নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক যুবতী ও এক
নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪
টা পর্যন্ত উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নূরপুর এলাকার খোকন স’মিলের একটি
কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগী দুইজন নাঙ্গলকোট থানায়
মৌখিক অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী দুইজনের মধ্যে একজনের বয়স ২০ বছর এবং
আরেকজনের বয়স ৩৫ বছর।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাঙ্গলকোট থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে ফজলুল হক। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে
দুই নারী থানায় এসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তাদেরকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে
রাখা হয়েছে। আমরা ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।
ভুক্তভোগীদের
বরাত দিয়ে ওসি বলেন, তারা দু’জন কুমিল্লা শহরের টমসনব্রিজ এলাকায় এক সাথে
থাকেন। তাদের একজনের বাড়ি চাঁদপুর এবং একজনের বাড়ি লক্ষ্মিপুর জেলায়। ২০
বছর বয়সী ওই তরুণীর সাথে নাঙ্গলকোটের শহীদ নামের এক যুবকের সাথে প্রেম
ছিলো। বৃহস্পতিবার তারা শহীদের সাথে দেখা করতে কুমিল্লায় আসেন। এরপর সেখান
থেকে তাদেরকে একটি স’মিলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে তারা অভিযোগ করছেন।
আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ক্ষতিয়ে দেখছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান
চালাচ্ছি।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র বলছে- যুবদল নেতা মহসিনের নেতৃত্বে
১০/১২ জনের একটি দল তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। তবে মহসিন যুবদলের কেউ নন বলে
জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, কি
ঘটেছে আমরা বিস্তারিত কিছুই জানি না। অনেকেই মহসিনের বিষয়ে জানতে চাইছেন।
সে আমাদের দলের কেউ না, আমাদের কর্মীও না। সে যদি অপরাধের সাথে জড়িত থাকে
তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। তার অপকর্মের দায়ভার আমরা নিবো না।
ভুক্তভোগী
দুই নারী জানান, বৃহস্পতিবার নাঙ্গলকোট যাওয়ার পর বেলা পৌনে ১১টার দিকে
আমাদেরকে প্রথমে একটি অটো রিকশায় করে নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরাঘুরি করে।
আমরা বুঝতে পারি তাদের উদ্দেশ্য ভালো না; তখন আমাদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়।
কেউ ছিলো না আশেপাশে তখন। পরে ১২টার দিকে আমাদেরকে একটি রুমে নিয়ে যায়।
সেখানে ১০/১২ জন আমাদেরকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে মারধর করে
জোরপূর্বক আমাদের নগ্ন ভিডিও মোবাইলফোনে ধারণ করে রাখে। এসময় চিৎকার
চেঁচামেচি করলে, আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে স’মিলের মালিকের
সহযোগিতায় আমাদেরকে একটি ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সাযোগে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে
শনিবার যখন আমরা সে জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলাম- তখনও সেখানে আমরা ৬ জনকে দেখতে
পেয়েছি। এ ঘটনায় মিল মালিকও জড়িত আছে।
অভিযুক্ত স’মিলের মালিক খোকন মিয়া
সাংবাদিকদের বলেন, জোরপূর্বকভাবে আমার স'মিলে দুইজন মেয়ে নিয়ে ঢুকে যুবদল
নেতা মহসিন। এসময় তার সাথে আরো ১০-১২ জন ছিলো। এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।
মহসিন বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে।
সোমবার (১৩
জানুয়ারি) রাতে এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিশাত
তাবাস্সুম বলেন, তারা মৌখিকভাবে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, এখন তারা চাইলে
মামলা হবে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে- বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনায় তারা
সোমবার থানায় আসলেন। তাদের পরিচয় নিয়েও আমরা সন্দিহান আছি। কারণ তারা দুইজন
দুই ধরণের কথা বলছে। সব কিছু অনুসন্ধান করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।