মাহিদুল ইসলাম
অঙ্কন-আফিফ হোসেনে জয় দেখছিল খুলনা টাইগার্স। আরও স্পষ্ট করে বললে জয় ছিল
মাত্র সময়ের ব্যাপার। কিন্তু রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে শেষ তিন ওভারে ৬
উইকেট হারিয়ে উলটো হেরে বসে সুরমা পাড়ের দলটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক
স্টেডিয়ামে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) আগে ব্যাটিং করে রংপুর ১৮৭ রানের লক্ষ্য
দেয়। তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৭৮ রানে থামে খুলনা। ৮ রানের জয়ে শীর্ষস্থান
আরও পাকাপোক্ত করলো রংপুর। ৭ ম্যাচে দলটির ৭ জয়। অন্যদিকে খুলনার পঞ্চম
ম্যাচে এটি তৃতীয় হার।
শেষ ওভারে খুলনার প্রয়োজন ছিল ১২ রান। হাতে ছিল ৪
উইকেট। ক্রিজে ছিলেন মোহাম্মদ নাওয়াজ ও নতুন ব্যাটার নাসুম আহমেদ। বোলিংয়ে
আসেন সাইফউদ্দিন। নাওয়াজ প্রথম দুই বল ডট দেন। তৃতীয় বল হয় ওয়াইড। ডটের
চাপে পড়ে পরের দুই বলে রানআউট হন নাওয়াজ (৪) ও নাসুম (০)। পরের বলে আবু
হায়দায় রনি উড়িয়ে মারতে গিয়ে শূন্য রানে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। শেষ বলে
মাত্র ১ রান নিতে পারে দলটি।
এর আগের ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন সেট
ব্যাটার অঙ্কন। ১২ বলে ১৫ করা এই ব্যাটার আউট হলে চাপে পড়ে যায় খুলনা।
তবুও ক্রিজে থাকা ইমরুল ভরসা দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ বলে মাত্র ৫ রানে তিনি
আউট হয়ে উলটো বিপদ বাড়ান। তার আগের ওভারের প্রথম বলে ফেরেন আফিফ হোসেন (১৫
বলে ২৯)। শেষ তিন ওভারে উইকেটের মিছিলে মূলত খুলনার হার নিশ্চিত হয়।
শুরুতে
১৭ রানে রাসুলি ফিরলেও খুলনা সহজে ছড়ি ঘোরাতে থাকে। ওপেনার মোহাম্মদ
নাঈমের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ খেলছিলেন দারুণ। দুজনে জুটিতে যোগ করেন ৬১
রান। মিরাজ ২৪ বলে ৩৯ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। নাঈম থামেন ফিফটি করে। তার
ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৫৮ রান। নাঈমের পর আফিফ আউট হলে খেই হারিয়ে ফেলে
খুলনা। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন
আকিফ জাভেদ। ২ উইকেট করে নেন সাইফুদ্দিন-মেহেদী হাসান।
এর আগে ৫ উইকেটে
১৮৬ রান করে রংপুর। ১০.৩ ওভারে রংপুরের রান ৩ উইকেটে ৭০। পরের চার ওভারে
কোনো উইকেট না হারলেও যোগ হয় মাত্র ৩৫ রান। ১৪ ওভারে দলের রান ১০৫। সেখান
থেকে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু। পরের ৬ ওভারে রীতিমত তান্ডব চালিয়ে খুশদীল শাহ
স্কোরবোর্ডে হাসি ফিরিয়েছেন।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ৩৫ বলে ৭৩ রান করেন ৪
চার ও ৬ ছক্কায়। ২০৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ইনিংস দিয়ে রংপুরের পুঁজিতে
রান ৫ উইকেটে ১৮৬। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া ইফতেখার আহমেদ ৩৬ বলে ৫ চারে ৪৩
রান করেন। এই দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটার ৫৭ বলে ১১৫ রানের জুটি গড়েন। তাতেই
পার্থক্য তৈরি হয়।
১৫তম ওভারে নাসুমকে চারটি ছক্কা হাঁকান খুশদীল। তার
ওই ওভারেই রংপুরের বড় স্কোরের পথে হাঁটা শুরু হয়। পরের ওভারে আবু হায়দারকে
একটি করে ছক্কা ও চার উড়ান।
হেলসের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে এসেছিলেন
যুক্তরাষ্ট্রের টেলর। কিন্তু ৮ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৩ রান করেন। আরেক
ওপেনার তৌফিক খান ৩০ বলে ৩৬ রান করেন ৪ চার ও ১ ছক্কায়। তিনে নামা সাইফ
হাসান মাত্র ৭ রান করে বোল্ড হন হাসান মাহমুদের বলে।
এরপর ইফতেখার ও
খুশদীলের দায়িত্বশীল ইনিংসে বড় পুঁজি পেয়েছে রংপুর। এবার বোলারদের পালা
জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার। বল হাতে খুলনার হয়ে আবু হায়দার রনি ও হাসান
মাহমুদ ২টি করে উইকেট নেন।