এ
মুহূর্তে পরিবারের সঙ্গে ইংল্যান্ডে ছুটি কাটাচ্ছেন পিটার জেমস বাটলার।
ঢাকায় ফিরবেন চলতি জানুয়ারির শেষের দিকে। তার অনুপস্থিতিতে অবশ্য কাজ থেমে
থাকছে না। এই ইংলিশ কোচ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, অনুশীলনের
পরিকল্পনা সাজিয়েই তিনি ছুটি কাটাচ্ছেন। কাজ যোগ দিয়ে
সাবিনা-মনিকা-মারিয়াদের আরও আগ্রাসী ও পেশাদার ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার
চেষ্টা করবেন।
বিতর্ক ও নানা ঘটনার পর রোববার আরও এক বছরের জন্য জাতীয়
নারী ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন বাটলার। উইমেন’স সাফ
চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা এই কোচ আগামীতে দলে আরও শৃঙ্খলা আনতে চান।
“আমার
চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে, পেশাদারিত্বের উন্নতি ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধির সঙ্গে
সঙ্গে খেলায় রোমাঞ্চ জাগানিয়া স্টাইল তৈরি করা; আরও উন্নতি করা এবং ২০২৪
সাল থেকে যে ঘরানায় আমরা খেলছি, সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।”
“শীর্ষ
পর্যায়ের ফুটবলে খেলার যে অভিজ্ঞতা আমার আছে, সেটা কেবল মেয়েদের ক্ষেত্রে
কাজে লাগানো নয়, যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে অনান্য ক্ষেত্রেও দীর্ঘমেয়াদে কাজে
লাগাতে চাই আমি।”
অনান্য ক্ষেত্রে অবশ্য বাটলারের আপাতত ভূমিকা রাখার
সুযোগ কমই। এলিট একাডেমির দায়িত্ব এরই মধ্যে গোলাম রব্বানী ছোটনের হাতে
তুলে দিয়েছে বাফুফে। চুক্তি নবায়ন না হলেও পুরুষ দলের কোচ এখনও হাভিয়ের
কাবরেরা, যদিও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা-শঙ্কা দুটোই আছে।
২০২৩ সালে বাটলার
দায়িত্ব নেন বাফুফের এলিট একাডেমির। গত সেপ্টেম্বরে উইমেন’স সাফ
চ্যাম্পিয়নশিপের ছয় মাস আগে তার কাঁধে ওঠে নারী ফুটবল দলের ভার। সাফল্যের
নিক্তিতে সে ভার তিনি বয়েছেন ভালোভাবে। অল্প সময়ের মধ্যে দল গুছিয়ে নিয়ে
বাংলাদেশকে এনে দেন মেয়েদের সাফের দ্বিতীয় শিরোপা।
তবে নেপালে আসর
চলাকালেই সিনিয়র খেলোয়াড়দের সাথে তার দ্বন্দ্বের খবর চাউর হয়। অভিযোগ আর
পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দলের পরিবেশ। অবশ্য বিতর্কের ডামাডোলের
মধ্যেই ফাইনালে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে লক্ষ্যপূরণ করে নেয় বাংলাদেশ।
সে
বিতর্কের রেশ অবশ্য শিরোপা জয়ের পরও থেকে যায়। বাটলারের কোচের দায়িত্বে
ফিরে আসা নিয়েও তৈরি হয় প্রবল সংশয়। তবে সব অনিশ্চয়তার অবসান করে ৫৮ বছর
বয়সী এই কোচের সাথে এক বছরের চুক্তি সেরেছে বাফুফে।
গত ডিসেম্বরে ছুটিতে
ইংল্যান্ডে ফিরে যান বাটলার। তবে ক্লাব ক্যারিয়ারে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের
দল ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডে খেলা এই মিডফিল্ডার জানালেন, যাওয়ার সময়ই সহকারী
কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু ও বাকিদের অনুশীলনের পরিকল্পনা দিয়ে গিয়েছিলেন
তিনি। ফিরে এসে নব উদ্যোমে কাজে নেমে পড়তে চান এবার।
“আমি এখানে
(ইংল্যান্ডে) আসার আগেই মেয়েদের জন্য পরিকল্পনা (অনুশীলন) সাজিয়ে রেখে
এসেছিলাম এবং সেটা সহকারী কোচদের দিয়ে এসেছিলাম। তারা লম্বা সময় আমার সাথে
কাজ করছে এবং বিষয়গুলো তারা যথেষ্ট ভালোভাবে জানে। মেয়েদের প্রতি আমার
বার্তা হচ্ছে, কাজে ফেরার জন্য এবং আরও স্মার্ট হওয়ার জন্য প্রস্তুত হও।”
২০২২
সালে বাংলাদেশ প্রথম মেয়েদের সাফ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের
হাত ধরে। ২০২৪ সালে বাটলারের অধীনে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবল
শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখে দল। ২০২৬ সালে হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের লক্ষে
বাটলারের উপরই আস্থা রাখছে বাংলাদেশ।