চলমান
ফুটবল মৌসুমে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ
দুটোই দেখছে। প্রিমিয়ার লিগে টানা ছয় ম্যাচ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে
শীর্ষে তারা। অন্যদিকে, ফেডারেশন কাপে তিন ম্যাচের মধ্যে দুই হারে
সাদা-কালো জার্সিধারীরা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে।
গতকাল
কুমিল্লায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনী ১-০ গোলে মোহামেডানকে
হারিয়েছে। এই হারের পর মোহামেডানের কোচিং স্টাফ ও কর্মকর্তারা টুর্নামেন্ট
থেকে নিজেদের বিদায় প্রায় নিশ্চিত ধরে নিয়েছিলেন। আজ (বুধবার)
টুর্নামেন্টের বাইলজ, পয়েন্ট টেবিল ও ফিকশ্চার পর্যালোচনায় ‘বি’ গ্রুপে
মোহামেডান ও চট্টগ্রাম আবাহনীর বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। এদিকে, ঢাকা আবাহনী ও
রহমতগঞ্জের পরের পর্ব (কোয়ালিফায়ার) প্রায় নিশ্চিত। ফকিরেরপুল দুই ম্যাচে
মাত্র এক পয়েন্ট পেলেও তাদের গাণিতিক সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।
কোনো
টুর্নামেন্টে পরের ধাপে কোয়ালিফাই বা এলিমিনেটেড হলে অনেক দেশের ফেডারেশনের
ওয়েবসাইট/পয়েন্ট টেবিলে সেটা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট ফেডারেশন বা কমিটি।
বাফুফেতে অবশ্য সেই চর্চা নেই। সাংবাদিক বা ক্লাব সংশ্লিষ্টদের নানা
হিসাব-নিকাশ করে সেটি বের করতে হয়।
ফেডারেশন কাপে প্রতি গ্রুপে পাঁচটি
করে দল। প্রতি দল চারটি করে ম্যাচ খেলবে। গ্রুপের দুই শীর্ষ দল উঠবে
কোয়ালিফায়ারে। রহমতগঞ্জ ও আবাহনীর দুই ম্যাচে সমান ৬ পয়েন্ট। তিন ম্যাচে
তিন পয়েন্ট মোহামেডানের। তারা শেষ ম্যাচে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্সের বিপক্ষে
জিতলে ছয় পয়েন্টে দাঁড়াবে। রহমতগঞ্জ ও আবাহনীর মধ্যকার একটি ম্যাচ রয়েছে।
সেই ম্যাচে ড্র হলে দুই দলই কোয়ালিফায়ারে উঠবে। জয়-পরাজয় হলে এক দলের
পয়েন্ট নয় আরেক দলের ছয় থাকবে। পরাজিত দল যদি আরেক ম্যাচেও হারে আর
মোহামেডান শেষ ম্যাচ জিতলে তখন দুই দলের সমান ৬ পয়েন্ট হবে। ফেডারেশন কাপের
বাইলজ অনুযায়ী একাধিক দলের পয়েন্ট সমান হলে হেড টু হেড আগে বিবেচনা হবে।
মোহামেডান আবাহনী ও রহমতগঞ্জ দুই দলের বিপক্ষেই হেরেছে। ফলে
আবাহনী-রহমতগঞ্জের মধ্যকার দুই দলের কেউ দুই ম্যাচ হারলেও বাইলজের
নিয়মানুসারে মোহামেডানের কোয়ালিফায়ারে যাওয়ার সুযোগ নেই।
অনেক
টুর্নামেন্টের বাইলজে একাধিক দলের সমান পয়েন্ট হলে গোল ব্যবধান হিসাব করা
হয়। এক সময় ফেডারেশন কাপেও এমন নিয়ম ছিল। গোল ব্যবধানের হিসাব থাকলে
মোহামেডান ফেডারেশন কাপ টুর্নামেন্টের রেসে থাকত। কারণ রহমতগঞ্জ-আবাহনীর
মধ্যে কেউ দুই ম্যাচ হারলে তখন ওই দলের গোল ব্যবধান কমত, আবার মোহামেডান
শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতলে তখন গোল ব্যবধানে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ
থাকত। হেড টু হেড হওয়াতে অনেক আগেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছে
গতবারের ফাইনালিস্টদের।
মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব
টুর্নামেন্টের বাইলজ নিয়ে বলেন, ‘আসলে এখন হেড টু হেড গোল ব্যবধান নিয়ে
বলার কিছু নেই। এই নিয়ম তো টুর্নামেন্টের আগেই হয়েছে। আমরা আবাহনীর সঙ্গে
কাল খারাপ খেলেছি, আর রহমতগঞ্জের সঙ্গে অনেক সুযোগ মিস করেছে। তারা ভালো
খেলেছে, তাই পরের রাউন্ডে খেলবে স্বাভাবিক। তবে এটা ঠিক যে গোল ব্যবধানের
হিসাব থাকলে আমাদের কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা হলেও থাকত।’
মোহামেডান ২০২৩ সালে
ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। গত বছর হয়েছিল রানার্স-আপ। এবার গ্রুপপর্ব
থেকেই বিদায়। তাই এখন তাদের মনোযোগ পুরোটাই লিগে, ‘আমরা লিগে এক নম্বরে
আছি, সেটাই যেন থাকতে পারি সে চেষ্টাই করছি।’ মোহামেডান পেশাদার লিগে
একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ঘরোয়া লিগে তাদের সর্বশেষ ট্রফি ২০০২ সালে।