বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
২ মাঘ ১৪৩১
সবজিতে স্বস্তি, মাংসের দাম চড়া
প্রকাশ: শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫৪ এএম আপডেট: ১১.০১.২০২৫ ২:১১ এএম |

 সবজিতে স্বস্তি, মাংসের দাম চড়া
শীতের শুরু থেকেই নতুন সবজিতে ভরে গেছে বাজার। এতে দামও কমেছে। নাগালের মধ্যে চলে এসেছে আলুর দাম। তবে পেঁয়াজের দাম রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। আর মাংসের বাজার বরাবরের মতোই চড়া। 
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। 
আজ বাজারে নতুন সাদা, লাল ও বগুড়ার আলুর দাম প্রতি কেজিতে কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। অপরদিকে পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। তবে বাছাই করে তুলনামূলক ছোট আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পাঁচ টাকা কমে। আজ এই বাজারে কেবল দেশি পেঁয়াজই বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৫৫ এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি নতুন সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, নতুন লাল আলু ৩৫ টাকা, নতুন বগুড়ার আলু ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন ২৪০-২৫০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ২৪০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ দরে।
এ ক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় আজ মানভেদে প্রতি কেজিতে নতুন দেশি সাদা আলু ও বগুড়ার আলুর দাম কমেছে ১০ টাকা, নতুন দেশি লাল আলুর দাম কমেছে ১৫ টাকা করে। এছাড়া প্রতি কেজিতে চায়না আদার দাম বেড়েছে ২০ টাকা, দেশি রসুনের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া চায়না রসুনের দাম কমেছে ১০-২০ টাকা। অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আলুর দাম অনেক কমেছে, হয়তো আরও কমবে। তবে পেঁয়াজের দাম আর কমবে বলে মনে হয় না। কারণ এর কম হলে কৃষকের লস হয়ে যাবে।’
আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ কেন বিক্রি করবো আর কেন মানুষ কিনবে? আমাদের পেঁয়াজের দাম এখন কম। আমার কাছে চার-পাঁচ কেজির মতো ভারতীয় পেঁয়াজ আছে। ৮০ টাকা করে বিক্রি করছি। এটা শেষ হলে আমি আর রাখবো না।’
নিম্নমুখী সবজির বাজারে আজ সবজির দাম আরও কমেছে। বেশির ভাগ সবজির দাম কমলেও বাড়েনি কোনোটির। এছাড়া বেশ কিছু সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আজ  টক টমেটো ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ টাকা, শিম ৩০-৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৫০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, শসা ৩০-৫০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, লাল মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, পেঁয়াজকলি ৫০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ২০-৩০ টাকা, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ২৫ টাকা, এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।
গত সপ্তাহের তুলনা আজ প্রতি কেজিতে টক টমেটো ২০ টাকা, দেশি গাজর ১০ টাকা, শিম ১০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০ টাকা, শসা ১০-২০ টাকা, করলা ১০ টাকা, মুলা ১০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, ধুন্দল ১০ টাকা, ঝিঙা ২০ টাকা, বরবটি ২০-৩০ টাকা, কচুরমুখী ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১০ টাকা এবং ধনেপাতার দাম ১০ টাকা কমেছে। প্রতি পিসে চাল কুমড়ার দাম কমেছে ২০ টাকা, ফুলকপি ৫-১০ টাকা, বাঁধাকপির দাম কমেছে ১০ টাকা। এছাড়া হালিতে কাঁচা কলার দাম কমেছে পাঁচ টাকা এবং লেবুর দাম ৫-২০ টাকা কমেছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। 
নতুন বছরের আগমনকে সামনে রেখে মুরগির মাংসের দাম বাড়লেও এখন পর্যন্ত তা সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। পিকনিক, বিয়ের মতো নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের আধিক্য থাকার কারণ উল্লেখ করে এই মাংসের দাম কমছে না বলে জানান বিক্রেতারা। একই কারণ দেখান গরু ও খাসির মাংসের বিক্রেতারাও।
আজ বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ টাকায়। এছাড়া আজ ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৯৭-২০০ টাকা, কক মুরগি ৩৩৭-৩৪৭ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০-২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা, সাদা ডিম ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনা আজ প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগি দাম কমেছে তিন টাকা। আর কক মুরগির দাম ২-১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া প্রতি কেজিতে খাসির মাংসের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা। গরুর মাংস, দেশি ও লেয়ার মুরগি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়াও আজ ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিমের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত। 
গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে মোল্লা গোস্ত বিতানের বিক্রেতা মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘আমরা বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আমাদের হাতে কিছু নেই। তবে দাম আর কমবে না যতদূর জানি। শবে বরাত থেকে দাম ৮০০ টাকাও হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
খাসির মাংসের দাম বাড়া প্রসঙ্গে আব্বাস গোস্ত বিতানের বিক্রেতা মো. মাহবুব বলেন, ‘এখন চারদিকে বিয়ে, পিকনিক চলছে। চাহিদা বেশি কিন্তু খাসি কম, তাই দাম বেড়েছে।’
এদিকে মুরগির মাংসের দাম না কমার কারণ জানিয়ে এক বিক্রেতা বলেন, ‘এখন শীতের সিজন। বিয়ে, পিকনিক, পার্টি লেগেই আছে। মুরগির চাহিদা অনেক। এই কারণেই দাম কমছে না।’
এছাড়া আজকের বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৭৫০-২৬০০ টাকা, রুই ৩৫০-৬৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৭০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১ হাজার ৫০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, কৈ ২৫০-১ হাজার টাকা, পাবদা ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-১ হাজার টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১ হাজার টাকা, শোল ৭০০-১ হাজার ২০০ টাকা, মেনি ৬০০ টাকা, চিতল ৫০০-১ হাজার টাকা, সরপুঁটি ২০০-৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আজকের বাজারেও মুদি দোকানের পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে দাম বৃদ্ধির এক মাস পার হলেও সয়াবিন তেলের বাজার এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এখনও বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, তারা সয়াবিন তেল সেভাবে পাচ্ছেন না। যা পাচ্ছেন তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। অপরদিকে বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, সবজি-আলু-পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে এলেও মুদি দোকানের পণ্যের দাম এখনও বেশি। তারা এসব পণ্যের দাম কমানোর দিকে নজর দিতে বলেন।
আজ বাজারে ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৩৫ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৭০ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ সময় বাজার করতে আসা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সবজি-আলু-পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। কিন্তু মুদি দোকানের পণ্যের দাম কমে না। এগুলো দীর্ঘদিন একই দামে থাকে এবং বেশি দামে থাকে। এসব পণ্যের দাম কমানো উচিত। না হলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসবে না। সরকারের উচিত এসব পণ্যের দামের দিকে নজর দেওয়া।’













সর্বশেষ সংবাদ
পদত্যাগ করলেন টিউলিপ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
দুটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসী আটক
কুমিল্লায় দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লা মেডিকেল ছেড়ে কোথায় গেলো শিশুটি?
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে পুলিশে সোপর্দ
প্লাস্টিক জমা দিন গাছের চারা নিন
কুমিল্লায় ‘প্রেমিকের’ সাথে দেখা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার দুই নারী
অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ
অনার্সে জিপিএ-৪ পেয়ে বাজিমাত ভিক্টোরিয়ার সাদিয়া
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২