নিজস্ব
প্রতিবেদক: সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক এমপি বাহারের খুবই আস্থাভাজন
ঠিকাদার সাইফুল ইসলামের সকল ফাইল সংগ্রহ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই
সাইফুল ইসলাম একাই বাগিয়ে নিয়েছেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৩১ কোটি
টাকার কাজ। অভিযোগ রয়েছে সে কাজের মানহীনতা এবং কাজ না করে বিল নেওয়ার।
সাবেক এমপি বাহারের সাথে রহস্যময় সম্পর্কের কারণে হঠাৎ গুরুত্ব বেড়ে যাওয়া
সাইফুল ও তার ভাই আনিসের বিষয়ে মানুষের কৌতুহল বেড়ে যায়। বিদেশে তাদের
বিত্তবৈভব প্রবাসী কুমিল্লা বাসীর কাছে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়। কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশনে যখন দুদক অভিযান চালাচ্ছিল তখন সাইফুল সব ধরা ছোয়ার বাইরে
আমেরিকায় এবং তার ভাই আনিস সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের
কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মাসুদ আলীর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত দল
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাইফুলের ঠিকাদারীর সব তথ্য চায়। সাইফুল ২০২২-২৩
অর্থ বছরে ৫৯ কোটি ৬১লাখ টাকা এবং ২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৭২ কোটি টাকার টেন্ডার
পেয়েছেন। দুদক বলছে কুমিল্লার সাতরার আবদুল মালেকের ছেলে সাইফুলের
বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো তিনি কাজ গুলো নিজে না করে অন্যদিক দিয়ে করিয়ে সুবিধা
নিতেন। সেই অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচার করতেন।
দুদকের উপ-পরিচালক মাসুম আলী জানান, আমরা যে আইডি গুলো পেয়েছি সেগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ঢাকার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠাবো।
কুমিল্লা
শহরের পুলিশ লাইন্সের এনএস গ্যালারীর মালিক সাইফুল ইসলামের বিষয়ে দুদকের
পক্ষ থেকে যে সব তথ্য চাওয়া হায়েছে, সেসব তথ্য প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর
কাছে রয়েছে। দুদক যে তথ্য চেয়েছে সে সব তথ্যই পাবে বলে নিশ্চিত করেছেন
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামছুল আলম।
নানাভাবে
জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে আরফানুল হক রিফাত
নির্বাচিত হওয়ার পর সিটি কর্পোরেশনের সব কাজ তদারকি করতেন সাবেক এমপি
বাহার নিজেই। এমন কি মেয়র রিফাতের কক্ষে সাবেক এমপি বাহারের লোক মোবাইলে
ক্যামেরা নিয়ে দাড়িয়ে থাকতেন। রিফাত কোন ফাইলে সাইন করেছেন তার ছবি তুলে
বাহারের কাছে পাঠাতেন।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে উন্মুক্ত টেন্ডার
হলেও ভয়ে সিটি কর্পোরেশনে দেশের কোন ঠিকাদার দরপত্র জমা দিতেন না। মেয়র
পদে রিফাত নির্বাচিত হওয়ার পর সাবেক এমপি বাহারের ঘনিষ্ঠ৩/৪ জন ঠিকাদার
বাহারের সামনে বসে দাম দর লিখে টেন্ডার জমা দিতো। এই ৩/৪ জনের মধ্যে যে
কেউ সিরিয়ালি টেন্ডার পেতেন। সেই টেন্ডার আবার ভাগ করতেন সাবেক এমপি বাহার
নিজেই। আর সে কাজ তদারকি করার সাহস পেতেন না প্রকৌশলীরা। সিটি কর্পোরেশনের
কাজ আদায় করে নিতে কষ্ট পেতে হতো তাদের। সাবেক এমপি বাহারের আস্থাভাজন
কথিত ঠিকাদারের বাইরে একবার প্রাণ আরএফএলের মতো প্রতিষ্ঠান ২৬ কোটি টাকার
কাজ পেয়েছিল। কিন্তু সে কাজ শুরুর জন্য মালামাল আনলে তা ফেলে দেয় বাহারের
ক্যাডাররা। এরপর আর কেউ ই সিটি কর্পোরেশনে টেন্ডার জমা দেয়নি।