শবে বরাতে
গুরুত্ব দিয়ে যেসব ইবাদত করা যেতে পারে তার অন্যতম হলো নফল নামাজ, কোরআন
তিলাওয়াত এবং রোজা রাখা। ১৪ শাবান দিবাগত রাতে ইবাদতের পরের দিন রোজা রাখা
যেতে পারে।
এ দিনের রোজা সম্পর্কে হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পনেরো
শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা
ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ। (ইবনে মাজা, হাদিস : ১৩৮৪)
তবে
এর সঙ্গে আইয়ামে বিজের রোজা মিলিয়ে রাখা উত্তম। হজরত আবু যার রা. থেকে
বর্ণিত, রাসুল সা বলেন, হে আবু যার! যখন তুমি মাসের মধ্যে তিন দিন রোজা
রাখবে; তবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখবে। (তিরমিজি, নাসাঈ, মিশকাত)
এই
রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া, বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া,
ইস্তিগফার, নফল নামাজ আদায় করা উচিত। দরিদ্রদের সাহায্য করা, জাকাত ও
দান-সদকা দিয়ে গরিব-অসহায়দের সাহায্য করা উচিত।
১৪ শাবানের দিবাগত রাতে রাত জাগরণ, দোয়া, ইবাদত ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা সুন্নত আমল।
শবে
বরাতে নফল নামাজ পড়া উত্তম। তবে এই রাতে নফল নামাজ পড়ার আলাদা কোনো নিয়ম
বা নিয়ত নেই। অন্যান্য নফল নামাজ যেভাবে পড়া হয়, এ দিন রাতেও যেভাবে
স্বাভাবিক নিয়মে নফল নামাজ পড়তে হবে। আলাদা করে কোনো নিয়ত করতে হবে না।
কেউ
এ রাতে নফল নামাজ পড়ার আলাদা কোনো নিয়ম বা নিয়ত সাব্যস্ত করলে তা বিদয়াত
বলে গণ্য হবে। কারণ, শবে বরাতে নামাজ পড়ার কোনো নিয়ম বর্ণনা করেননি রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াাসল্লাম বর্ণনা করেননি, সাহাবিরা পালন করেননি- এমন কোনো বিষয়ে ইবাদত বা
নির্দিষ্ট করে আমল তৈরি করলে তা বিদয়াতের অন্তর্ভুক্ত। বিদয়াত
আবিষ্কারকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আল্লাহর রাসূল।
বর্ণিত
হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব। আর সর্বোত্তম আদর্শ
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াাসল্লামের আদর্শ। সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয়
হলো, (দীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবিত বিষয়। (দীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবিত সবকিছুই
বিদআত। প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা, আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।’
(মুসলিম, হাদিস, ১৫৩৫; নাসায়ি, হাদিস, ১৫৬০)