আসন্ন
রমজানে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে বিশ্লেষণ করেছে
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সম্প্রতি এ বিশ্লেষণ
প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়,
আন্তর্জাতিক বাজারদরের নিম্নমুখী প্রবণতার পাশাপাশি পণ্যের বাজারে মূল্য
সহনশীল রাখতে অন্তর্র্বতী সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বাজার পরিস্থিতি
ইতিবাচক হচ্ছে। রমজানেও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল
থাকবে।
রমজান সামনে রেখে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সার্বিক পরিস্থিতি
পর্যালোচনা সংক্রান্ত ওই প্রতিবেদনে দেশের পণ্য আমদানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক
রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সেখানে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় স্থানীয় বাজারে
কম দামে পণ্য ক্রয় করতে পারবে সাধারণ মানুষ।
যদিও সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও
সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে
সরকার, সে বিষয়টি বিবেচনায় আসেনি ট্যারিফ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে।
বিশ্বব্যাংকের
পণ্যমূল্য তথ্য বিশ্লেষণ করে ট্যারিফ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা
হচ্ছে, গত ডিসেম্বর (২০২৪) থেকে এনার্জি, নন-এনার্জি, খাদ্যপণ্য ও বিভিন্ন
পণ্যের কাঁচামাল ও সারের মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজমান। শুধু চাল
ভুট্টা ও বার্লির দাম বাড়ছে। পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্ন
ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক অনেক পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার
সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সে হিসেবে বাংলাদেশে আমদানি নির্ভর অত্যাবশ্যকীয়
পণ্যের মূল্য কমবে।
ট্যারিফ কমিশন বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের
মূল্যে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজমান থাকা এবং ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর
হ্রাস করায় পবিত্র রমজানে ভোজ্যতেলের স্থানীয় মূল্য হ্রাসের সম্ভাবনা
রয়েছে।
এছাড়া চালের স্থানীয় উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় সরকার চাল আমদানিতে সব
প্রকার শুল্ক-কর অব্যাহতি দিয়েছে। যে কারণে চাল আমদানির জন্য ৪ লাখ ৭৫
হাজার টনের এলসি খোলা হয়েছে। এসব চাল দেশে আসলে চালের বাজার নিম্নমুখী হবে।
পাশাপাশি আমদানিতে শুল্ক-কর রেয়াত দেওয়া এবং শুল্কায়ন মূল্য যৌক্তিকীকরণ
করা হয়েছে। এ উদ্যোগের ফলে খেজুর আমদানির এলসি খোলার প্রবণতা বেড়েছে। এতে
রমজানে ভোক্তারা গত বছরের তুলনায় কম দামে খেজুর কিনতে পারবে।
তবে আমদানি
ব্যয় নির্বাহে ব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রার মান ধরে রাখা প্রয়োজন এবং রাজস্ব ও
মুদ্রা নীতি ঠিক রাখা আবশ্যক বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে বলে মন্তব্য করে ট্যারিফ
কমিশন।
এছাড়া মসুর ডাল ও ছোলার আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারে এ দুটো পণ্যের মজুত ও সরবরাহ মনিটর করা প্রয়োজন।