রাশিয়ার
হয়ে যুদ্ধে নিহত বাংলাদেশি যুবক আকরাম মিয়ার পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের হোসেনপুর গ্রামের
বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, একতলার ছোট্ট
বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়। বিছানায় শুয়ে বিলাপ করছেন মা মবিনা বেগম।
বাড়ির বাইরে বসে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বাবা মোরশেদ মিয়া। একদিকে
সন্তানের মৃত্যু শোক, অন্যদিকে ব্যাংক ও এনজিওর দেনা পরিশোধ নিয়ে দিশেহারা
হয়ে পড়েছেন তিনি।
এক পর্যায়ে জানতে চাইলে মোরশেদ মিয়া জাগো নিউজকে
জানান, রাশিয়ায় যাওয়ার পর ছেলেকে ওয়েল্ডারের কাজ দেয়নি। হেলপার হিসেবে তাকে
কাজ দেয়। চারমাস সে কোম্পানিতে কাজ করে ভাল বেতন পায় সে। এরপর থেকে তাকে
কাজ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। খাবারও দেয়নি। এর কিছুদিন পর আমার ছেলেসহ সাতজনকে
মস্কোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সেখানে তাদের সেনাবাহিনীতে যোগদান করিয়ে দেওয়া
হয়। তারা দুই বিলিয়ন টাকা ও রাশিয়ার নাগরিকত্ব দেবে বলে সেখানে নিয়োগ
দেওয়া হয়। পরে তারা জানতে পারে প্রতিজনকে দুই লাখ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
এর ১৫ দিন পর ট্রেনিং দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়। এরপর
তার মৃত্যু সংবাদ পাই।
আকরামের মা মবিনা বেগম বলেন, ১৩ এপ্রিল সর্বশেষ
আমার সঙ্গে আকরামের কথা হয়। শুক্রবার ময়মনসিংহের এক ছেলে ফোন করে জানায়
আকরাম আর নেই। যুদ্ধে প্রতিপক্ষের হামলায় মারা গেছে। আমার বিশ্বাস হয় না
আমার ছেলে নেই। আমি আমার সন্তানের মরদেহ একবার দেখতে চাই।
এ বিষয়ে
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন,
মরদেহটি কোথায় ও কার হেফাজতে রয়েছে সেটি নিশ্চিত হয়ে স্বজনদের যোগাযোগ করতে
বলেছি। এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়।