নিজস্ব
প্রতিবেদক।। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ প্রশাসনের মিথ্যাচার ও
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞাকে অবরুদ্ধ ও লাঞ্ছিত করার
অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি)
দুপুর আড়াইটায় কলেজের ডিগ্রি ক্যাম্পাসে কলেজ প্রশাসনের মিথ্যাচার প্রচারের
বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা। এক সংবাদ সম্মলনে
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের
শিক্ষার্থী মো.নাহিদুল ইসলাম বক্তব্য তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি
বলেন, গত ৭ বছর ধরে কলেজ ক্যাম্পাস মসজিদে সাপ্তাহিক হাদিসের তালিম চলে
আসছে। হঠাৎ করে সোমবার (২০ জানুয়ারি) তাবলিগ জামাতের সাপ্তাহিক তালিম
বন্ধের ঘোষণা দেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা। পরদিন
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের অফিসে গিয়ে বিষয়
জানতে চাইলে তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে যান। পরে এ বিষয়টি
বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন কলেজের
শিক্ষার্থীরা। যা মোটেও সত্য নয়।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল
মিডিয়ায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ মহাদয়কে অবরুদ্ধ শিরোনামে যে
সংবাদ বা ভিডিও প্রচার করা হয়। যা সম্পূণ মিথ্যাচার।
বিশেষ করে কলেজের
সাধারণ ছাত্রদেরকে দুষ্কৃতিকারী বলে একটি মানববন্ধন করা হয়েছে। আমাদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডার তীব্র নিন্দা
জানাই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন গণিত বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের তারেক
হোসেন, ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র সোলাইমান, ইসলামি ইতিহাসের ছাত্র
আশিকুর রহমান, পরিসংখ্যান বিভাগের তৌহিদ বিন সাদিক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের
মাস্টার্স শেষ পর্বের ছাত্র মো. নাঈম খান, মো. উজ্জ্বল মিয়া প্রমুখ।
এর
আগে কলেজের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বুধবার (২২ জানুয়ারি) কলেজের
ডিগ্রি ক্যাম্পাসে দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও
মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন।
এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শিক্ষক
পরিষদ সম্পাদক ও গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গাজী মুহাম্মদ গোলাম সোহরাব
হাসান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে অধ্যক্ষের রুমে যা হয়েছে তা
শৃঙ্খলাবিরোধী। তারা বহিরাগত ছিল। অধ্যক্ষ মহোদয়কে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা
করেছে। আমরা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ ঘটনার
তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি, কলেজের মর্যাদা, ধর্মীয় অনুভূতি সব কিছু
যেন ঠিক থাকে।
মানববন্ধনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর
মো. আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিক্ষক-কর্মচারী যারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন, আপনাদের
অনুভূতিকে আমি ধারণ করি। দুপুর থেকে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের কেন্দ্রীয়
পরীক্ষা আছে। পরীক্ষা চলবে। প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য,
গত ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ
মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে
গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) তাবলিগ জামাতের সাপ্তাহিক তালিম বন্ধের ঘোষণা দেন
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিনের
মতবিরোধে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০
মিনিট পর্যন্ত অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে অধ্যক্ষকে বের হতে দেন নি কলেজের
নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ও ধর্মপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যক্ষের সঙ্গে তুমুল তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছেন মসজিদের মুসল্লি ও ছাত্ররা।