বৈষম্য এবং
দুর্নীতি পরস্পরের পরিপূরক। একে অন্যের উপায় ও উপলক্ষ। বিস্ময়কর মনে হলেও
খোদ দুর্নীতির সংজ্ঞা সন্ধানেও দুর্নীতি হতে পারে। যে ব্যাখ্যা নিজের
মনঃপূত নয়, যে বয়ান নিজের ভেদবুদ্ধিজ্ঞানের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, যে বর্ণনায়
নিজের ধ্যান-ধারণারা আশ্রয়-প্রশ্রয় পায় না, সংজ্ঞায়নে সুকৌশলে তা এড়িয়ে
চলাও এক ধরনের দুর্নীতি। চিন্তা থেকে কাজের উৎপত্তি। যে কর্মকাণ্ড
নৈতিকতাবিবর্জিত, সুশাসন, স্বচ্ছতা আর জবাবদিহি যেখানে জবুথবু অবস্থায়, যা
সম্পাদনের দ্বারা অন্যের মৌলিক অধিকার হরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, বঞ্চনা ও
বৈষম্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাই দুর্নীতি।
সুতরাং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া
(কজ অ্যান্ড ইফেক্ট) উভয়ের মধ্যেই দুর্নীতির উপস্থিতি লক্ষণীয়।
চিন্তাভাবনায়, পরিকল্পনায়, সম্পাদনে, ফলাফলে প্রতিক্রিয়ায় সর্বত্র
ন্যায়-নীতিনির্ভরতার অনুপস্থিতির মধ্যেই দুর্নীতির আদি ও অকৃত্রিম অধিবাস।
দুর্নীতি শুধু দৃশ্যমান অন্যায়-অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ, তহবিল তছরূপ, ক্ষমতার
অপব্যবহার, সম্পদের অপচয়, প্রতারণায় সীমাবদ্ধ নয়, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রকেও
দুর্নীতির এখতিয়ারভুক্ত করার বিধান রয়েছে। যে পরিবেশে দুর্নীতি সংঘটিত হয়ে
থাকে, সেই পরিবেশকে এবং সেই পরিবেশ সৃজনকারীকেও দুর্নীতির এজাহারভুক্ত করা
যেতে পারে। সুতরাং নীতি ও নৈতিকতার অভাবে ভৌত ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি, অপচয়,
অপব্যয়, আত্মসাৎ তছরূপ, চিন্তাকর্মে ধ্যানে জ্ঞানে অন্যায়ের কাছে
আত্মসমর্পণ সবই দুর্নীতি। দুর্নীতির ব্যুৎপত্তিগত বিস্তার ব্যাপক, যেমন-
প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার, প্রচলিত নৈতিক ধ্যান-ধারণাকে এড়িয়ে চলা,
মানসিকভাবে প্রতিবন্ধিত্ববরণ, স্বচ্ছতা ও সুশাসনের অভাব, চিন্তাভাবনায়
একদেশদর্শিতা, অসদাচরণ, অসততা, অসাধুতা, অমিতাচার, অনুচিত, অশোভন, অসমীচীন,
অন্যায়, দলীয়করণ ও পক্ষভুক্তকরণ, নিষ্ঠুর আচরণ, ন্যায়বিরুদ্ধতা- সবই
দুর্নীতির সংসারে শরিকানাভুক্ত।
মানবজীবনে দুর্নীতির সূত্রপাত সেই
স্বর্গবাসের কাল থেকে। আদি পিতা-মাতা শয়তানের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিধাতার
নির্দেশনা অমান্য করেছিলেন। বোধি (জ্ঞান) বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করার মতো অবৈধ
কাজের প্রতি তাদের মনে আগ্রহের বীজ বপন করে দিয়েছিল যে শয়তান (মন্দ
প্রবণতা) সে এখনো সক্রিয়, সর্বদা-সর্বত্র তার তৎপরতা। বৈধতার চাইতে অবৈধতার
প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র সর্বজনীন। আর এই ষড়যন্ত্রের ফাঁকে পা
দেওয়াই দুর্নীতি। মানুষের অস্থিমজ্জায় প্রবাহিত খারাপ প্রবণতার সুযোগ পেলে
অবৈধতার প্রতি ঝুঁকে পড়ে। মানবমনে নৈতিক ও অনৈতিক শক্তির নিরন্তর লড়াই
চলছে। নৈতিকতার শক্তি পরাস্ত হলে অনৈতিক পক্ষ বিজয়ী হয়, ফলে সে
দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। নৈতিকতার শক্তিকে সাহস জোগাতে, প্রবল করতে যুগে
যুগে ধর্ম, নীতিশাস্ত্র, আইনকানুন, নানান উপায় ও উপলক্ষ নির্মাণ করে চলেছে।
আইনের শাসন, বিবেকের আদালত, সুশাসন ও জবাবদিহির সুস্থ পরিবেশের প্রভাব
যেখানে বেশি সজ্ঞান-সক্রিয়, সেখানে দুর্নীতি কম। আবার যেখানে পরিস্থিতি
ভিন্ন, সেখানে দুর্নীতি বেশি।
বর্তমান বিশ্বে যেসব দেশে ও অঞ্চলে
সরকারি সম্পদ-সম্পত্তি-সৌভাগ্য ‘ভাগাভাগির’ অর্থনীতি, ‘আত্মসাৎ অপব্যয়ের’
অর্থনীতি-আর্থিকসহ নানান রাজনৈতিক উৎকোচের ‘কেলেঙ্কারির’ অর্থনীতি
যুগপৎভাবে বেগবান ও বিদ্যমান, সেসব সমাজে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির
বিষবাষ্প বা দুর্নীতির দুষ্টচক্র নানান পরিচয়ে পরিব্যাপ্ত। আর
স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘটছে এর সামাজিক বিস্তার।
‘জনগণের জন্য’, ‘জনগণের
দ্বারা’ নির্বাচিত ‘জনগণের সরকার’-এ জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। গণতন্ত্রের এটিই
সাফ কথা। এ নীতিবাক্যের আলোকে জনগণের সম্পদ, দেশ ও অর্থনীতির
সার্বভৌমত্বসহ সব স্বার্থ, নিরাপত্তা ও অধিকার, ক্ষমতা সবই সংরক্ষণের
‘দায়িত্ব’ যেমন সরকারের ওপর বর্তায়, তেমনি দায়িত্বশীল আচরণের দায়দায়িত্বও
জনগণের। নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলীয় সরকার দল-মতনির্বিশেষে সব পক্ষের
হয়ে যায়, ‘কোনো প্রকার রাগ বা অনুরাগের বশবর্তী’ হয়ে কোনো কর্মকাণ্ড
পরিচালনা না করার শপথ সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে যায়। সেই
শপথের ব্যত্যয়ে সব জনগণের সম্পদ ও স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব পালনে অপারগ
পরিবেশ পরিস্থিতিতে সরকার রক্ষক থেকে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে তা তুল্য
হয় মহাদুর্নীতির (মৎধহফ পড়ৎৎঁঢ়ঃরড়হ) সঙ্গে। সে পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রের
মৌলিক মর্মমূলে আসে আঘাত। সাম্প্রতিক বিশ্বে কয়েকটি ছোট-বড় দেশে, অঞ্চলে ও
অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নির্বাচিত কয়েকটি গণতান্ত্রিক সরকার।
এসব সরকার নিজেই কলাকৌশলে দুর্নীতির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে চলে গেছে।
আমজনতার
অর্থনীতিতে ভাগ বসিয়েছে আত্মসাতে উন্মুখ দুর্নীতিবাজ নীতিনির্ধারক জনগণের
ভাগ্যবিধায়ক সরকার। তাদের সাফল্যসমূহ ম্লান হয়ে গেছে সীমাহীন দুর্নীতিতে,
সেখানে ব্যাহত হয়েছে উন্নয়ন আর নানান নেতিবাচক মনোভাব এসে চিড় ধরিয়েছে
জনগণের আস্থায়। এমন পরিস্থিতিতে কোথাও কোথাও উদ্ভব হয়েছে ভিন্ন পথ ও
পন্থার। দেখা গেছে, যতগুলো কারণে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পথ ও পন্থার
সরকারের পতন বা পরিবর্তন ঘটেছে তাদের দুর্নীতিই বরাবরই শীর্ষ কারণ হিসেবে
সামনে এসেছে।
দুর্নীতি নানান উপায়ে, প্রকারে ও ক্ষেত্রে হতে পারে।
ছোটখাটো ব্যাপারে অন্যায়-অনিয়মকে না দেখার ভান করে প্রশ্রয় দিয়ে, সামান্য
পারিতোষিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে, দায়িত্ব পালনে ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতার দ্বারা
পুঁচকে প্রকৃতির দুর্নীতি (ঢ়বঃঃু পড়ৎৎঁঢ়ঃরড়হ) হয়ে থাকে, আর ব্যাপক আকারে
বৃহত্তর পরিসরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বা অর্থের, আত্মসাৎ অবৈধ অর্জন কিংবা
তছরুপের দ্বারা মহাদুর্নীতি (ংুংঃবসরপ পড়ৎৎঁঢ়ঃরড়হ) সম্পাদিত হয়ে থাকে। আর
যদি সময় ও সমাজে নানান নিয়মকানুনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যে দুর্নীতি তা পদ্ধতিগত
দুর্নীতি (সড়ৎধষ পড়ৎৎঁঢ়ঃরড়হ)। বিশ্বাস, ধারণা, চিন্তাচেতনায় দুরভিসন্ধি
এঁটে, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিত্ব বরণ করে যে দুর্নীতি তা নৈতিক দুর্নীতি; সালিশ
বা বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বা ছলচাতুরীর আশ্রয়
নিয়ে যে দুর্নীতি তা আইনের দুর্নীতি (ষবমধষ পড়ৎৎঁঢ়ঃরড়হ)। এসব দুর্নীতির
মধ্যে আছে আন্তসংযোগ, রয়েছে পরস্পর প্রযুক্ততাও।
অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ
কষ্টার্জিত নয়। কোনো সম্পদ সৃষ্টি কিংবা সেবার বিনিময়ে এটি অর্জিত হয় না
বিধায় এই টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রেও চাহিদা, সরবরাহ, উপযোগিতা, বাছবিচার চলে না
বলেই এই অর্থ অবাধে খরচের ফলে মূল্যবৃদ্ধির কারণ ঘটিয়েও আর্থসামাজিক
ভারসাম্যে ব্যত্যয় ঘটিয়ে থাকে। সমাজে অবৈধ আয়ের অর্থ অধিক ব্যয়ের চাকচিক্য
সীমিত আয়ের মানুষদের কাছে দুঃসহ যন্ত্রণা ও মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সমাজে বৈষম্য সৃষ্টিতে অবৈধতার প্রতিযোগিতার পরিবেশে খেসারত দিতে হয় নীতি ও
নৈতিকতার মূল্যবোধকেই। একসময় হাতে গোনা গুটিকয়েক লোক হয়তো দুর্নীতির সঙ্গে
জড়িত হতো, সংখ্যাগুরু নীতিবানরা সবাই তাদের ঘৃণা করত, কিন্তু ক্রমান্বয়ে
দুর্নীতিবাজের মিছিল বড় হয়ে নীতিবানরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়ে ‘ইধফ সড়হবু
ফৎরাবং ধধিু মড়ড়ফ সড়হবু ভৎড়স ঃযব সধৎশবঃ’ থিউরিতে পরিস্থিতি এমনভাবে মোড়
নিতে পারে যে, নীতি ও নৈতিকতা একঘরে হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে উপনীত হতে পারে।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে একটি দপ্তরে সাধারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কর্মসম্পাদন
প্রক্রিয়ায় যারা থাকেন তারা সবাই উপরির অর্থ সমানভাবে নিতে বা পেতে বাধ্য
হন।
মধ্যবর্তী কেউ একজন এ অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে না চাইলে তিনি
সেখানে থাকতে পারবেন না, প্রথমত তাকে ভুল বোঝা হবে, তাকে অনিয়মের ভাগিদার
না করলে পরে সে এ অনিয়ম ফাঁস করে দিতে পারে এমনকি পরবর্তীকালে এ অনিয়মের
তদন্তকাজে অংশ নিয়ে অন্যদের ফাঁসিয়ে দিতে পারে, এমনটি ভেবেই তাকে অনিয়মের
পক্ষভুক্ত হতে বাধ্য করা হয়। ভাবখানা এই হয়- সততা ও নৈতিকতাকে তালাক দিয়ে
আমাদের সঙ্গে একাকার হয়ে যাও না হলে আলাদা পথ দেখ বাপু। এ ধরনের পরিবেশ বা
পরিস্থিতিতে দশের চক্রে ভগবানকে ভূত বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। সমাজে
ভালো বা নিরপেক্ষ লোকের জন্য দারুণ দুঃসংবাদ এটি। আমলা বলি আর সুশীল সমাজ
বলি, বুদ্ধিজীবী বলি আর পেশাজীবী বলি- সব ক্ষেত্রে এভাবে দলীয়করণ বা
পক্ষভুক্তকরণের মহড়া চলতে থাকায় দল ও মতনিরপেক্ষদের বিড়ম্বনা বাড়তেই থাকে।
এমন
পরিবেশে দেখা যাবে আমলারা অধিকমাত্রায় রাজনৈতিক হয়ে পড়ছেন আর রাজনীতিতে
নীতিনির্ধারকরা আমলার মতো আচরণে নিষ্ঠাবান হতে চলেছেন। অর্থাৎ যার যা করণীয়
তা তিনি করছেন না, যার যা হওয়া উচিত নয় তিনি তাই-ই হচ্ছেন। কেউ স্বেছায়
কেউবা বাধ্য হয়েই হচ্ছেন। এসবই একইভাবে দুর্নীতির নিয়ামক এবং দুর্নীতির
প্রতিফলও বটে। এমতবস্থায় সমাজে বা পরিবেশে এখন দুর্নীতি এড়িয়ে চলায় ঝুঁকি
বাড়ে এবং এর অনিবার্য প্রতিক্রিয়া দেশ ও সমাজে বেশ হলাহলপূর্ণ পরিস্থিতির
জন্ম দিয়ে থাকে। এভাবে সমাজের মধ্যকার সৃজিত বৈষম্য উদ্ভূত পরিস্থিতিতে
দলীয়করণ, পক্ষভুক্তকরণের অস্বচ্ছ অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে নৈতিকতা ও
নিরপেক্ষতার বিড়ম্বনা-বিপত্তি বাড়তেই থাকে। সভ্যতারসংকট শুরু হয় এভাবেই।
দুর্নীতি
‘দমন’ কার্যক্রম মূলত দুর্নীতি হওয়ার পর তার কারণ অনুসন্ধান ও দায়দায়িত্ব
নির্ধারণের কার্যক্রমকে নির্দেশ করে। এটি পোস্টমর্টেম প্রকৃতির পদক্ষেপ।
দুর্নীতি দমনে দুর্নীতির প্রতিরোধের পরোক্ষ প্রেরণা বা সুযোগ বাঞ্ছিত হলেও
যথাসময়ে যথাযথ ‘দমন’ কার্যক্রমে অপারগতা বা বিলম্ব বা পক্ষপাতিত্বসুলভ
ভিন্নতা দুর্নীতি এড়িয়ে চলার স্থলে অধিক হারে দুর্নীতি করার পরিবেশ সৃষ্টি
হতে পারে। দুর্নীতি দমন সংস্থার নিজস্ব স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা, দক্ষতা,
প্রয়োগ কুশলতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে দুর্নীতি দমন দ্বিধান্বিত হতে পারে।
দুর্নীতি
হওয়ার পর শুধু নয়, দুর্নীতির উৎসমূলে প্রতিরোধের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা
গড়ে তোলার আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। কীভাবে, কেন দুর্নীতি হচ্ছে কোন কোন
অনুষঙ্গ এর জন্য দায়ী, সেসব সমস্যাকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত
প্রতিবিধান প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে সমাজে নৈতিক
মূল্যবোধের বলিষ্ঠ বিকাশে এবং এ ব্যাপারে নীতিনির্ধারককে সহায়তার ক্ষেত্রে
সমাজউন্নয়ন বীক্ষণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়ার ভূমিকা
অগ্রগণ্য। বন্যা হওয়ার পর বাঁধ দেওয়ার কথা ভাবার চাইতে বন্যার উৎস
অনুসন্ধান এবং সেখানকার শুদ্ধিকরণ অগ্রাধিকারে আসা উচিত। সুতরাং দমনের
চাইতে নিয়ন্ত্রণে, নিয়ন্ত্রণের চাইতে প্রতিরোধে, প্রতিরোধের চাইতে
প্রতিশোধনে বিশেষ মনোযোগ ও বিবেচনায় আনা আবশ্যক হবে দুর্নীতি প্রশমন
প্রয়াসে।
সবার স্বার্থেই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে সবারই সচেষ্ট হওয়া উচিত।
দুর্নীতির করাল গ্রাসে অর্থনীতি, সমাজ, সংসার, দেশ সব কলুষিত হতে পারে, দেশ
ও চরিত্রের সুনাম নষ্ট হলে তার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া সবাইকে ভোগ
করতে হয়। সুতরাং নিজে ‘ভালো’ থাকলেই যথেষ্ট নয়, অন্যেরা মন্দ হলে নিজের
ভালোত্ব চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে কতক্ষণ।
লেখক: সরকারের সাবেক সচিব এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান