চট্টগ্রাম
বন্দরে পড়ে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত
সুবিধায় আমদানি করা ২৪ গাড়িসহ মোট ৪৪টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়েছিল। এ সব গাড়ি
কিনতে আগ্রহীদের দেওয়া দরপত্র আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) খোলা হয়েছে।
নিলামে
৪৪ গাড়ি কিনতে দরপত্র জমা পড়েছে ১৩৭টি। এ ছাড়া সাবেক এমপিদের ২৪ গাড়ির
মধ্যে দরপত্র জমা পড়েছে ১৪টিতে। এ সব গাড়ি কিনতে ৩২ ব্যক্তি–প্রতিষ্ঠান
দরপত্র দাখিল করেছে।
এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে অনলাইনে
দরপত্র দাখিল প্রক্রিয়া শুরু হয়। দরপত্র জমা কার্যক্রম চলে ১৬ ফেব্রুয়ারি
দুপুর ২টা পর্যন্ত। মাঝে গত ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই দিন সকাল ৯টা
থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাড়িগুলো দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন আগ্রহীরা। আজ
সোমবার দরপত্রের বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
৪৪টি গাড়ির মধ্যে আছে– জাপানের
তৈরি ২৬টি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার মডেলের, পাঁচটি টয়োটা হ্যারিয়ার, দুটি
টয়োটা র্যাভ ফোর, একটি টয়োটা এস্কোয়ার এবং চীনের তৈরি হেভি ডিউটি সিনো
১০টি ডাম্পট্রাক। গাড়িগুলোর মধ্যে ২৪টি নতুন টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, যা
শুল্কমুক্ত সুবিধায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যরা এনেছিলেন। টয়োটা
ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির প্রতিটির সংরক্ষিত মূল্য ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৩
হাজার ৮৯৯ টাকা।
আজ সোমবার দরপত্র বক্স উন্মুক্ত করার পর সেগুলো
পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিলামে তোলা ২৪টি সাবেক সংসদ সদস্যদের গাড়িগুলো
সর্বোচ্চ ১ লাখ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দর দিয়েছেন আগ্রহী
ক্রেতারা। ১০টি গাড়িতে কোনও দরপত্র জমা পড়েনি।
নিয়মানুযায়ী প্রথম
নিলামে নির্ধারিত দরের ৬০ শতাংশ বা তার বেশি যিনি সর্বোচ্চ দর দেবেন, তার
কাছে বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। এ হিসেবে ন্যূনতম ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা দর
পড়লে বিক্রির করার সুযোগ রয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্যদের কোনও গাড়িতেই এত দর
পড়েনি। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, কোনও দরদাতাই সাবেক সংসদ সদস্যদের গাড়ি পাচ্ছেন
না।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি
করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্যরা। সরকারের পটপরিবর্তনের পর গত ৬ আগস্ট সংসদ
ভেঙে দেওয়া হয়। শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
তাতে এই গাড়িগুলো ফেলে যান সাবেক সংসদ সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম
কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বলেন, ‘৪৪টি গাড়ির নিলামের
দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে নিলাম কমিটি
পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।’
কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, নিলামে ওঠা সাবেক
সংসদ সদস্যদের গাড়ির মধ্যে সর্বোচ্চ দর উঠেছে নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক
এমপি মো. সাদ্দাম হোসাইন পাভেল ও খুলনা-৩ আসনের এস এম কামাল হোসাইনের
গাড়িতে। দুই গাড়ি কিনতে এস এম আরিফ নামে এক ব্যক্তি দর হাঁকিয়েছেন ৩ কোটি
১০ লাখ টাকা করে।
এ ছাড়াও যশোর-২ আসনের মো. তৌহিদুজ্জামানের গাড়িতে
ফারজানা ট্রেডিং ২ লাখ টাকা ও মহসিন মোহাম্মদ কবির ১ লাখ টাকা সর্বনিম্ন দর
হাঁকিয়েছেন।