা স্টিলের আলমারীর চাবী দেই এবং ডাকাতদল আমাদের ঘর থেকে
নগদ অর্থ ৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, ১ ভরি স্বর্ণ ও ৫টি মোবাইল ফোন লুটে নেয়।
পরবর্তীতে আমরা দেখতে পাই ডাকাতদল আমাদের ঘরের কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙ্গে
ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে।
অপরদিকে একই রাত তিনটার দিকে যুবদল নেতা মকবুল
হোসেনের বাড়িতে একই কায়দায় কলাপসিবল গেইট ও কাঠের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ
করে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্টিলের আলমারীর তালা ভেঙ্গে ৫ভরি
স্বর্ণালংকার, নগদ চার লাখ টাকা ও একটি পাসপোর্ট লুটে নেয় ডাকাতরা।
ক্ষতিগ্রস্ত
উভয় পরিবারের সদস্যরা বলেন- ডাকাত দলের সদস্যদের সবার বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর
বয়সের হবে। ডাকাতরা ঘরে প্রবেশের পর ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালায় ও পরিবারের
সদস্যদের মারধরও করে। থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে সকালে এসে ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করে সব কিছু লিখে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় যুবদল নেতা মকবুল হোসেন বাদী
হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
নাজমুল হুদা বলেন- ‘এবিষয়ে আমার কোন কিছুই জানা নেই। ঘটনাস্থলে না গিয়ে
কিছু বলা যাচ্ছে না’। সকালে আপনার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে,
সেটা কি আপনাকে না জানিয়ে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন- ‘সব বিষয়ে নিয়ে নিউজ
করতে হয়না’ বলেই ফোনের সংযোগ কেটে দেন ওসি।
এব্যাপারে সহকারি পুলিশ
সুপার (দাউকান্দি সার্কেল) মো. ফয়সাল আহমে জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ
পেয়েছি, আমরা মামলা গ্রহণ করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের খুঁজে বের করে
আইনের আওতায় নিয়া আসার চেষ্টা করবো।