রোববার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১
নববর্ষকে ঘিরে কুমিল্লায় বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানে হালখাতা তৈরির ধুম
বৈশাখের প্রথমদিন কুমিল্লার দোকানে দোকানে থাকবে হালখাতা উৎসব
মাসুদ পারভেজ
প্রকাশ: রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ২:০৪ এএম আপডেট: ১৩.০৪.২০২৫ ২:১৪ এএম |



 নববর্ষকে ঘিরে কুমিল্লায় বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানে হালখাতা তৈরির ধুম
পুরোনোকে ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরের সাথে হয় হিসেবের হালনাগাদ। নতুন হিসেব লিপিবদ্ধে প্রয়োজন হয় লাল মলাটের হালখাতার। কুমিল্লায় এ হালখাতা তৈরির দোকানে এখন ভিশন ব্যস্ততা। জাবেদা, খতিয়ান, টালিখাতা, বনবুকসহ নানা ধরনের খাতা তৈরি হচ্ছে। তবে রয়েল সাইজের টালিখাতার চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। আর তাই চৈত্রের শুরু থেকেই বিশেষ এ খাতা তৈরি এবং বেচাকেনার ধুম পড়েছে আনোয়ার এন্ড সন্স, কুমিল্লা পেপার হাউস, করুনা ভাণ্ডারসহ কুমিল্লার বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানগুলোতে। হিসাব রাখার আধুনিক মাধ্যম আসলেও এবারের নববর্ষকে ঘিরে কয়েক লাখ হালখাতার বাজার রয়েছে কুমিল্লায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা কেউ কাগজ কাটছেন, কেউ সেলাইতে ব্যস্ত, কেউ আবার আঠা দিয়ে হালখাতায় লাল মলাটের কাপড় লাগাচ্ছেন।
কুমিল্লার রাজগঞ্জের আনোয়ার এন্ড সন্সের মালিক মোঃ সাজিদুল আরিফসহ বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চৈত্রের শুরু থেকেই হালখাতা তৈরি করতে গিয়ে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের এ তৈরিকৃত হালখাতা কুমিল্লার বিভিন্ন আড়ত, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও যাবে আশপাশের জেলা চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নোয়াখালীতেও।
এদিকে হালখাতা উদযাপন ব্যবসায়ীদের একটি পুরনো রীতি। দিনটিতে নানা উৎসবের মধ্যদিয়ে হালখাতা লিপিবদ্ধের সূচনা হয়। গেল বছরের দেনাপাওনা মিটিয়ে হিসেবের নতুন খাতা খোলায় হালখাতার উদ্দেশ্য। এ কারণে কুমিল্লা নগরীর চকবাজার, রাজগঞ্জ, রাণীর বাজার ও নিমসার থেকে শুরু করে জেলার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন পড়ে লালশালুতে বাধা হালখাতার। তবে আগের মত নতুন হিসাব লিপিবদ্ধে আচার অনুষ্ঠান কিংবা ধর্মীয় রীতিনীতিতে জৌলুস কমলেও হালখাতার প্রচলনটা ধরে রেখেছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।
নববর্ষে পুরাতনকে বিদায় এবং নতুন হিসেব লিপিবদ্ধে হালখাতা ব্যবহারের বিষয়ে কুমিল্লার চকবাজারের শাহ পরান ট্রেডার্সের উজ্জ্বল সাহা এবং বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলেন, যুগের পালাবদলে জৌলুস হারিয়েছে হালখাতার আয়োজন। এখন শুরু নতুন খাতায় নতুন হিসেব লিপিবদ্ধের মধ্যেই বাঙালির ঐতিহ্য টিকে আছে। তবে এটিও গুরুত্ব হারিয়েছে কিছু কিছু ব্যবসায়ীর কাছে। আগে বৈশাখের প্রথমদিন ঢাকঢোল পিটিয়ে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নানা ভাবে সাজিয়ে নিজ নিজ ধর্মের রীতিনীতি আনুসায়ী বেচাবিক্রি শুরু করতেন। ক্রেতাদের আপ্যায়ন করা হতো মিষ্টি বিতরনের মধ্যেদিয়ে। ক্রেতাদের দাওয়াত করা হতো আমন্ত্রণপত্রের মাধ্যমে।
অন্যদিকে এবার হালখাতার সঙ্গে প্রিন্টিং দোকানেও ব্যস্ততা দেখা গেল আমন্ত্রণপত্র তৈরিতে। ব্যবসা মহলে বকেয়ার লেনদেন চলে সারা বছরই। তবে বৈশাখে হালখাতার আনুষ্ঠানিকতা কেবল বকেয়া আদায়ে উদ্দেশ্য থাকে না। মহাজনের সঙ্গে দেনাদার, বিক্রেতার সাথে ক্রেতার দেখা সাক্ষাৎ হয় এ আমন্ত্রণপত্রে।
কুমিল্লা নগরীর চান্দিনা প্লাজার ডিজাইন এড প্রিন্ট এর ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বলেন, যুগের সাথে হালখাতার আমন্ত্রণপত্রের প্রচলন কমে গেলেও এখনও গ্রামগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে পাচ্ছেন আমন্ত্রণপত্র তৈরির কাজ। নগরায়নের এ যুগে হালখাতার ঐতিহ্যকে এখনও অতিযত্নে ধরে রেখেছেন কিছু মানুষ। বাঙালির চিরায়ত এ সংস্কৃতিকে বিলুপ্ত হতে না দিয়ে ধরে রাখার আহ্বান তার।















সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লা সদরসহ তিন আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন মনির চৌধুরী
বিজয়পুরে মৃৎশিল্পেররপ্তানি সম্ভাবনা আটকে আছে জ্বালানি গ্যাসে
নববর্ষকে ঘিরে কুমিল্লায় বাইন্ডিং প্রতিষ্ঠানে হালখাতা তৈরির ধুম
দাউদকান্দিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার
দাউদকান্দিতে ছিনতাইকারী গ্রেফতার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে আবুর প্রার্থীতার খবরে আলোড়ন
কুমিল্লা সদরসহ তিন আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন মনির চৌধুরী
বাঁশির গ্রাম কুমিল্লার শ্রীমদ্দী
কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের গণসংযোগ পক্ষ উদ্বোধন
বিজয়পুরে মৃৎশিল্পেররপ্তানি সম্ভাবনা আটকে আছে জ্বালানি গ্যাসে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২