এবারের
ঈদে বাড়ি ফেরার যাত্রায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে দীর্ঘ কোন
যানজটের কবলে পড়তে হয়নি যাত্রীদের। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের ঈদ যাত্রায়
স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছেন মানুষ। যদিও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ
বাড়লেই বাজার ও টোলপ্লাজা গুলোতে জটলা তৈরি হয়।
গেলো কয়েকদিনে
মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের যানজট প্রবণ এলাকাগুলোতে যানবাহনের ধীরগতি থাকলেও
দীর্ঘস্থায়ী কোন জট তৈরী হয়নি। চালকরা বলছেন, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে
চৌদ্দগ্রামের আমজাদের বাজার পর্যন্ত কোন দুর্ঘটনা না ঘটলে-এবার যানজটের
শঙ্কা দেখছেন না তারা।
এদিকে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন
রাখতে হাইওয়ে পুলিশের আট শতাধিক সদস্যের পাশাপাশি অপরাধ দমনে চেকপোস্ট
বসিয়ে সড়কে রয়েছে সেনাবাহিনী। এছাড়াও মহাসড়কে যানজটের হটস্পট হিসেবে
চিহ্নিত ১২টি স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহনীকে সহযোগিতায় আছেন রোভার স্কাউট ও
আনসার সদস্যরাও।
শুক্রবার সকালে মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে
১১টায় ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় চট্টগ্রামমুখী লেনে উল্টে যায় একটি বালুবাহী ট্রাক।
যানবাহনের তীব্র চাপের মুখে ট্রাকটি সরাতে গিয়ে ওই এলাকায় চট্টগ্রামমুখী ৫
কিলোমিটারের মত যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ট্রাকটি সরিয়ে নিলেও উল্টোপথে
আসা যানবাহনের কারণে ওই এলাকায় যানজট নিরসনে বেগ পেতে হয় পুলিশ ও
সেনাবাহিনীকে।
দুপুর দুইটার পর ওই এলাকায় যানচলাচল শুরু হয় বলে
জানিয়েছেন ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি দেওয়ান কৌশিক আহমেদ। তিনি বলেন,
দুর্ঘটনা কবলি ট্রাক সরানো হয়েছে। যান চলাচলও শুরু হয়েছে। কিন্তু এখন ঢাকা ও
চট্টগ্রামমুখী দুই লেনেই উল্টোপথে গাড়ী ঢুকে জটলা তৈরী হয়ে আছে। আমরা ও
সেনাবাহিনী চেষ্টা করছি দ্রুত যানজট নিরসনের। সন্ধ্যার পরও সে স্থানে
যানবাহনের ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে সড়কের অন্যান্য যান চলাচল স্বাভাবিক
রয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশের যানজট প্রবন ১২টি
হটস্পট রয়েছে। যেখানে উল্টো পথে গাড়ি চলাচল, মহাসড়কে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে
যাত্রী উঠানামা এবং ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে পথচারীদের সড়ক পারাপারসহ
নানা অনিয়মের কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে যানজট। তাই এসব অপরাধ দমনে বাড়তি জনবল
মোতায়েন করেছে হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। ১০৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় এক
হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য, দুই শতাধিক রোভার স্কাউট সদস্য এবং সেনাবাহিনী ও
আনসার সদস্য নিয়োজিত আছেন। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চৌদ্দগ্রাম
বাজার, মিয়াবাজার, সুয়াগাজী বাজার, পদুয়ার বাজার, কুমিল্লা ময়নামতি
সেনানিবাস এলাকা এবং চান্দিনা এলাকায় কোন যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।
দুপুরে
মহাসড়কের চান্দিনা এলাকায় এশিয়া ট্রান্সপোর্টের যাত্রী মীর মোশাররফ হোসেন
বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরেছি। মহাসড়কের চিটাগাং রোড, মদনপুর, সোনারগাঁও
এলাকায় যানজটের ভোগান্তি ছিলো। ভবের চর এলাকাতেও যানবাহনের চাপ ছিলো।
কিন্তু দাউদকান্দির পর রাস্তা স্বাভাবিক। ইলিয়টগঞ্জ এসে দেখি বালুর ট্রাক
পড়ে আছে রাস্তার উপর। পরে ওখান থেকে কোন রকমে চান্দিনা চলে আসলাম।
স্টার
লাইন পরিবহনের চালক মিহির দেবনাথ জানান, এইদিকের রাস্তায় যেভাবে পুলিশ
সেনাবাহিনী আছে- দুর্ঘটনায় না পরলে যানজট হবে না। কারণ সেনাবাহিনী
চেকপোস্টের কারনে স্ট্যান্ডগুলাতে যানবাহন যত্রতত্র দাঁড়াতে পারছে না।
কুমিল্লা
৩৩ পদাতিক ডিভিশনের ১২ বীর ব্যাটালিয়নের মেজর সানিউল আলম বলেন, সড়কে
যানজটের কারণগুলো চিহ্নিত করে হটস্পটগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে সেনাবাহিনীর
সদস্যরা কাজ করছেন। তারপরও সড়ক আইন ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা অসাধু চালক ও
পরিবহনের বিরুদ্ধে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন
যাত্রায়।