যারা
মনে করছে মহাপরাক্রমশালী হয়ে উঠেছে তাদের হাসিনা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত
বলেন মন্তব্য করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহবায়ক হাসনাত
আব্দুল্লাহ বলেছেন, ৫ আগষ্টের পর অনেকেই মনে করছেন তারা মহাপরাক্রমশালী হয়ে
গেছেন। আমি বলব তাদের হাসিনা, আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ থেকে শিক্ষা নেওয়া
উচিত।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার দেবিদ্বার
উপজেলার রেয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী ‘দেবিদ্বার
স্টুডেন্ট ফেস্ট’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা
বলেন। মেলায়ফ্রিল্যান্স ইনভেস্টগেটিভ সাংবাদিক সাইদ আবদুল্লাহ, এসিএস
ফাউন্ডার নুমেরী সাত্তার অপার এবং কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর উপস্থিত ছিলেন।
হাসনাত
আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এমন অনেকেই ধরে নিয়েছিল যে হাসিনা মৃত্যু
না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকবে। কি নির্মম পরিহাস ! গত বছরেও এই সময়েও
হাসিনার এভাবে বিপর্যয় ঘটবে তাকে পালাতে হবে কেউ কখনো ভাবেনি। এখন যারা
নিজেদের মহাপরাক্রমশালী মনে করে তারাও মনে করত হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করার মত
কেউ নেই। তাদের মাথায় রাখা উচিত হাসিনার পরিণতির কথা, ৫ ই আগস্টের কথা,
ছাত্রলীগের কথা। এই জিনিস যদি তাদের মাথায় থাকে তাহলে কোন ব্যক্তি নিজেকে
মহাপরামক্রমশালী ভাববে না।
শিক্ষাঙ্গনের বর্তমান পরিস্থতি নিয়ে
সাংবাদিকদের হাসনাত আরও বলেন, শিক্ষাঙ্গনে যদি শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি
না চায় সে ক্ষেত্রে আমরাও চাই না যে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের ওপর রাজনীতি
চাপিয়ে দেওয়া হোক। শিক্ষার্থীরাই নির্ধারণ করবে যে ক্যাম্পাসে
ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি থাকবে না। সুতরাং এটি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব
ব্যাপার।
নিজের অপকর্মের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর বিষয়ে হাসনাত বলেন,
ট্যাগিং এবং ব্লেমিং’র রাজনীতি যা আমাদের দেশে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে বিদ্যমান
ছিল আমাদের কাছে মনে হচ্ছে সেই ধরণের ট্যাগিং এবং ব্লেমিংয়েরা রাজনীতি ৫
আগস্টের পর দূর হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি, যারা এ ধরণের বক্তব্য দিচ্ছেন
আমরা যদি ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াই অব্যাহত রেখেছি অতএব, এ ধরণের বক্তব্য থেকে
বিরত থাকুন।
নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন,
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নাগরিক কমিটির কারা রাজনীতি করবেন তাদের
মধ্যে আলোচনা চলছে যারা রাজনীতি করতে চান তারা রাজনীতি করবেন। দলের
গঠনতন্ত্র, কাঠামো এবং আদর্শ কি হবে এবং দলের প্রধান কে হবেন এ বিষয়গুলো
নিয়ে আলোচনা চলছে। আমাদের দেশে যেসব প্রচলিত রাজনীতি কাঠামো রয়েছে সেটির
বাহিরে গিয়ে নতুন কিছু করা যায় কিনা তাও চিন্তা-ভাবনা চলছে।
আওয়ামী
লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের
দাবিটি জনমানুষের দাবি, ৫ ই আগস্ট যখন হাসিনা দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়,
তখনই আওয়ামী লীগ বিবর্জিত দলে পরিণত হয়েছে, মুসলিম লীগও জনবির্বজিত দল
পরিণতি হয়েছিল, ঠিক একইভাবে আওয়ামী লীগ হারিয়ে যাওয়ার পথে। আমরা চাই
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক।
সম্প্রতি
কুয়েটে ছাত্রদল অস্ত্র নিয়ে মহড়া সম্পর্কে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, যদি
ছাত্রদল ছাত্রলীগের মতো পেশী শক্তি ও শোডাউনের রাজনীতি করে তাদের ছাত্রলীগ
থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। ছাত্রলীগকে কেন আমরা দেশ থেকে তাঁড়াতে বাধ্য
হয়েছিলাম, তারা কেন ছাত্রদের থেকে বিতাড়িত হয়েছে, কেন তারা ক্ষমতাই টিকে
থাকতে পারেনি। ছাত্রলীগও এভাবে দখল, পেশীশক্তি, অস্ত্রের মহড়া দিয়ে
ক্যাম্পাস দখল করেছিল ছাত্রদলেরও যদি এ সমস্যা থাকে তাদেরও একই পরিণত হবে।
তাদেরকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে
হাসনাত হাসিনা প্রসঙ্গে আরও বলেন,
দুর্দান্ত প্রতাপশালী হাসিনাকে দেখেছি তাকে চ্যালেঞ্জ করার মত কেউ ছিলনা
এখন রাজনীতিবীদদের অনেককে বড় বড় কথা বলতে দেখা যায়, অনেক দলকে বড় বড়
কর্মসূচি করতে যদি দেখা যায়। হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে হাসনাত
আব্দুল্লাহ বলেন, হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের প্রচেষ্টা
অব্যাহত রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিভাবে হাসিনাকে
আবার দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো যায়। হাসিনার ফাঁসি
দাবির আমাদের দাবির কোন বিষয় না, একজন খুনির বিচার ফাঁসি হবে এটা
স্বাভাবিক।