কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের আর্থিক
অনুদান প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১১
টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে ২৯ জন আহত শিক্ষার্থীকে
জনপ্রতি ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে জুলাই
গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ এবং আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন,
আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী, সমন্বয়ক ও শিক্ষকরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, ‘কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়াতে পেরে গর্ববোধ করছি। আমরা
পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আহতদের সাহায্য করা হবে, কিন্তু এখন
পর্যন্ত সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তোমাদের দাবি দাওয়া গুলো শুনেছি,
সেগুলো যৌক্তিক। তবে আমাদের সীমাবদ্ধতা গুলোকেও ভাবতে হবে। একজনের
সিদ্ধান্তে সবকিছু হতে পারে না। আমাদের সব কাজ হবে সম্মিলিতভাবে আলোচনার
ভিত্তিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে অনেকেই স্বৈরাচারের দলের হয়ে কাজ
করেছেন। এখন একাধিক সমন্বয়ক দল তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের এগিয়ে
যাওয়া কঠিন। আমাদের কাছে অনেকেই আসে কথা বলতে। তাদের অতীত ইতিহাস শুনলে
বিশ্বাস হয় না। আবার সুযোগ পেলে যে আগের চরিত্রে ফিরে যাবে না, তার কী
গ্যারান্টি। নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে সব জায়গায় আমরা ঝামেলায় পড়ে যাচ্ছি।’
বিশেষ
অতিথি মাননীয় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘জুলাই
বিপ্লবে ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন হয়েছে তা পৃথিবীতে বিরল। ছাত্ররা আবারও
প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে, ভীরুতা সমাধান নয় বরং সাহসিকতার সাথে নির্যাতনের
বিরুদ্ধে মোকাবিলা করাটাই কাম্য। তাই তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
করছি। আমাদের প্রশাসনের কাজ সম্পর্কে কিছু কথা এসেছে, আমার খুবই ভালো
লেগেছে। আসলে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং আমরা ভুলের উর্ধ্বে নই।
বিশেষ
অতিথি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘দেশকে ফ্যাসিবাদ
মুক্ত করতে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। যতদিন
এই বাংলাদেশ থাকবে ততদিন তাদের আত্মত্যাগ অম্লান থাকবে। আমরা প্রশাসনে আসার
পর থেকে আহত ছাত্রদের খোঁজ খবর রেখেছি এবং চেষ্টা করেছি কিভাবে তাদেরকে
সহযোগিতা করা যায়। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা এই উদ্যোগটি সফল করতে সক্ষম
হয়েছি। আজকে এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা যে দাবিগুলো উপস্থাপন করেছে, আমি তাদের
সাথে একমত।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব ছিল
চেকগুলো তোমাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া। অবিশ্বাস্য ও অভূতপূর্ব ফ্যাসিবাদের
পতন হয়েছে এই জেনজির হাত ধরে। তারাই বুঝিয়ে দিয়েছে সংগ্রামের পথেই মুক্তি।
তোমরাই জাতির সূর্য সন্তান। তোমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন।
তোমাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এটা বলব না, শুধু তোমাদের খোঁজ খবর নিয়েছি।’
এছাড়াও
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন মোঃ ওমর ফারুক, মোঃ সাইফুল
ইসলাম, ফরহাদ মিয়া কাউছার এবং সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন
মোজাম্মেল হোসেন আবীর ও জিয়া উদ্দিন মুহাম্মদ রুবেল।