কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার তের ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টিকা কেন্দ্র
থেকে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় টিকা পাচ্ছে না নবজাতক ও শিশুরা। এতে করে
শিশুদের নানা রকম সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ
ব্যাপারে শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোরদাবি
জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,
সংক্রামক ব্যাধি থেকে সুরক্ষায় সরকারি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপজেলা ও
জেলা সদর হাসপাতাল, বিভাগীয় মেডিকেলে ইপিআই টিকা কেন্দ্র থেকে নবজাতক
শিশুদেরকে পিসিভি(নিউমোনিয়া), এমআর(হাম ও রুবেলা), আইপিভি(পোলিও),
বিসিজি(যক্ষ্মা), ওপিভি(মুখে খাওয়ার পোলিও টিকা), পেনটা ইনজেকশন(ডিপথেরিয়া
হুপিংকাশি, টিটেনাস, হেপাটাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা) দেওয়া হয়। বর্তমানে
চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পিসিভি, আইপিভি ও পেনটা ইনজেকশন টিকা পর্যাপ্ত
সরবরাহ না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নবজাতক পরিবারের সদস্যদের। অনেকেই
ইউনিয়ন সরকারি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা টিকা কেন্দ্রে টিকা না পেয়ে
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন। সেখানেও টিকা না পেয়ে মনে শঙ্কা
নিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
গতকাল সোমবার কথা হয় কনকাপৈত ইউনিয়নের বুদ্দিন
গ্রামের আসমা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, কনকাপৈত বাজারস্থ স্বাস্থ্য
কেন্দ্রে টিকা না পেয়ে তিন মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে এসেছি। কিন্তু এখানে দায়িত্বরত ইপিআই টেকনেশিয়ান বলেছেন, টিকা
নাই। টিকা আসলে কনকাপৈতে পাঠানো হবে’।
ভুক্তভোগী মুন্সিরহাট ইউপি
মেম্বার মাহফুজ মজুমদার কুমিল্লার কাগজকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দুই মাস বয়সী
বাচ্চাকে টিকা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে কোন টিকা
পাইনি। এভাবে চলতে থাকলে শিশুরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে। আপনার লেখালেখির মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসুন’।
গতকাল
সোমবার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল
টেকনোলজিষ্ট(ইপিআই) মোঃ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘নবজাতক শিশুদেরকে ২৪ মাস
পর্যন্ত ধাপে ধাপে টিকা দেয়া যায়। অনেকে মনে করেন, নির্দিষ্ট তারিখে টিকা
না দিলে ক্ষতি হয়। এটা ভ্রান্ত ধারনা। সল্পতার কারণে অনেক অভিভাবক স্থানীয়
কেন্দ্রগুলোতে টিকা না পেয়ে বাচ্চাদের নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
আসছেন। আমরা পর্যাপ্ত টিকা দিতে পারছি না। তবে ধাপে ধাপে সব শিশুই ২৪ মাসের
মধ্যে সব ধরনের টিকা পাচ্ছে। আর এ সময়ের মধ্যে টিকা দিলেই কোন সংক্রামক
ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি’।