২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাড়ি থেকে ধরে এনে পায়ে গুলি করে
পঙ্গু করার অভিযোগে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলামসহ
৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের
করেছে ভুক্তভোগী দৌলখার গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন। বুধবার (
১২ মার্চ) কুমিল্লা জেলা ও দায়রা আদালতে তিনি এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার
আইনজীবী বদিউল আলম সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নির্যাতন ও
হেফাজতের মৃত্যু নিবারণ আইন-২০১৩ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আমরা আশা
করছি বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে নির্দেশনা প্রদান করবেন।
ভুক্তভোগী
মোয়াজ্জিন বেলাল হোসেন নাঙ্গলকোট উপজেলার দোলখার ইউনিয়নের বাম পন্ডিত
বাড়ির এলাকার আলী হায়দারের সন্তান। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের
দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রাজনীতির সাথে
জড়িত ছিলেন। বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা চলমান রয়েছে
বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন। বর্তমানে তিনি এসব মামলায় জামিনে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী
মুয়াজ্জিন বেলাল হোসেন জানান, '২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে
নাঙ্গলকোটে নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় বেলায়েত হোসেন
নামে আরো একজনকেও সাথে নিয়ে নাঙ্গলকোটের লুধুয়া নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে
নাঙ্গলকোট থানার তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলাম দুইজন পুলিশ সদস্যকে পায়ে গুলি
করতে বলেন। তারা গুলি করতে রাজি না হলে ওসি নজরুল ইসলাম নিজেই আমাদের
দুইজনকেই বাম পায়ের হাঁটু বরাবর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে।'
পরবর্তীতে
তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করে এবং তাদেরকে গ্রেফতার
দেখানো হয়। এ মামলায় এক বছর কারাভোগ করতে হয়েছে বলে জানান বেলাল হোসেন।
মুয়াজ্জিন
বেলাল আরো বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
থাকাকালীন সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে ঢাকা রেফার করা হলেও ওসি নজরুল
ইসলাম তা হতে দেননি। যে কারণে চিকিৎসার অভাবে আমার পা টি কেটে ফেলতে হয়েছে।
আমার বিরুদ্ধে অন্যায় আচরণ ও মিথ্যা মামলা দায়ের করে যে নির্যাতন চালানো
হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আমি তৎকালীন ওসি নজরুল ইসলামসহ পুলিশের ৭ সদস্য,
নাঙ্গলকোট উপজেলার তৎকালীন চেয়ারম্যান ও তৎকালীন পৌরসভার মেয়র সহ মোট ৩১
জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে
আসামি করা হয়েছে। আমি আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো।