কুমিল্লা
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেছেন, রমজান ও ঈদুল ফিতরকে
সামনে রেখে কুমিল্লায় অপরাধ প্রতিরোধে মাঠে কাজ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
নগরীর অভিজাত শপিংমল, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন মার্কেট এলাকা সিসি ক্যামেরার
আওতায় এনে মনিটর করা হচ্ছে।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার
কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। পুলিশ
সুপার বলেন, এরই মধ্যে মার্কেটগুলোর সামনে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের
অবস্থান ও টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত ডাকাতি বন্ধে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা টহল
দিচ্ছে এবং এটি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তদারকি করছেন।
তিনি বলেন,
নগরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে রমজানের সময় পুলিশি নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো
হয়েছে। রমজান ঘিরে আর্থিক লেনদেন বেড়ে যায়, তাই প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান
ব্যাংক, বিপণিবিতানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা
পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ঈদের কেনাকাটায় শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে নারী
হয়রানি ও ইভটিজিং রোধে বিপুলসংখ্যক মহিলা পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়াও
চাঁদাবাজি, ছিনতাই প্রতিরোধে গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারি ও টহল অব্যাহত
থাকবে। রমজানের প্রতিটি ধাপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে বলে
জানান তিনি। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়ক দিয়ে যেসব বিদেশফেরত যাত্রীরা যাতায়াত করবেন তাদের মেঘনা অথবা
দাউদকান্দি এলাকায় ৩০-৪০টা মাইক্রো গাড়ি জড়ো করে পুলিশি টহলের মাধ্যমে
নিরাপদ গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,
মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য মাইকিং করেছি। নগরীর ৮টি পয়েন্টে
চেকপোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যানজট নিরসনে তিনি বলেছেন,
শহরের যানজট নিরসনে আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১৫ রমজানের পর নগরীর
কান্দিপাড় এলাকায় যানবাহনের ওয়ানওয়ে করা হবে। বিভিন্ন মার্কেট মালিকরাও
আমাদের সহযোগিতা করছেন। ঈদ ঘিরে যানজট নিরসনে অতিরিক্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা
রয়েছে।
কিশোর গ্যাং সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন,
কিছু কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাস্তা ব্লক করে ভিডিও স্যুট করে মানুষকে
ভোগান্তি ও আতঙ্কে সৃষ্টি করছে। আমরা গত কয়েক মাসে এমন চক্রের বেশ কিছু
সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি।
দেবিদ্বারে ডাকাতির গুজব সম্পর্কে বলেন, ‘গত
রাতে দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে যে মাইকিং
করা হয়েছে, তা শোনার পর আমরা সেখানে ফোর্স পাঠিয়েছি। তবে এটি ছিল একটি
গুজব। এসব গুজব থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।
পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের
প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেন, কুমিল্লার মানুষের নিরাপত্তার দেয়ার বিষয়টা
আমাদের মাথায় আছে। ঈদকে সামনে রেখে কিছু অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি,
ছিনতাই, চুরির উৎপাত বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এটির নিয়ন্ত্রণ নিতে
৪/৫ অতিরিক্ত মোবাইল টিম প্রস্তুত করেছি। ডিবির টিমও সারাক্ষণ কাজ করছে।
আমরা একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছি, কোথাও যদি কোন অপরাধ ঘটে তাৎক্ষনিক
তারা সেখানে পৌছে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
আমরা ইতোমধ্যে চারজন ডাকাতকে
গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, ডাকাতি কাজে
ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা
হবে। তারা আনুমানিক ৩০-৪০ জনের একটি গ্রুপ। তারা বিমানবন্দরে প্রবাসীদের
টার্গেট করে পিছু নেয়। তাদের সঙ্গে পিকআপে থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
নির্জন কোথায় এসে পৌছলে পিছন থেকে পিকআপ দিয়ে প্রবাসীর গাড়িতে ধাক্কা দেয়।
পরে গাড়ি থামিয়ে বিভিন্ন অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করে ডাকাতি করে। এরা এই
চক্রেরই সদস্য।