গাজীপুরে
সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা
ঠেকাতে গিয়ে আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মো. কাশেম (১৭) মারা
গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বুধবার বিকালে তিনি মারা
যান।
হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন,
“আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকাল ৩টার দিকে মারা যান কাশেম।”
ঢাকা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো.
আব্দুল আহাদ বলেন, “তার মাথায় কোপানো হয়েছিল। গত শুক্রবার রাতে আমরা আর
অস্ত্রোপচার করি। এরপর তাকে পোস্ট অপারেটিভ থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
“কিন্তু সেখানে তার সেপ্টিসেমিয়া ডেভেলপ করে। জ্বর কমে না, প্রেসার কমে যাচ্ছিল। আজ সাড়ে তিনটার দিকে সে মারা যায়।”
কাশেমের বাড়ি গাজীপুর বোর্ডবাজার এলাকায়, তার বাবা মৃত জামাল হাজী।
গত
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাজীপুর নগরের ধীরাশ্রম দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম
মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঠেকাতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র
আন্দোলনের কয়েকজন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্যদের অভিযোগ, তারা সেখানে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় লোকজন মাইকিং করে তারে ওপর হামলা চালায়।
গাজীপুর
মহানগর পুলিশের এডিসি (উত্তর) রবিউল ইসলাম ওই হামলায় ১৩ জনের আহত হওয়ার
খবর দিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে থেকে সাতজনকে ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই সাতজনের মধ্যে কাশেম ছাড়াও ছিলেন গাজীপুরের
সাইন বোর্ডের কামারজুরি এলাকার ফজলুর ছেলে শুভ শাহরিয়া (১৬), গাছা থানার
শরীফপুর এলাকার মেহের আলীর ছেলে ইয়াকুব (২৪), টঙ্গী পূর্ব থানার মধুমিতা
রোড এলাকার গণেশ ঘোষের ছেলে সৌরভ (২২), এবং গাজীপুর সদর থানার জোড়পুকুর
এলাকার ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে হাসান (২২)। বাকি দুইজনের নাম-পরিচয় জানা
যায়নি।
এদিকে কাশেমের মৃত্যুর খবরটি ফেইসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি লিখেছেন, “গাজীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত কাশেম শহীদ হয়ে গেছেন। প্রতিবিপ্লবের প্রথম শহীদ আমার এই ভাই।”
অন্তর্র্বতীকালীন
সরকারের কাছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে হাসনাত ওই পোস্টে
লিখেছেন, “ইন্টেরিম, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো, করতে হবে।”
গাজীপুরে সাবেক
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং
পাল্টা হামলায় কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনার পর শনিবার থেকে সারাদেশে ‘অপারেশন
ডেভিল হান্ট’ নামের অভিযান শুরু করেছে অন্তর্র্বতী সরকার।