কুমিল্লা
প্রতিনিধি।। ঈদের দিন আসতে বাকি আর কিছু ঘন্টা। রমজানের পুরো মাসে
কুমিল্লার বড় বড় শপিংমল ও ব্র্যান্ড শপগুলোতে উচ্চবিত্তের কেনাকাটার ভিড়
থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে ঈদ বাজারে ঢল নেমেছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের
মানুষের। শপিংমল, ফুটপাতে ভ্রাম্যমান দোকান, ছোট ছোট কাপড়ের দোকানগুলোতে
তিল ধারনের ঠাঁই নেই। মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটার ধুম পড়েছে। যেন মুসলমানদের
সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতরের আয়োজনের আগে নতুন পোশাক কেনাকাটার
আরেক উৎসব।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুর ও
রাজগঞ্জ এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, সাত্তার খান শপিং কমপ্লেক্স, খন্দকার হক
টাওয়ার, প্ল্যানেট এসআর, আনন্দ সিটি সেন্টার, ফাইন্ড টাওয়ারসহ আশেপাশের
দোকানপাট ও রাস্তার ভ্রাম্যমান দোকানগুলোতে গত কয়েকদিনের তুলনায় মানুষের
উপচে পড়া ভিড়। যাদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। যারা ঈদের
আগে চাঁদ রাত পর্যন্ত তাদের আয়ের ওপর নির্ভর করেই ঈদের কেনাকাটা করতে আসেন।
মানুষের ভিড় সামলাতে পনের রোজার পর থেকে কান্দিরপাড় এলাকায় প্রায় এক
কিলোমিটার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন রাস্তার উপর যেন আরেক
ঈদ বাজার।
টাউন হলের সামনে ভ্রাম্যমান কাপড় বিক্রেতা মো. জসিম উদ্দিন
বলেন, শেষ সময়ে এসে ভিড় বাড়ছে। প্রচুর ক্রেতা যাদের অধিকাংশ নিম্ন আয়ের
মানুষ। তাদের কেউ পেন্ট, গেঞ্জি, কেউ পাঞ্জাবি-পায়জামা, লুঙ্গি কিনছেন।
বিকাল থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। ফুটপাত মানভেদে একশ’ টাকা থেকে শুরু করে
পাঁচশ’ ও হাজার টাকা দামের নতুন কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। মার্কেটগুলোতে শুরুতে
ভিড় দেখা গেলেও এখন মানুষ ঝুঁকছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে। যাদের বেশিরভাগই
নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির।
মনোহরপুর ফুটপাতের কাপড় ব্যবসায়ী সোহেল
রানা বলেন, প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, জুতা-বেল্ট, শাড়ি, মানিব্যাগ, চশমা
থেকে শুরু করে শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের পোশাকই ফুটপাতে বিক্রি
হচ্ছে। এখানে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকায় মিলছে শার্ট, প্যান্ট,
পাঞ্জাবি, শাড়ি, লুঙ্গিসহ বাচ্চাদের পোশাক। রাত ১২ টা পর্যন্ত চলে
কেনাবেচা। গতবারের চেয়ে এ বছর ভালো বেচাকেনা হচ্ছে।
লোটো ব্র্যান্ডের
জুতার দোকানে সন্তানের জন্য জুতা কিনতে আসা বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক আমিনুল
ইসলাম বলেন, বেতন বোনাস মিলে টাকা পেয়েছি গতকাল। গতকাল শবে ক্বদর শেষ করে
আজ আসলাম মার্কেটে। দুই দিনে সব কেনাকাটা শেষ হয়ে যাবে।
মুরাদনগর থেকে
অটোরিকশা চালাক সাদেক মোল্লা এসেছেন শহরে কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, নিজের
অটোরিকশা দিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসছি। সবাই খুশি।
নগরীর
প্ল্যানেট এসআর শপিং মলের আয়রা বুটিকস্ এর স্বত্ত্বাধিকারী শারমিন আক্তার
চৈতী বলেন, এখন ক্রেতাদের অনেক চাপ। মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষ এখন জামা
কাপড় আনছে। বেশির ভাগ মেয়ে ক্রেতারা এখন ৬ শ থেকে ২ হাজার টাকা দামের
সেলোয়ার কামিজ খুজছেন। এবার একটু দাম বেশি হলেও আমরা ক্রেতাদের মনমত জামা
কাপড় সরবরাহ করতে পারছি।
কান্দিরপাড়ের খোসবো স্টোর্স’র স্বত্ত্বাধিকার
মো.আবদুল মালেক খসরু উষা বলেন, অনেকেই শেষ সময়ে এসে বেতন বোনাস পেয়েছে।
সাধারণত মধ্যবিত্তরা ২৭ রোজার পর শপিং করতে আসে। রমজানের শুরুতে বিক্রি কম
হলেও এখন আতর, টুপি, জায়নামাজ ও লুঙ্গির ক্রেতা বাড়ছে। ঈদের আরও দুই আছে।
আশা করছি আরও বিক্রি বাড়বে।