ঘরের
মাঠে ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির
প্রস্তুতি সেরেছে ভারত। তাতে কী! দেশটির ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই যে আগে
থেকেই ক্রিকেটারদের কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলায় আনার পরিকল্পনা করে রেখেছে।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে মর্যাদার বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি হেরে টেস্ট
চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হাতছাড়া হয়ে গেছে রোহিত শর্মাদের। সে কারণেই এমন
কঠোরতা, তাদের সেই শাস্তি কার্যকর হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে!
এক
প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে চারদিন
আগে (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে উড়াল দেওয়ার কথা রয়েছে রোহিত-কোহলিদের। তবে এই
বৈশ্বিক আসর খেলতে স্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন না ক্রিকেটাররা।
বিসিসিআইয়ের নতুন নিয়মে সেটি জোর দিয়ে বলা হয়েছিল।
বিসিসিআইয়ের নীতি
অনুযায়ী ‘যেসব খেলোয়াড় ৪৫ দিনের বেশি সময় ধরে বিদেশে থাকেন, তাদের সঙ্গী
এবং ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তানরা একবার করে প্রতিটি সিরিজে (ফরম্যাট অনুযায়ী)
সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ থাকতে পারবেন। এই নীতির কোনো পরিবর্তন করতে হলে কোচ
অথবা নির্বাচক কমিটির প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য
প্রতিটি দলের সফরকাল মাত্র তিন সপ্তাহের (১৯ ফেব্রুয়ারি-৯ মার্চ) কিছু
বেশি। ফলে পরিবারকে ছাড়াই ক্রিকেটারদের এই মিশন শেষ করতে হবে।
ক্রিকবাজ
বলছে, তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে বিসিসিআইয়ের নতুন নিয়ম
কার্যকর হতে যাচ্ছে। যা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হবে টিম ম্যানেজারকে।
দলের মধ্যে ‘শৃঙ্খলা, একতা ও ইতিবাচক পরিবেশ’ নিশ্চিত করতে দেশটির
চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের জন্য এসব নিয়ম করা হয়েছে। হায়দরাবাদ ক্রিকেট
অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আর দেভরাজ ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলের
ম্যানেজার হিসেবে যাবেন। বোর্ডের এক সূত্র ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন,
‘ক্রিকেটারদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই, বিসিসিআই এসওপি
(স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) কার্যকরে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে।’
এদিকে,
বার্তাসংস্থা পিটিআই–এর বরাতে আরেক গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে
বিসিআইয়ের এক সিনিয়র সূত্র জানিয়েছেন, ‘যদি কিছু পরিবর্তন হয়, তাহলে তা
আলাদা বিষয়, কিন্তু এখন পর্যন্ত খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাদের স্ত্রী কিংবা
পরিবার এই সফরে থাকবে না। একজন সিনিয়র খেলোয়াড় এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন
এবং তাকে জানানো হয়েছে যে নীতির সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হবে। যেহেতু সফর এক
মাসেরও কম সময়ের, তাই পরিবারের সদস্যরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে যাবেন না। তবে যদি
কোনো ব্যতিক্রম হয়, তাহলে ওই ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে হবে, কারণ
বিসিসিআই কোনো খরচ বহন করবে না।’
এর আগে বিসিসিআইয়ের ওই নির্দেশনার
প্রথমেই বলা হয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে।
যার অনেকটাই এবার অনুসরণ করতে দেখা গেছে রোহিত-কোহলিদের। দীর্ঘ সময় ভারতের
সিনিয়র ক্রিকেটাররা রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলেছেন। এ ছাড়া ৩০ দিনের বেশি কোনো
সফরে গেলে ক্রিকেটারদের ব্যাগের সংখ্যা ও ওজনও নির্ধারিত করে দেয় ভারতীয়
বোর্ড। এ ছাড়া দলীয় অনুশীলনে বাধ্যতামূলক উপস্থিত, সফরে নিজস্ব রাঁধুনি না
নেওয়া, জাতীয় দলের সিরিজ বা টুর্নামেন্ট চলাকালে কোনো ফটোশ্যুটসহ নানা
কঠোরতা আরোপ করা হয় ক্রিকেটারদের ওপর। এসব নীতি না মানলে দেওয়া হয়
নিষেধাজ্ঞা ও চুক্তি থেকে নাম কর্তনের হুঁশিয়ারি।