নিজস্ব
প্রতিবেদক : এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই মাস বা ৬০ দিনের মধ্যে
ফল প্রকাশের যে রেওয়াজ রয়েছে, তা বজায়ে ‘আপ্রাণ’ চেষ্টা করবেন বলে মন্তব্য
করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।
তিনি বলেছেন, “যদি রেওয়াজ থাকে, নিশ্চয়ই আছে; আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব সেভাবে ফল দেওয়ার।”
এসএসসি
ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল সরকারি
বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি
এ কথা বলেন।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে
আগামী ১৫ মে। রেওয়াজ অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রস্তুত হলে তা আগামী
জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে তা জানতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।বৃহস্পতিবার
সারাদেশে শুরু হয়েছে চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও
সমমানের পরীক্ষা, যাতে অংশ নিচ্ছে ১১টি শিক্ষাবোর্ডের ১৯ লাখ ২৮ হাজার
শিক্ষার্থী।
প্রথম দিনে এসএসসিতে বাংলা প্রথম পত্র, দাখিলে কুরআন মাজিদ ও
তাজভিদ পরীক্ষা এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা
অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে পরীক্ষা।
বেলা ১১টায়
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন শিক্ষা উপদেষ্টা
চৌধুরী রফিকুল আবরার। সোয়া ১১টার দিকে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে তিনি
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হোন।
সোয়া ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর এসএসসি ও সমমান
পরীক্ষা আয়োজন ‘বিশাল কর্মযজ্ঞ’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটা করতে গিয়ে
আমরা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করেছি- যে ধরনের ব্যাত্যয় মাঝে-মধ্যে ঘটে যায়,
সেটা যেন না ঘটে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যারা, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ
পরীক্ষা সংগঠিত হচ্ছে, তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল।
“এর জন্য প্রাথমিক
কাজ যেটা সম্পাদন করা দরকার ছিল, অর্থাৎ পরিকল্পনা করা; সেটা সুচারুভাবে
সম্পন্ন হয়েছে বলে আমি মনে করি। তবে আমরা আশা করি, এ পরিবেশ বজায় থাকবে
পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত।”
অধ্যাপক রফিকুল আবরার বলেন, “পরীক্ষা সবে
শুরু, ছাত্ররা দিচ্ছেন, আমরাও কীভাবে সেটা সম্পাদন করছি- সেই পরীক্ষাও ছিল।
এটা শেষ হবে আগামী মাসে। আশা করি সুচারুভাবে সম্পন্ন হবে।”
প্রশ্নফাঁসের
আশঙ্কা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার মধ্যে ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “যে সমস্ত
সূত্র থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস অতীতে হয়েছে বলে জানা গেছে, আমরা চেষ্টা করেছি
সেখান থেকে যেন না হতে পারে। আশা করি, আমরা সাকসেসফুল হব। এক্ষেত্রে অবশ্যই
একটা টপ প্রায়োরেটি এরিয়ার মধ্যে হিসাবে আমরা এটাকে দেখেছি এবং কার্যকর
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
‘প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়ানো’ ব্যক্তিদের বিষয়ে অধ্যাপক আবরার বলেন, “আমরা আশা
করব, তারা বিরত থাকবেন। দেশের মঙ্গল আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের
রাজনৈতিক অবস্থান ভিন্ন হতে পারেৃপরীক্ষা এমন একটা বিষয় যেটা অনেক
প্রস্তুতির পর নেওয়া হচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীরা নানান রকমের তাদের মানসিক একটা
চাপ এখানে থাকে; প্যারেন্টেসের মানসিক একটা চাপ থাকে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
মানসিক চাপ থাকে।
“সেটার সাথে বাড়তি এ ধরনের অন্যায় চাপ যেন সৃষ্টি না
করেন, তার জন্য সকলের কাছে আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, যে আপনারা এগুলো
থেকে বিরত থাকবেন।”
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “যদি জেনুইন সমস্যা থাকে,
অবশ্যই আপনাদের দায়িত্ব- সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে আসা, যাতে
তারা সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে পারে। কিন্তু আপনি একটা জিনিস পেলেন আর সেটা
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেন, সেটার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই আপনাকে নিতে হবে।
“এর
মাধ্যমে কিন্তু অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। আমরা যেকোনো শুভবুদ্ধি সম্পন্ন
মানুষকে আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ করব- তারা যেন এগুলো থেকে বিরত থাকেন।”