মিথ্যা বলা পাপ। মিথ্যাকে সব পাপের মূল বলা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে মিথ্যাবাদীর ধ্বংস কামনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে
বিষয়ে তোমার পরিপূর্ণ জ্ঞান নেই সে বিষয়ের পেছনে পড়ে থেকো না। নিশ্চয়ই কান,
চোখ ও হৃদয়-এসবের ব্যাপারে (কিয়ামতের দিন) জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সূরা বনি
ইসরাঈল, আয়াত : ৩৬) মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘(অনুমানভিত্তিক) মিথ্যাচারীরা
ধ্বংস হোক।’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত : ১০)
মিথ্যা কখনো কখনো মিথ্যাবাদীকে
জাহান্নাম পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয় এবং মিথ্যা বলতে বলতে পরিশেষে সে আল্লাহ
তায়ালার কাছে মিথ্যুক হিসেবে পরিগণিত হয়। ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সত্যকে আঁকড়ে ধরো। কারণ সত্য পুণ্যের পথ
দেখায় আর পুণ্য জান্নাতের পথ দেখায়। কোনো ব্যক্তি সর্বদা সত্য কথা বললে এবং
সর্বদা সত্যের অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে সত্যবাদী
হিসেবে লিখিত হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকো। কারণ
মিথ্যা পাপাচারের রাস্তা দেখায় আর পাপাচার জাহান্নামের রাস্তা। কোনো
ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা কথা বললে এবং সর্বদা মিথ্যার অনুসন্ধানী হলে সে শেষ
পর্যন্ত আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদীরূপে পরিগণিত হয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬০৭)
অনেক
রসিক ব্যক্তি শুধু মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে থাকে। এতে তার
ইহলৌকিক কোনো ফায়দা নেই। অথচ সে অন্যকে ফুর্তি দেওয়ার জন্য এমন জঘন্য কাজ
করে থাকে। হিজাম (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘অকল্যাণ
হোক ওই ব্যক্তির, যে মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে। অকল্যাণ হোক ওই
ব্যক্তির, অকল্যাণ হোক ওই ব্যক্তির।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৫)
তবে
ইসলামের দৃষ্টিতে তিন স্থানে মিথ্যা বলার সুযোগ আছে। উম্মে কুলসুম বিনতে
উকবা (রা.) আরো বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শুধু তিনটি ব্যাপারে মিথ্যা বলার
সুযোগ দিয়েছেন। তিনি বলতেন, ‘আমি মিথ্যা মনে করি না যে কোনো ব্যক্তি
মানুষের পরস্পর বিরোধ মীমাংসার জন্য কোনো কথা বানিয়ে বলবে। তার উদ্দেশ্য
শুধু বিরোধ মীমাংসা। অনুরূপভাবে কোনো ব্যক্তি শত্রুপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধে
জেতার জন্য কোনো কথা বানিয়ে বলবে। তেমনি কোনো পুরুষ নিজ স্ত্রীর সঙ্গে এবং
কোনো নারী নিজ স্বামীর সঙ্গে কোনো কথা বানিয়ে বলবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস :
৪৯২১)।