সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলাদা দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১ এ মামলা দুটি করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুইজনের বিরুদ্ধে মোট ১৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ৯৪১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে কুমিল্লা ৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য-এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তাজুল ইসলাম।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে তিনি ‘অবৈধ উপায়ে’ ৭ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। তার এই আয় ‘জ্ঞাত উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ’।
এছাড়া তাজুল ইসলাম নিজের নামে থাকা ৩৫টি ব্যাংক হিসাবে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ১৩৯ কোটি ৭৪ লাখ ৯৮ হাজার ১১৭ টাকা লেনদেন করার তথ্য পাওয়া গেছে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।
সম্পদের অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করাসহ তা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করার অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্বামীর ‘অবৈধ সম্পদে সম্পদশালী’ হওয়ার অভিযোগে তাজুল ইসলামের স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এ মামলায় তাজুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় ৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে, যার উৎস ফৌজিয়া ইসলামের জানা আয়ের উৎসের সঙ্গে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’।
এছাড়া তার নিজের নামে থাকা ১১টি ব্যাংক হিসাবে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ২৭ কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৮ টাকা লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। সে মাসেই তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তার ধারাবাহিকতায় স্ত্রীসহ তার বিরুদ্ধে মামলা করল সংস্থাটি। তার আগে ২ সেপ্টেম্বর সাবেক এই মন্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে।
এছাড়া ২৭ অগাস্ট কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা বিএনপির এক নেতার ওপর হামলা ও গুলি বর্ষণের অভিযোগে সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামসহ ১০৫ জনের নামে মামলা হয়েছে।