সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫
১৭ চৈত্র ১৪৩১
কৃষক আন্দোলন কুমিল্লার হাসনাবাদে যা ঘটেছিল-
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ১:৩৯ এএম আপডেট: ২০.০৩.২০২৫ ২:২৯ এএম |

কৃষক আন্দোলন কুমিল্লার হাসনাবাদে যা ঘটেছিল-
উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের শুরুতে পূর্ব বাংলার কৃষকদের উপর হিন্দু জমিদার, মহাজন ও ভদ্রলোক শ্রেণির শোষণ বৃদ্ধি পায়। মুসলমান কৃষকরা এই ত্রিমুখী শোষণ থেকে মুক্তির চেষ্টা করে। ব্রিটিশ সরকার পরোক্ষ শাসনের কারণে শোষক হিসেবে পরিগণিত হয়নি। ফলে কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শুরু হয় কৃষক আন্দোলন। সারা ভারতে কৃষকসভা গড়ে উঠার আগেই কুমিল্লার হাসনাবাদের কৃষক আন্দোলন ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। কুমিল্লায় কৃষক আন্দোলনে হিন্দু-মুসলিম কর্মীরা একসঙ্গে কৃষকদের দাবি আদায়ের আন্দোলন করেছেন। তবে মুসলিমদের সংখ্যাই ছিল বেশি। “কোন খাজনা নয়” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সরকার ও জমিদারদের বিরুদ্ধে কুমিল্লার লাকসামের হাসনাবাদে খাজনা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে মিছিল ও সভার ডাক দেয় কৃষক ও শ্রমিক সমিতি। ১৯৩২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ডাকা এই সভা ও মিছিলের কর্মসূচি পুলিশ নিষিদ্ধ করে দেয়। কিন্তু দুপুরে আশেপাশের ৩০টি গ্রামের তিন হাজার কৃষক এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ‘কৃষক দিবস’ পালনের জন্য জোর দেয়। নোয়াখালী থেকে ১ হাজার জনেরও বেশি লোক মিছিল নিয়ে আসার সময় বাধা দিলে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।

পুলিশ কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। কৃষকরা ক্রমশ হিংস্র হয়ে ওঠে, এসময় পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। এতে তিনজন নিহত এবং ৩২ জন আহত হন। উত্তেজিত জনতা পাথর দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালালে একজন উপ-পরিদর্শক ও ছয়জন কনস্টেবল আহত হন। আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতার হামলার সময় পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে ইউনিয়ন বোর্ডের এক সদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে থাকা অবস্থায় এক চৌকিদারের সহযোগিতায় হাসনাবাদ টেলিগ্রাফ অফিসের মাধ্যমে কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে ট্রেলিগ্রাম পাঠান। সেই টেলিগ্রাম রাত ৮টায় পেয়ে কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার, সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৩০ জন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটে যখন কুমিল্লার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি. স্টিভেনস নিহত হওয়ার রেশ তখনো কাটেনি। এবং শান্তি ও সুনীতির বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আদেশ দেওয়া হচ্ছিল মাত্র। হাসনাবাদে তিন জন নিহত ও ৩২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ১৭ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গল কাউন্সিলে আলোচনা হয়। সেখানে স্বরাষ্ট্র সদস্য মি. ডব্লিউ. ডি. আর. প্রেন্টিস ত্রিপুরা তথা কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি প্রতিবেদন পাঠ করে শোনান।
কৃষক আন্দোলন কুমিল্লার হাসনাবাদে যা ঘটেছিল-
১৬ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের ‘ডেইলি হেরাল্ড’ পত্রিকায় প্রকাশিত খবরটি কুমিল্লায় সংঘটিত একটি কৃষক বিদ্রোহের ঘটনা তুলে ধরে। খবরটি থেকে জানা যায়, প্রায় তিন হাজার কৃষক ‘কৃষক দিবস’ পালন উপলক্ষ্যে হাসনাবাদে একটি সভার জন্য জড়ো হয়েছিলেন।
পুলিশ এই সভাটি নিষিদ্ধ করেছিল এবং কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, পুলিশ গুলি চালায়। এই ঘটনায় তিনজন কৃষক নিহত এবং ৩২ জন আহত হন। এছাড়াও, পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল গুরুতর আহত হন।
এই বিদ্রোহের পেছনে ‘কৃষক ও শ্রমিক সমিতি’র ভূমিকা ছিল বলে জানা যায়। সমিতি সরকার ও জমিদারদের বিরোধিতা করছিল এবং ‘কোন খাজনা নয়’ অভিযান ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছিল। এই সমিতিটি এত শক্তিশালী ছিল যে, ৩০টি গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ তাদের সদস্য ছিলেন।
সমিতির সদস্যরা যোগদানের জন্য চার পেন্স প্রদান করতেন এবং সমিতির নেতারা স্বাধীন সরকার গঠন, আদালত পরিচালনা, কর আদায় এবং জরিমানা আরোপের মতো কাজ করছিলেন। এমনকি, আদেশ অমান্যকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে তারা হিংসাত্মক পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছিল।
এই খবরটি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে কৃষক আন্দোলনের একটি চিত্র তুলে ধরে, যেখানে কৃষকরা তাদের অধিকারের জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন এবং সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
লাহোর থেকে প্রকাশিত ‘সিভিল এন্ড মিলিটারি গেজেট’ পত্রিকায় ‘বাংলায় পুলিশের গুলি, দুই জন নিহত: ৩০ জন আহত’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি। তাতে বলা হয়-‘হাসানাবাদে একদল জনতা পুলিশের উপর হামলা করলে পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় গুলি চালাতে বাধ্য হয়, এতে দুইজন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। নোয়াখালী থেকে ১ হাজার জনেরও বেশি লোক পুলিশের আদেশ অমান্য করে সভা ও মিছিলের মাধ্যমে “কৃষক দিবস” পালনের জন্য জোর দেয়। জনতা পাথর দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালালে একজন উপ-পরিদর্শক ও ছয়জন কনস্টেবল আহত হন। আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’ সিভিল এন্ড মিলিটারি গেজেট পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দুই জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও লন্ডনের ইয়র্কশায়ার পোস্টে এক দিন আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলার পুলিশ গুলি’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে তিন জনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে। এতে বলা হয়- ‘১৩ই ফেব্রুয়ারি, বাংলার ত্রিপুরা জেলার হাসনাবাদে পুলিশ আক্রান্ত হয় এবং গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এতে তিনজন নিহত হন।’
ঘটনার চার দিনের মাথায় কলকাতায় বেঙ্গল কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। সে খবর দিয়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারি সিভিল এন্ড মিলিটারি গেজেট পত্রিকা। ‘পুলিশের গুলি চালনা ন্যায্য বলা হলো, ১০০০ গ্রামবাসীর দ্বারা দল আক্রান্ত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়-‘... বেঙ্গল কাউন্সিলে স্বরাষ্ট্র সদস্য মিঃ ডব্লিউ. ডি. আর. প্রেন্টিস ত্রিপুরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনটি পাঠ করেন, যিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হাসনাবাদ থেকে ফিরেছিলেন। সেখানে জনতার আক্রমণের ফলে সাব-ইন্সপেক্টর এবং ছয়জন কনস্টেবল আহত হওয়ার পর পুলিশ গুলি চালায়। এতে দুইজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়, যাদের মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত।
আক্রমণ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রামবাসীরা জাতীয় (লাল) পতাকা বহন করে দুপুরে একটি মিছিল বের করে। যখন সাব-ইন্সপেক্টর এই কর্মকাণ্ডের অবৈধতা ব্যাখ্যা করছিলেন এবং মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ হতে বলছিলেন, তখন প্রায় ১ হাজার জন লোক লাঠি নিয়ে নোয়াখালী জেলার একটি গ্রাম থেকে মিছিল করে আসে এবং স্লোগান দিতে থাকে। এই মিছিল পুলিশের দিকে এগিয়ে আসে এবং পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ হতে বলে। মিছিলটি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের উপর আক্রমণ করে। কিছু দাঙ্গাকারী এমনকি একজন কনস্টেবলের কাছ থেকে একটি রাইফেল ছিনিয়ে নেয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার লোকদের জীবন বাঁচাতে তাদের গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপরও দাঙ্গাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়নি। পুলিশ পিছু হটে ইউনিয়ন বোর্ডের এক সদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয়, যেখানে জনতা তাদের অনুসরণ করে এবং বাড়িটি ঘিরে ফেলে, বাড়ির মালিককে পুলিশকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায়। জনতা গভীর রাত পর্যন্ত হুমকিমূলক ভঙ্গিতে সেখানে অবস্থান করে। এদিকে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একজন চৌকিদারকে মোল্লার ছদ্মবেশে হাসনাবাদে একটি টেলিগ্রাফ অফিস থাকায় লাকসাম থানায় একজন কনস্টেবলকে একটি টেলিগ্রাম পাঠান, যাতে এটি পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টকে পাঠানো হয়। রাত ৮টায় টেলিগ্রাম পাওয়ার পর, ডেপুটি পুলিশ সুপার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৩০ জন লোক নিয়ে গ্রামে যান। ত্রিপুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যোগ করেন: ‘তদন্ত থেকে আমার কাছে মনে হয় যে গুলি চালানো ন্যায্য ছিল এবং উচ্ছৃঙ্খল জনতার দ্বারা পুলিশের উপর হামলার পর আত্মরক্ষার জন্য অবলম্বন করা হয়েছিল। গুলি চালানো না হলে, নিঃসন্দেহে জনতা পুলিশকে নিশ্চিহ্ন করে দিত। পঁয়ত্রিশ জন আহত হয়েছে, কিন্তু গুলির চেয়ে বেশি ছররা গুলি ব্যবহার করায় একজনের আঘাত বাদে বাকিগুলো খুব গুরুতর নয় বলে জানা গেছে।’ প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে: “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।” বেঙ্গল কাউন্সিলে এই পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি সভাকে জানান যে তিনি এই বিষয়ে মুলতবি প্রস্তাবের একটি নোটিশ পেয়েছেন, কিন্তু তিনি ভেবেছিলেন যে স্বরাষ্ট্র সদস্যের বিবৃতির পর সেই প্রস্তাবটি সরানোর তেমন প্রয়োজন হবে না। রাষ্ট্রপতি স্বরাষ্ট্র সদস্যের বিবৃতির উপর একটি সংক্ষিপ্ত নোটিশ প্রশ্নের পরামর্শ দেন, কিন্তু যারা নোটিশ দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন প্রস্তাবের জন্য চাপ দেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রস্তাবটি যথাযথভাবে পরীক্ষা করা হবে। বাজেট পেশ করা হলে  সোমবার পর্যন্ত কাউন্সিল মুলতবি করা হয়।’
পত্রিকার সংবাদগুলোর কোনটিতেই নিহতদের নাম পাওয়া যায় নি এবং পরবর্তীতে যাঁরা স্মৃতিচারণ লিখেছেন তাঁরা তারিখটি ভুল করে ১৪ ফেব্রুয়ারি লিখেছেন। সংঘর্ষের ঘটনাটি ১৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার দিনভর সংঘটিত হয়। সাংবাদিক তাপস দেবনাথের লেখা ‘ত্রিপুরার কৃষক আন্দোলন ও বিদ্রোহ’ গ্রন্থে ৫ জন নিহতের কথা উল্লেখ করলেও তিনি চার জনের নাম উল্লেখ করেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কাদরার জনাব আলী (৪৫), বাদুয়াপাড়ার সলিমুদ্দিন (৫০), নরপাহিয়ার সমিরুদ্দিন এবং নাউতলার মকরম আলী(৫৫)। হাসনাবাদ কৃষক আন্দোলনের কারণে মুখলেছুর রহমানকে ডাকাতির মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে ৫ বছর সাজা দেওয়া হয়। শাশ্বত ত্রিপুরা গ্রন্থের ‘ত্রিপুরা ও স্বাধীনতা সংগ্রাম’ প্রবন্ধে বিপ্লবী অখীল চন্দ্র নন্দী লিখেছেন-হাসনাবাদের কৃষকদের শোভাযাত্রা পরিচালনা করেন মুখলেছুর রহমান, কৃষ্ণসুন্দর ভৌমিক, ফণী মজুমদার ও আবদুল মালেক প্রমুখ নেতৃত্ব দেন।
মতামত জানাতে-+৮৮০১৭১১১৫২৪৪৩













সর্বশেষ সংবাদ
মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহে। স্বস্তির ঈদ জামাত
কুমিল্লায় আইনজীবী আবুল কালাম হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
কুমিল্লায় ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়
এলো খুশির ঈদ
কুমিল্লার ৩৮পরিবারে ‘বিষাদের ঈদ’
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা জিলা স্কুলে গ্র্যান্ড ইফতার মাহফিল
কুমিল্লায় আইনজীবী আবুল কালাম হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
কুমিল্লায় ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়
কুমিল্লার ৩৮পরিবারে ‘বিষাদের ঈদ’
হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ পুনর্মিলনী
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২