দেশে
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষকে অনিশ্চয়তার মধ্যে না রেখে দ্রুত
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে
দেন। অন্তর্র্বতী সরকারের উচিত দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা
করা। আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বলবো-আপনারা এমন কোন কথা বলবেন না যাতে
জাতির ঐক্য নষ্ট হয়। এই মুহূর্তে দেশে ঐক্যের বড় প্রয়োজন। এই ক্রান্তি কালে
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি ঘোষিত
৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কুমিল্লার লাকসাম জংশন স্টেডিয়ামে আয়োজিত
জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন,
বাংলাদেশ একটা ক্রান্তিকাল পার করছে। একটা ফ্যাসিবাদ গোটা বাংলাদেশকে শেষ
করে দিয়েছি। আমরা ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য
করেছি। অত্যাচার করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। কিন্তু হাসিনা
ভারতে গিয়ে দিল্লিতে বসেও ষড়যন্ত্র করছে। ভারত আমাদের বৃহত্তর প্রতিবেশী।
কিন্তু ভারত যদি মনে করে শুধু আওয়ামী লীগই তাদের বন্ধু; এটা ভুল।
তিনি
বলেন, দেশ স্বাধীন করেছিলাম গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। তবে শেখ মুজিব সরকার
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। শেখ হাসিনা তার শাসনামলে সব শেষ করে
দিয়েছে। কেউ ভোট দিতে পারেনি। ভোটের আগের রাতে সিল মেরে আওয়ামী লীগের
সবাইকে নির্বাচিত করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনটা ছিলো ডামি নির্বাচন। দেশের
নির্বাচন ব্যবস্থা শেষ করে দিয়েছিলো শেখ হাসিনা। এই সময় তারেক রহমান একটা
স্লোগান দিয়েছিলো টেক ব্যাক। আরেকটা স্লোগান দিয়েছিলো ফয়সালা হবে রাজপথে।
ঠিকই রাজপথে ফয়সালা হয়েছে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম হওয়া লাকসামের
বিএনপি নেতা হিরু হুমায়ূনের সন্তানদের কথা স্মরণ করিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন,
এমন ৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছিলো। তার মধ্যে সিলেটের নেতা ইলিয়াসকেও
গুম করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতাকমীর নামে মামলা দিয়েছে শেখ হাসিনা।
সংস্কারের
কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মোটা কাপড়, মোটা ভাত, মাথার উপর ছাদ
এগুলোই হলো সংস্কার। এখন যে ব্যবস্থা চলছে তাতে শান্তি আসবে না। তারেক
রহমান যে ৩১ দফা দিয়েছে তাতেই সমাধান আছে। দয়া করে দেশকে আর নৈরাজ্যের দিকে
নিয়ে যাবেন না। যতটুকু সংস্কার দরকার, ততটুকু সংস্কার করেন। কাল বিলম্ব না
করে দ্রুত নির্বাচন দেন ভোটের একটা রোডম্যাপ জনগণকে জানিয়ে দেন।
বিকেল
তিনটায় সমাবেশ শুরুর আগে পবিত্র কোরান থেকে তেলোয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
তারপর নেতৃবৃন্দ ৩১ টি পায়রা উড়িয়ে ৩১ দফার উদ্বোধন করেন।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লাকসামে জনসভায় হাজারো নেতাকর্মীর ঢল নামে।
লাকসাম
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মোঃ
আবুল কালামের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস
চেয়ারম্যান বরকাতুল্লাহ বুলু, বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন লাকসাম-মনোহরগঞ্জ
সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপির
কেন্দ্রীয় ত্রাণ উপনির্বাসন সম্পাদক হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন, কুমিল্লা
বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির
আহবায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম,
আমিরুজ্জামান আমির, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির
আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, ঢাকা মহানগর
উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কফিল উদ্দিন, লাকসাম পৌরসভার সাবেক মেয়র
আলহাজ্ব মজির আহমেদ, লাকসাম পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাশেম মানু, উপজেলা
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ডাক্তার নুরুল্লাহ রায়হান. উপজেলা বিএনপির
সদস্য সচিব আব্দুর রহমান বাদল, পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব বেলালুর রহমান
মজুমদার, মনোহরগঞ্জ বিএনপির আহবায়ক শাহ সুলতান খোকন, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস
পাটোয়ারী, গুম হওয়া লাকসামের বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরুর পুত্র রাফসান,
হুমায়ুন পারভেজের ছেলে শাহরিয়ার, সাবেক ছাত্রনেতা আয়েজ আলীসহ নেতৃবৃন্দ।