আবু
সুফিয়ান।। ন্যায্য ভাতা না পেয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের কর্মচারীরা। সোমবার বেলা ১টা থেকে
কলেজের প্রশাসনিক ভবন থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় তারা। এসময় অফিসে চলমান
সকল কাজ অর্ধেক রেখেই বন্ধ করে দেয়া হয়।
কর্মচারীদের জানা গেছে, জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মচারীরা ডিউটি করে। এতে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত একটি অভ্যন্তরিন অর্থ পরীক্ষা
কার্যক্রমে যুক্ত কর্মচারী, শিক্ষক ও অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ পেয়ে থাকেন। এতে
কর্মচারীরা পূর্বে ন্যায্য হিস্যা পেলেও বর্তমান অধ্যক্ষ আসার পর থেকে তার
বড় অংশ নিয়ে যান কর্মরত শিক্ষকরা। এতে করে স্বল্প বেতনের ঠিকাভিত্তিক
চাকুরি করা কর্মচারীরা বঞ্চিত হন। তাই তারা আন্দোলন করছে।
এদিকে
কর্মবিরতিতে যাওয়ায় আটকে পড়েছে কলেজের বিভিন্ন কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে গেছে
মাস্টার্সের ভর্তির কার্যক্রমসহ বিভিন্ন নথির কার্যক্রম। এতে করে
ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা
জানান, এখন পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়টি পরীক্ষা হয়েছে। দুটি পরীক্ষা কমিটি টাকা
ভাগ করে নিয়ে গেছে। আমরা পূর্বে যা পেতাম তা এখন তার অর্ধেকের থেকেও নামে
আনা হয়েছে। আমরা কিভাবে চলবো? পিকে ভিত্তিক চাকরি করে কয় টাকা বেতন পাই?
অথচ বিসিএস ক্যাডার শিক্ষকরা আমাদের গরীব মানুষদের টাকা নিয়ে যাচ্ছে।
যেখানে তারা আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার কথা। আমরা কয়েকবার স্যারের
কাছে গিয়েছি। কিন্তু কোন সুরাহা পাইনি। তারা যখন নতুন হিস্যা করবে আমাদের
সাথে বসার ও আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা করেননি। নিজের ইচ্ছা মত সকল
ভাতার হিস্যা করে নিয়েছেন। এইজন্য আমরা কর্মীরা দিতে গিয়েছি। আমাদের
সমস্যার সমাধান হলেই আবার কাজে ফিরব।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ
কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও অধ্যক্ষের প্রধান সহকারী মাজহারুল আলম
বলেন, টিকাভিত্তিক কর্মচারীরা সামান্য কিছু টাকা পায়। সেই টাকা দিয়ে কিভাবে
চলে? আমাদের শিক্ষক কর্মকর্তাদের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত ছিল। আমি বারবার
গিয়েছি উনাদের কাছে। কর্মচারীরা বলেছিল কর্মবিরতিতে যাবে। তাদের নিবৃত্ত
করে রেখেছিলাম। কিন্তু তারা ন্যায্য পেয়ে এখন আন্দোলনের নেমে পড়েছে। এই
সমস্যাটা দ্রুত সমাধান করা হোক। আমাদের সাথে তারা বসুক।
কলেজের একজন
সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, নতুন অধ্যক্ষ এসে এমনটা করেছেন। এটা
ঠিক হয়নি। কারণ এখানে কমিটি লাভবান হবে। কিন্তু আমাদের যে কর্মচারীরা তেমন
সুবিধা পাবে না। আমরা এটা স্যারকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু
কর্মচারীদের সাথে কোন পরামর্শ করেনি বণ্টন কমিটি। সুতরাং বণ্টননীতি করার
সময়ই শিক্ষকদের পক্ষে করা হয়েছে। তাই এই সমস্যাটা হওয়ারই কথা।
বণ্টন
নীতিমালা কমিটির সভাপতি প্রধান অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা
মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী করেছি। যারা বলছে বণ্টন ঠিক হয়নি সেটা আপেক্ষিক
বিষয়। কর্মচারীরাও আমাদের অংশ।
বণ্টনের সময় কর্মচারীদের সাথে সমন্বয়
করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা জানিয়েছি। তারা অভিযোগ
করেছিল। কিন্তু এটাতো আমি একা করিনি। বোর্ডের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মজিদ বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তারা প্রিন্সিপাল স্যারকে জানিয়েছে। স্যার দেখছেন বিষয়টি।