শাহীন আলম ।।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পটভূমিতে র্যাপার শিল্পীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূহুর্তের মধ্যে ছাত্রদের আন্দোলনে উজ্জীবিত করতে গানগুলো ভূমিকা রেখেছিলো। র্যাপারদের অনেকে জেলও খেটেছেন আবার কেউ কেউ জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে গান করেছেন। এদের মধ্যে এবিএম নোমান আজাদ অন্যতম। একের পর এক প্রতিবাদী র্যাপ গান প্রকাশ করে আন্দোলনকারীদের অনুপ্রেরণা ও শক্তি যুগিয়েছেন নোমান। এবিএম নোমান কুমিল্লার মুরাদনগরে হিরাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি র্যাপ গান করার পাশাপাশি একজন নাট্যকার ও নির্দেশক।
গত কয়েক মাসে নোমানের মোট পাঁচটি র্যাপ গান মুক্তি পেয়েছে। যার প্রতিটি গানই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং জুলাই আন্দোলনের ভাষাকে আরও শক্তিশালী করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় কোটা প্রথা বাতিল চেয়ে “কোটা আন্দোলন” শিরোনামে একটি র্যাপ গান বের হয়। হাসিনা সরকার আন্দোলন দমন করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের যখন ঢালাওভাবে শিবির ট্যাগ দিতে থাকে তখন তিনি রিলিজ করেন ‘‘মেধাবীদের বাংলাদেশ” নামে দ্বিতীয় র্যাপ গান। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার হাসিনা পালানোর পর রিলিজ হয় “শেখ হাসিনা পালাইছে”। ইন্ডিয়ার পানি আগ্রাসন ও বাংলাদেশ নীতির সমালোচনা রিলিজ করেন “শত্রু আমগো কেডা?” এবং সর্বশেষ রিলিজ হয় “সুশীল”শিরোনামে একটি র্যাপ গান। প্রত্যেকটি গানই ব্যাপক তথ্যসমৃদ্ধ। তার গানের ভিডিওগুলো মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউয়ের মাইলফলক স্পর্শ করেছে এবং অনলাইনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রতিবাদী র্যাপ গান নিয়ে নোমান বলেন, আমার র্যাপ গানগুলো শুধু বিনোদনের জন্য নয়, প্রতিবাদের ভাষাও। প্রতিটি গানে শ্রোতারা মনের কথা গুলো খুঁজে পাবে। যখন অন্যায় দেখেছি তখনই গানের মাধ্যমে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছি এবং সারাজীবন এই যুদ্ধই করব। গান গুলোর গীতিকার কবি রাকিবুল এহসান মিনার অনেক যত্ন ও মেধা খাটিয়ে গান লিখেন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মিনারের সাথে আমার অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। দুজনের বুঝাপড়াটা অনেক ভাল এবং একে অপরকে বুঝতে পারি এবং দর্শক কি চায় সেটা বুঝার চেষ্টা করি। এসময় তিনি আরও স্মরণ করেন গানের ডিরেক্টর সাদ আল আমিন, সাউন্ড ডিজাইনার আমির হামজা খান এবং কবি সাইফ আলী খানকে।
নোমান আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময়টাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গান গুলো করা হয়েছে। ৪ আগষ্ট ঢাকা যখন উত্তাল তখন গুলিবর্ষণের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্টুডিওতে গিয়ে গান রেকর্ড করি। র্যাপার নোমান ছোট বেলা থেকেই মেলোডী গান করেন। র্যাপ গান করা শুরু করেন ২০২১ সাল থেকে। তিনি এর আগেও হাসিনা সরকারের নানা অসঙ্গতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে র্যাপ গান করেছেন,এর মধ্যে ‘সুখ চাই’ ‘বেসামাল’ ‘জং ধরা মনটা’ ‘এভাবে কি বাঁচা যায়’ উল্লেখযোগ্য।