জাতীয়
প্রধান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার একাধিক স্থানে
উল্টোপথে বেপরোয়া গতিতে চলছে বিভিন্ন শ্রেণির যানবাহন। এতে করে মহাসড়কে
চলাচলরত দুরপাল্লার দ্রুতগতির যানবাহনের চালকদের চরম ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে
পারাপার হতে হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জাতীয় প্রধান
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার
বাস,ট্রাক,কাভার্ডভ্যান, কন্টেইনার, ট্যাঙ্কলরি, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার,
মিনিট্রাক ঢাকাসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা,
চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান,
কাপ্তাই, কক্সবাজার, টেকনাফ পথে চলাচল করে। দেশের আমদানী-রপ্তানীর সিংহভাগ
চট্টগ্রাম বন্দর হওয়ায় এমনিতেই সড়কটির গুরুত্ব অপরিসিম। তাছাড়াও
পর্যটনখ্যাত কক্সবাজার,পার্বত্য চট্টগ্রাম,সেন্টমার্টিন,কুমিল্লায়প্রতিদিন
হাজার হাজার দর্শনার্থী আসা-যাওয়া করে এই সড়ক পথে। আর এই মহাসড়কের কুমিল্লা
অংশের বুড়িচংয়ের নিমসার,কোরপাই,কাবিলা,নাজিরাবাজার, কুমিল্লা সদর উপজেলার
নিশ্চিন্তপুর, আমতলী,আলেখারচর,জাগুরঝুলি, সদর দক্ষিণ উপজেলার নন্দনপুর,
বেলতলী, উত্তর রামপুর, সদর দক্ষিণ থানার সামনে, হৈট্টাল চৌমুহনী, সুয়াগাজী,
চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার,নোয়া বাজার, মীরশনী,বাবুর্চিবাজার, আমানগন্ডা,
হাঁড়িসর্দার,ট্যাকনিক্যাল মোড়,নবগ্রামসহ একাধিক স্থান দিয়ে প্রতিদিনই সময়
এবং দুরত্ব বাঁচাতে রিকসা,ভ্যান,অটোরিক্সা, ইজিবাইক,
মোটরসাইকেল,মাইক্রোবাস,প্রাইভেটকার অবাধে চলাচল করছে। এতে করে দিনের বেলায়
দুর থেকে এসকল উল্টোপথে চলাচলকারী যানবাহন দুরপাল্লার দ্রুতগতির চালকদের
দৃষ্টি গোচর হলেও রাতের বেলায় চরম ঝুঁকিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। মহাসড়কের
উল্লেখিত স্থানগুলোর অধীনে হাইওয়ে পুলিশের ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং ,লালমাই
এবং আমানগন্ডা থানার অস্তিত্ব থাকলেও উল্টো পথে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রনে
তাদের কোন কার্যকর র্ভূমিকা নেই।
ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী,সিলেট,রংপুরসহ
বিভিন্ন স্থান থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারমুখী মহাসড়কে যাতায়াত করা
দুরপাল্লার দ্রুতগতির বিলাসবহুল হানিফ, গ্রীনলাইন,এনা,লাল-সবুজসহ একাধিক
পরিবহনের একাধিক চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসকল প্রতিটি বাসই
নির্দিষ্ট সময় হিসেবে গন্তব্যে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু কুমিল্লার
উল্লেখিতস্থানগুলোতে উল্টোপথে যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতিটা মুহুর্তে এসব
স্থানে গাড়ির গতি কমাতে হচ্ছে। এতে করে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে আসা-যাওয়া
করতে পারছেনা। তারা আরো জানান, কখনো চালকরা দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ি থামিয়ে
দিয়ে বাধ্য হচ্ছে। কখনো দুর্ঘটনা কবলিত হলে তাদের মামলা বা জরিমানাও গুনতে
হচ্ছে। এঅবস্থায় চালকরা উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধে হাইওয়ে পুলিশদের কঠোর
হওয়ার দাবী জানানোর পাশাপাশি উল্টোপথে চলাচলরত যানবাহন চালক,মালিকদের আইনের
আওতায় আনার দাবীও জানান। এছাড়াও অনেক সময় দুর্ঘটনার পর দু’পক্ষের সমঝোতায়
মামলার হয়রানী থেকে বাঁচতে বাধ্য হচ্ছে চালকরা।
হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ
ফাঁড়ির ইন-চার্জ (ইন্সপেক্টর) দেওয়ান কৌশিক জানান, দীর্ঘদিন আমাদের অভিযান
বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আমরা অভিযানে নামার পর আমাদের উপর চড়াও হচ্ছে চালকরা।
হাইওয়ে
পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার
জানান, আমাদের অভিযান হচ্ছে। কিন্তু কোন ভাবেই থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ করা
যাচ্ছে না। এখন অভিযানে মামলা দিতে গেলে বা থ্রি-হুইলার আটক করতে গেলেও
পুলিশের সাথে উগ্রতা দেখায় চালকরা। রিক্সা বা থ্রি-হুইলার চালকরা আইন
অমান্য করছে কিন্তু আমরা অভিযান পরিচালনা করলে পুলিশ নাকি বারাবারি করছে
এমন কথাও শোনতে হচ্ছে আমাদের। তারপরও আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।