কুমিল্লার
মুরাদনগরে সম্পদের লোভে চাচা মজিবুর রহমানের হাতে আপন ভাতিজি হোসনা
আক্তার (৩৩) ও নাতনি আফসানা আক্তার লিজা (২৬) টেঁটাবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ
পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আটক মজিবুর রহমানের স্ত্রী রহিমা বেগম ও তার মেয়ে
‘ডালিয়া আক্তারকে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে
উপজেলার সদর ইউনিয়নের হিরারকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতেই
টেটাবিদ্ধ হোসনা আক্তারের বোন আছমা বেগম বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি
মামলা করেছেন। টেটাবিদ্ধ হোসনা আক্তার অভিযুক্ত মজিবুর রহমানের ভাই লিল
মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয় ও পারিবার সূত্রে জানা যায়,গত চার বছর আগে লিল
মিয়ার মৃত্যু হয়। এর আগে লিল মিয়া তার স্ত্রী জামেনা বেগমের নামে বাড়ির
জায়গা দলিল লিখে দেন। লিল মিয়ার মৃত্যুর পর ভাই মজিবুর রহমান বাড়িটি দখল
করার জন্য বিভিন্ন সময় জামেনা বেগমের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছেন।
ঘটনার দিন জামেনা বেগম নিজের বাড়ির জায়গায় লাকড়ি শুকাতে দিলে এটি তার জায়গা
নয় বলে মজিবুর রহমান, তার স্ত্রী রহিমা বেগম, ছেলে আনিছুর রহমান ও মেয়ে
ডালিয়া আক্তার গালমন্দ করতে থাকে এবং জামেনা বেগমকে বাধাঁ দেন। তখন
প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে জামেনা বেগমের উপর ঝাপিয়ে পড়েন মজিবুর রহমান,
তার স্ত্রী ও সন্তানরা।
তারা আরো জানায়, জামেনা বেগমের আর্তচিৎকার শুনে
পার্শ্ববর্তী বাড়ি থেকে মেয়ে হোসনা আক্তার ও নাতনি আফসানা আক্তার লিজা তাকে
উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকেও মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মজিবুর রহমান ঘর
থেকে মাছ শিকারের টেঁটা এনে আফসানা আক্তার লিজাকে আক্রমণ করেন। এ সময়
লিজাকে বাঁচাতে গিয়ে হোসনা আক্তারের হাত টেঁটাবিদ্ধ হয়। টেঁটায় হোসনা
আক্তারের হাতের একপাশ দিয়ে ঢুকে অপর পাশ দিয়ে বের আফসানা আক্তার লিজার হাতও
টেঁটাবিদ্ধ হয়। এলাকাবাসী টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় হোসনা আক্তার ও আফসানা
আক্তার লিজাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।
টেটাবিদ্ধ হোসনা আক্তারের অবস্থা গুরতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত
চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
টেটাবিদ্ধ
আফসানা আক্তার লিজা বলেন, ‘আমার নানার মৃত্যুর পর বাড়িটি দখল করার জন্য এর
আগেও মজিবুর রহমান কয়েকবার আমার নানিকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে।
প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার মা-খালারাও মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের
হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আজ মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়েরা
আমার নানি ও আমাদের মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমরা মজিবুর রহমান, তার স্ত্রী,
ছেলে ও মেয়েদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।’
মুরাদনগর থানার ওসি
জাহিদুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় রাতেই দু’জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে
কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।