প্রথম
সেটেই লড়াই হলো হাড্ডাহাড্ডি। এক ঘণ্টা ২০ মিনিটর বেশি সেই লড়াইয়ে অল্পের
জন্য পারলেন না নোভাক জোকাভিচ। অপেক্ষা তখন আরও রোমাঞ্চের। কিন্তু বিদ্রোহ
করে বসল কিংবদন্তির শরীর। পায়ের চোটে সেখানেই লড়াইয়ের ক্ষান্তি দিলেন তিনি।
টুর্নামেন্টের রেকর্ড ১০ বারের বিজয়ীকে এবার কোর্ট ছাড়তে হলো দর্শকদের
দুয়ো শুনে।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ছেলেদের প্রথম সেমি-ফাইনালের ফয়সালা হয়ে
গেল এক সেটেই। জেকোভিচ সরে দাঁড়ানোয় প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে
পা রাখলেন আলেক্সান্দার স্ফেরেফ।
সেমি-ফাইনাল থেকে সরে দাঁড়ানোয়
জোকোভিচের ২৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের অভিযান দীর্ঘায়িত হলো আরও। ২০২৩
সালে অস্ট্রেলিয়ান, ফরাসি ও ইউএস ওপেন জিতেছিলেন তিনি। গত বছর অলিম্পিকসের
সোনা জিতে চক্র পূরণ করলেও কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি।
জোকোভিচের ফিটনেস নিয়ে কিছুটা শঙ্কা ছিল ম্যাচের আগে থেকেই। শুক্রবার তিনি রড লেভার অ্যারেনায় পা রাখেন বাঁ উরু স্ট্র্যাপিং করে।
ম্যাচের
শুরুতে অবশ্য চোটের ছাপ ছিল না তার খেলায়। তবে সেটের শেষ দিকে দৃশ্যমান
হয়ে ওঠে তার অস্বস্তি। পয়েন্টের মাঝের সময়টায় মন্থরভাবে পা টেনে নিচ্ছিলেন
তিনি। বশেষ করে, টাইব্রেকের সময় বেশ ভুগছিলেন ৩৭ বছর বয়সী তারকা। হতাশায়
মাথা নেড়ে বিড়বিড় করতেও দেখা যায় তাকে।
প্রথম সেটে ৭-৬ (৫) ব্যবধানে
জিতে নেন স্ফেরেফ। এর পরপরই জোকোভিচ জানিয়ে দেন যে, খেলা চালিয়ে যেতে
পারবেন না তিনি। চেয়ার আম্পায়ারের সঙ্গে করমর্দন করেন তিনি, দর্শকদের দিকে
'থামস আপ' দেখিয়ে, দুহাত তুলে তালি দিয়ে কোর্ট ছাড়েন তিনি। গ্যালারি থেকে
তখন ভেসে আসতে থাকে দুয়োর সুর।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে প্রথমবার ফাইনালে
ওঠার আনন্দ পাশে সরিয়ে স্ফেরেফ সহানুভূতি জানালেন প্রতিপক্ষকে। দর্শকদের
তিনি মনে করিয়ে দিলেন জোকোভিচের শ্রেষ্ঠত্ব।
“প্রথম যে কথাটি আমি বলতে
চাই, কোনো খেলোয়াড় চোট নিয়ে বাইরে চলে গেলে দয়া করে দুয়ো দেবেন না। জানি,
সবাই চড়া মূল্যে টিকেট কিনেছেন এবং পাঁচ সেটের লড়াই দেখার আশা করছেন।
কিন্তু নোভাক জোকোভিচ এমন একজন, গত ২০ বছরে যে তার জীবনের সবকিছু দিয়েছে এই
খেলায়।”
“অ্যাবডমিনাল টিয়ার নিয়েও তিনি (জেকোভিচ) এই টুর্নামেন্ট
জিতেছেন। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে এখানে ট্রফি জিতেছেন। কিছুটা সম্মান তো
তাকে দেখাতে পারেন!”
গত বছর ফরাসি ওপেনের ফাইনালে কার্লোস আলকারাসের
কাছে হেরেছিলেন স্ফেরেফ। ২০২০ সালে হেরেছিলেন ইউএস ওপেনের ফাইনালেও। ২৭ বছর
বয়সী জার্মানের সামনে এখন আরেকবার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের হাতছানি।
ফাইনালে তিনি লড়বেন ইয়ানিক সিনার ও বেন শেল্টনের মধ্যে লড়াইয়ের বিজয়ীর সঙ্গে।