নিজস্ব
প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,
অন্তবর্তীকালীন সরকার ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কাজ
করছে বলে তাদের ‘আশ্বস্ত’ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
“আমরা
আশা করছি এবং জনগণের যেটা প্রত্যাশা আছে যে, অতি দ্রুত নির্বাচন এবং একটা
রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন তিনি (প্রধান উপদেষ্টা), যার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের
মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।”
মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির একটি
প্রতিনিধি দল সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় গিয়ে
তার সঙ্গে বৈঠক করে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও
হাফিজ উদ্দিন আহমেদও ছিলেন এই প্রতিনিধি দলে।
প্রায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠক
শেষে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এই সরকারকে বার বার বলে
আসছি যে, তারা একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার। দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা
তাদেরকে তাগাদা দিয়েছি। ন্যূনতম যে সংস্কারগুলো সম্পন্ন করেৃ, রিফর্ম কমিশন
করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কনসেনসাস হওয়ার প্রেক্ষিতে দ্রুত
নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।
“প্রধান উপদেষ্টা
এবং তার সঙ্গে বৈঠকে যারা ছিলেন, তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, অতি দ্রুত
নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। এবং তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেনও যে, তারা
নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা
করার জন্য কাজ করছেন।”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ
হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে
অন্তর্র্বতী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। ইতোমধ্যে এ সরকার ছয় মাস
পূর্ণ করলেও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়নি, যা নিয়ে
রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ রয়েছে।
বিএনপি যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন চেয়ে এলেও
অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা আগে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সারার ওপর জোর
দিচ্ছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস গত বিজয় দিবসে বলেছিলেন, সংস্কার কতটা
করে ভোটে যাওয়া হবে তার ওপর নির্ভর করে ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের
প্রথমার্ধের মধ্যে হতে পারে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন।
তবে তার প্রেস সচিব
শফিকুল আলম গত ৫ ফেব্রুয়ারি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক
দল এবং নাগরিক সমাজের আলোচনায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে ‘জুলাই সনদ’ হবে, তার
বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়।
এ বিষয়ে
বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যেটা বিশ্বাস করি,
গণতান্ত্রিক সরকারের যে ট্রান্সজিশন হবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়, সেটা অনেক
সহজ হয়ে যাবে যদি একটা নির্বাচন হয়।”
সেই রোডম্যাপ করে নাগাদ ঘোষণা হতে
পারে প্রশ্ন করলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা উনারা ঠিক করবেন। তবে সম্ভবত
১৫ তারিখের মধ্যে উনারা কিছু একটা বলতে যাবেন।”
অর্থ উপদেষ্টা সালেহ
উদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান
খান বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন।
অন্তর্র্বতী সরকারের ছয় মাসের
বিরাজমান পরিস্থিতি, এ অবস্থায় করণীয় ও সুপারিশ সম্বলিত একটি চিঠি বিএনপির
পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হয়।