প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১:৩৮ এএম আপডেট: ১৮.০৩.২০২৫ ১:৪৯ এএম |

কুমিল্লা
সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গার মূল দলিলের পাতা
পরিবর্তন করে নতুন পাতা যুক্ত করে ভলিউমে (বালাম বই) উঠানোর গুঞ্জনের
সত্যতা যাচাইয়ে ‘অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে’ বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা সদর সাব
রেজিস্ট্রার লুৎফুননাহার লতা। তিনি বলেন, যে অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন
চলছে তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমরা অফিসিয়ালভাবে তদন্ত করছি। বিষয়টি নিয়ে
জেলা সাব রেজিস্ট্রার স্যারের সাথে কথা হয়েছে; তিনিও বলেছেন প্রাথমিকভাবে
যাচাই করতে। এতে সত্যতা উঠে আসলে প্রয়োজনে আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের
পরামর্শক্রমে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটি করবো। কারো বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ
প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে রবিবার (১৬
মার্চ) দুপুরে হঠাৎ করেই কুমিল্লা সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম
প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গার মূল দলিলের
পাতা পরিবর্তন করে নতুন পাতা যুক্ত করে ভলিউমে (বালাম বই) উঠানোর জের ধরেই
রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো বলে গুঞ্জন উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে
অনুসন্ধানে সোমবার সরেজমিনে কুমিল্লা সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে জানা
যায়, কুমিল্লা সদর দলিল লেখক সমিতির সদস্য ফারুক একজনের কাছে জনৈক ব্যক্তি
দুই হাজার টাকা দিয়ে একটি দলিলের নকল উঠাতে চান। ফারুক সেই দলিলের নকলের
জন্য আবেদন করলে জানা যায়, মূল দলিল থেকে দুইটি পাতা ছিঁড়ে নতুন দু’টি পাতা
যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য। বিষয়টি সাবরেজিস্ট্রারের
নজরে আসে। এ ঘটনায় জড়িত একজন নকল নবীশকে ডেকে এনে রাগারাগি এবং পুরনো
দলিলের পাতা খোঁজে পেতে তৎপরতা চালাতে থাকেন তিনি। সেদিন দুপুর ১২টার দিকে
এ ঘটনার জের ধরে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে দলিল নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা দেখা গেছে সোমবারেও। জানা গেছে, এদিন সকালে অফিসে এসেই
জেলা সাব রেজিস্ট্রার ও সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কিছুক্ষণ বৈঠক করেন।
এরপর সদর সাব রেজিস্ট্রার তাঁর অফিসের অন্যান্য কর্মর্কতাদের নিয়েও
দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। এতো কিছুর পরও শেষ পর্যন্ত ওই কপি পাওয়া গেছে কি- না
তা জানা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সদর সাব রেজিস্ট্রার
লুৎফুননাহার লতা বলেন- দলিলের পাতা পাল্টানোর মতো কোনো ঘটনার সত্যতা এখনো
আমরা পাইনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা অফিসিয়ালি কাজ করছি। যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ
একটি বিষয় নিয়ে গুঞ্জন চলছে তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি। তদন্ত চলা
অবস্থায় এ নিয়ে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।
অভিযোগের বিষয়ে
জানতে চাইলে দলিল লিখক ফারুক বলেন, ওইদিন একজন লোক এসে আমার কাছে একটি
দলিলের নকলের জন্য বলেন। আমি তা উঠাতে যাওয়ার পর ঝামেলা বাঁধে। এতে তো আমার
কিছু করার নাই। নকল উঠিয়ে দেওয়া আমার কাজ। আমি তাই করেছি। যে দিয়েছে তাকে
আমি চিনি না; দলিলের নাম্বারও আমার মনে নেই। এ নিয়ে সকালে সদর দলিল লেখক
সমিতি থেকেও আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমি আমার মতো বলে দিয়েছি।
জানতে
চাইলে সদর দলিল লিখক সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, যেহেতু
অভিযোগ উঠেছে আমরা তার কাছ থেকে বক্তব্য জানতে চেয়েছি। ফারুকের বিষয়ে কোনো
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন অফিস
কর্তৃপক্ষ।