সুরা
নাস পবিত্র কোরআনের সর্বশেষ সুরা। এটি মদিনায় অবতীর্ণ। এর আয়াত সংখ্যা ৬,
শব্দ সংখ্যা ২০ এবং মোট অক্ষর ৮০টি। এ সুরাটি মানুষের সামগ্রিক সুরক্ষার
জন্য আল্লাহর বিশেষ দান। করুণাময় আল্লাহ এই সুরায় আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে
তাঁর কাছে নিরাপত্তা চাইতে হয়। কীভাবে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয়
প্রার্থনা করতে হয়।
অমূল্য রক্ষাকবচ সুরা নাস
সুরা নাস মানুষের জন্য
আল্লাহ প্রদত্ত এক অমূল্য রক্ষাকবচ। নিয়মিত এই সুরা পাঠের মাধ্যমে মানুষ
আল্লাহর হেফাজতে থাকতে পারেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি
সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিনবার পড়বে, সে বিপদাপদ
থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫০৮২)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমল
আয়েশা
(রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের
উভয় হাত একসঙ্গে মিলাতেন। তার পর উভয় হাতে ফুঁক দিতেন এবং সুরা ইখলাস, সুরা
ফালাক, সুরা নাস পড়তেন। তার পর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন।
তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি তিনবার এমন
করতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)। এ ছাড়া তিনি অসুস্থ হলে সুরা ফালাক ও নাস
পড়তেন। (মুসলিম, হাদিস: ২১৮১)
আরও পড়ুন: যে তিন কাজে দেরি করতে নিষেধ করেছেন নবিজি (সা.)
জাদু ও কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তির সুরা
রাসুলুল্লাহ
(সা.) বলেছেন, ‘যখন আমি জাদু আক্রান্ত হয়েছিলাম, তখন আমি সুরা ফালাক ও
সুরা নাস পড়তাম। এগুলো শয়তান এবং কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য সহায়ক।’
(মুসলিম, হাদিস: ২১৮১)
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ফরজ নামাজের পরে
সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়বে, আল্লাহ তার নিরাপত্তা নিশ্চিত
করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০১০)
উপরোক্ত হাদিসগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সারা দিনের নিরাপত্তায় তিন সময়ে ‘তিন কুল’ পড়ার কথা হাদিসে এসেছে। তিন কুল হলো-
সুরা ইখলাস।
সুরা ফালাক।
সুরা নাস।
আর তিন সময় হলো-
ফজর ও মাগরিবের পর তিনবার করে।
জোহর, আসর ও ইশার পর একবার করে।
রাতে শোয়ার আগে বিছানায় তিন কুল তিনবার করে পাঠ করে হাতে ফুঁক দিয়ে হাত সারা শরীরে মুছবে।
এ
ছাড়াও অসুস্থ অবস্থায় বা বিপদের সময়ও এর আমল করা যেতে পারে। (বুখারি,
হাদিস: ৫০১৭; আবু দাউদ, হাদিস: ১৫২৩, তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৭৫)। ভয়, উদ্বেগ বা
অস্থিরতা অনুভব করলে সুরা নাস পড়া উচিত। কেননা এটি মানুষের মনে শক্তি ও
সাহস জোগায় এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা বাড়ায়।
লেখক: খতিব, বাগবাড়ি জামে মসজিদ, গাবতলী