মুরাদনগর
প্রতিনিধি: স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহের জের ধরে ১৬ মাসের শিশু সন্তানকে
গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পাষন্ড বাবার বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তরপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত, ক্বারি
আবু নাঈম ওরফে নাঈম হুজুর (৪৫) উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল
খালেকের ছেলে। সে ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। নিহত শিশু আব্দুল্লাহ
ওরফে রাফসান (১৬ মাস) আবু নাঈমের তৃতীয় সন্তান। এ ঘটনায় পাষন্ড বাবার
বিরুদ্ধে শিশুটির মা শাহিদা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
শিশুটির মা
শাহিদা আক্তার জানান, শিশু রাফসানের জন্মের পর থেকেই তার বাবা তাকে নিজের
সন্তান হিসেবে মেনে নিতে পারছিল না। এ বিষয়টি নিয়ে তাদের সাংসারিক জীবনে
দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। শনিবার সকাল আনুমানিক ৯টায় শিশু রাফসানকে
চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা নিয়ে যেতে চায় তার বাবা নাঈম। তখন শিশুটির মা তাদের
সাথে যেতে চাইলে বাঁধা দেয় তার স্বামী আবু নাঈম। বিষয়টিকে খুব ভালোভাবে
নিতে পারেনি শিশুটির মা শাহিদা আক্তার। তাই নিজে যেতে না পারায় স্বামীর
সাথে তার বড় ছেলে ১২ বছর বয়সী আনাসকে সফর সঙ্গী হিসেবে পাঠায়। অল্প সময়ের
মধ্যেই তার বড় ছেলে একা বাড়ি চলে আসে। বাড়ী ফিরে বড় ছেলে আনাস জানায়, তার
বাবা তাকে মুরাদনগর বাজারে রেখে ছোট ভাইকে নিয়ে একা কুমিল্লায় চলে গেছে।
পরে বেলা আনুমানিক ১২টায় মৃত অবস্থায় রাফসানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে তার
বাবা। তখন সে জানায়, কুমিল্লা যাবার পথে কংশনগর এলাকায় গাড়ির ভিতরেই
অসুস্থতার কারণে শিশু রাফসান মৃত্যুবরণ করেছে। তবে মা শাহিদা আক্তারের
দাবী, দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামী সন্তানটিকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল।
অসুস্থতা জনিত কারণে নয়, তার স্বামী শিশু রাফসানকে গলাটিপে হত্যা করেছে।
এলাকাবাসী
জানায়, শিশু রফসানের জন্মের পর থেকে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে তার স্বামী
বহুবার সালিশি বৈঠক ডেকেছে। প্রতিটি সালিশেই শিশু সন্তান রাফসানকে মেরে
ফেলার হুমকি দিতো তার বাবা আবু নাইম। তবে সালিশে স্ত্রীর পরকীয়ার কোন
প্রমাণ দিতে না পারায় স্থানীয় মাতব্বরদের পরামর্শে তারা একসাথে সংসার
করছিল। হয়তো তার স্ত্রীর সেই পরকীয়া সন্দেহের জেরেই শিশু রফসানকে হত্যা করা
হয়েছে।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন,
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আবু নাঈমকে আটক করা হয়েছে। শিশু রাফসানের লাশ উদ্ধার
করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ধৃত পাষন্ড বাবা আবু নাঈমকে রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে
পাঠানো হবে।