কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি শীতকে উপেক্ষা করে ধানের চারা রোপন করছে কৃষক। পানি সেচ দেওয়া,জমি চাষাবাদ, আগাছা পরিস্কার, মই দিয়ে জমি সমান করা, সার ছিটানো, বীজতলা থেকে চারা তোলা, চারা রোপন করাসহ কৃষাণ কৃষাণীরা ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছে।
এ উপজেলার অনেক জমি নিচু হওয়ার কারণে ইরি বোরো ব্যতিত অন্যান্য ফসল তেমন হয়না। এ সকল জমিতে একমাত্র ফসল হয় ইরি বোরো। ফলে এসব জমিতে অন্যান্য ধানের তুলনায় ইরি বোরো দুই থেকে তিন গুণ বেশি ধান উৎপাদন হয়। এছাড়া এবছর বন্যা হওয়াতে জমির মধ্যে পলি পড়েছে, ফলে অধিক ধান উৎপাদনে আশাবাদী কৃষকরা। উপজেলায় ইরি বোরো ধানের মধ্যে হাইব্রিড ও উফসী জাতের ধান বেশি আবাদ হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামের কৃষকেরা ধান রোপনে ব্যস্ত। নিচু জমিতে আগাম ইরি বোরো রোপন করছে কৃষকেরা। কারণ অনেক সময় আগাম বৃষ্টি ও বন্যার ফলে নিচু জমির ফসল ডুবে পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।
চান্দলা এলাকার কৃষক মানিক মিয়া বলেন, প্রতি বছর ইরি বোরো ধানের চাষ করি। এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে ইরি ধান রোপন করছি। সার ও বীজের দাম বেড়ে যাওয়ায় অধিক খরচ হচ্ছে। ফসল ভাল হলে আমার পরিবারের বছরের চালের জোগান হয়ে যাবে।
ধান্যদৌল এলাকার কৃষক আশিক বলেন, আমাদের এলাকায় জমি গুলো নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে বন্যা হয়ে যায়, এছাড়া ভারত থেকে উজানের পানি চলে আসে। তাই এ বছর একটু আগে ইরি ধান রোপন করেছি। এ বছর বন্যায় জমিতে পলি পরেছে, আশা করি ফসল ভাল হবে।
সিদলাই ইউনিয়নের পোমকাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নান বলেন, এ বছর গোমতী বাঁধ ভেঙে আমাদের জমি তলিয়ে গিয়ে আউশধান ঘরে তুলতে পারিনি। এর পর জমি খালি ছিল। এখন বোরোধান চাষের জন্যে জমি প্রস্তুত করেছি। বর্তমানে আমি এ বছর ১৪৫ শতাংশ জমিতে বোরোধান চাষ করবো।এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ জমিতে বোরোধান চাষ করেছি। বাকি জমি প্রস্তুত করছি আশাবাদী দুই চার দিনের মধ্যে চাষাবাদ শেষ করতে পারবো।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাসুদ রানা বলেন, উপজেলায় হাইব্রিড, উফসী এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ হচ্ছে। এ উপজেলাতে এই বছর লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৫শত ৭১ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।