বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫
১১ বৈশাখ ১৪৩২
‘৫ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খরচ ২৩০০ কোটি টাকা, ৭০০ কোটিতে নামানো সম্ভব’
প্রকাশ: সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ১:৩৯ এএম |

 ‘৫ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খরচ ২৩০০ কোটি টাকা, ৭০০ কোটিতে নামানো সম্ভব’
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ২০২০-২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের যে নির্বাচনগুলো  হয়েছে, তাতে সরকারের খরচ হয়েছে ২৩০০ কোটি টাকার মতো। কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে এই খরচ ৭০০ কোটিতে নেমে আসবে এবং ২২৫ দিনের সময় ৪০ দিনে নেমে আসবে। আর নির্বাচনকেন্দ্রিক লোক নিয়োগ করা হয়েছিল ১৯ লাখের মতো, সেটা ৯ লাখে চলে আসবে। এটা একটা মৌলিক সংস্কার বলে মনে করি আমরা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের পূর্ণ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, আইনগুলোর ক্ষেত্রে দেখেছি, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত পাঁচটি আলাদা আইন। অনেক ক্ষেত্রেই এক আইন আরেকটির প্রতিরূপ অথবা সাংঘর্ষিক কোনও কোনও ক্ষেত্রে। আমরা সবগুলো আইন পর্যালোচনা করে একটি অ্যাক্টের অধীনে সবগুলো নিয়ে আসার জন্য বলেছি। তিনটি নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের মতো আয়োজন হয়ে যায়। একটা দেশে পাঁচটি নির্বাচন একটা সরকারের অধীনে পাঁচ বছর ধরে হতে থাকে। আমরা হিসাব করে দেখেছি , ২২৫ দিন চলে যায় এই নির্বাচনগুলো করতে গিয়ে। এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সাধারণ করা দরকার। যদি আমাদের সুপারিশ আমলে নেওয়া হয়— তাহলে একটা তফসিল দিয়ে ৪০ দিনে পাঁচ বছরের নির্বাচন করে ফেলতে পারবেন। এরকম নির্বাচন হলে একটা সরকার শুরু থেকে পাঁচ বছর কাজ করবে, আর নতুন কোনও ইলেকশন লাগবে না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটি করপোরেশন কিন্তু তাহলে ওই সরকারের সঙ্গে পুরো মেয়াদেই কাজ করতে পারবে।
তিনি বলেন, মূল সংস্কার না করে নির্বাচন করলে কোনও লাভ হবে না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক এটা আমরাও চাই। কিন্তু নির্বাচনের প্রশ্ন আসলে, আগে সংস্কার না করে কোনও নির্বাচন করলে কোনও লাভ হবে না। সেজন্য আমরা সংস্কারকে প্রাধান্য দিয়েছি। সংস্কার করার পর করলে কোনও অসুবিধা নেই।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সবার মুখে মুখে থাকলেও আসলে এটায় সরকারের কোনও চরিত্র ছিল না। কারণ ব্রিটিশ আমলে এটা যখন করা হয়, তার আগের স্তরের একটা ইতিহাস আছে। তখন কিন্তু এটাকে ‘ক্ষুদ্র প্রজাতন্ত্র’ বলা হয়েছে। কারণ ওখানে কেউ হস্তক্ষেপ করতো না, গ্রামের লোকেরাই সেখানে শাসন করতো। কিন্তু ধীরে ধীরে এটা পরিবর্তন হয়েছে। কারণ আগের যে কেন্দ্রীয় সরকার ছিল, সেটা সরকার হওয়ার আগেই কিন্তু আদিমতম রাষ্ট্র হচ্ছে স্থানীয় সরকার। অনেক দেশ আগে নিচে থেকে উঠে এসে স্টেট হয়েছে, তারপর ফেডারেশন হয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে সেটা হয়নি। আমাদের এখানে ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে স্থানীয় সরকার হয়। ব্রিটিশ আমল থেকে এই ধারা শুরু হয়েছে। কিন্তু এটা মানুষের কল্যাণের জন্য নয়, ব্রিটিশদের শাসনব্যবস্থার সুবিধার জন্য এটা করা হয়েছিল। পরিপূর্ণভাবে এটাকে সরকারি কাজের সঙ্গে অধীন রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, সেই সিস্টেম পাকিস্তান আমলেও খুব একটা বদলায়নি। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান করার পর যেই পরিবর্তন শুরু হয়েছিল, সেটা কিন্তু আইয়ুব খানের পর থেকে আর থাকেনি। বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর আমাদের রাষ্ট্রের জন্য যে জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ছিল তখন— স্থানীয় রাষ্ট্র হবে কি হবে না, তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই আগে যা ছিল সেটাকেই একটু নাড়াচাড়া করে শুরু হয়েছে। সেজন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ধীরে ধীরে জেলা পরিষদ গঠন হলো। এভাবে আমাদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা কিন্তু স্বায়ত্তশাসিত হয়ে গড়ে ওঠেনি। এখন এই সময়ে এসে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিবেদনে অনেকগুলো সুপারিশকে উগ্র মনে হবে, কারণ এতদিন যে ব্যবস্থা ছিল, সেটা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ছিল না। ভারতীয় উপমহাদেশে যে মানের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ছিল, সেই মানের স্থানীয় সরকার কিন্তু আমাদের ছিল না। আমরা এখানে সুপারিশের মধ্যে প্রথমে যেটা করার চেষ্টা করেছি-ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা- এই তিন প্রতিষ্ঠানে তিন ধরনের কাঠামো, তিন ধরনের নির্বাচন, তিন ধরনের নেতৃত্ব।
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, জেলা পরিষদে জনগণের কোনও ভোটাধিকার নাই। এই যে বিভিন্ন ধরনের কাঠামো  ও আইন এটা একটা বিরাট বাধা, আমরা চেষ্টা করেছি সংগঠন কাঠামো, আইন কাঠামো- দুটি সংস্কার করে সমপর্যায়ে নিয়ে আসা। সেজন্য আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে কীভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করা যায় এবং সংসদীয় ব্যবস্থার একটা প্রতিরূপ স্থাপন করার চেষ্টা করেছি। একই সুপারিশ পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রেও। সুতরাং, এখন যদি আমাদের সুপারিশ অনুযায়ী পুনঃস্থাপন করা হয়, তাহলে কিন্তু ইউনিয়ন থেকে সিটি করপোরেশন একই রকম কাঠামো হবে।













সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লায় রেল লাইনের উপর ৩ যুবকের খণ্ডিত লাশ
ঘুম, নেশা নাকি ভাগ্য- কোনটি কেড়ে নিয়েছে এই তিন যুবকের প্রাণ?
সিলিন্ডারবাহী পিকআপ উল্টে পুকুরে গোসলরত এক কিশোরের মৃত্যু
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর খন্দকার দেলোয়ারের পাশে ইনসাফ হাউজিং এন্ড ডেভেলাপার্স
কুমিল্লা শহরের পূর্বাংশে শুক্রবার ও পশ্চিমাংশে সোমবার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় রেল লাইনের উপর ৩ যুবকের খণ্ডিত লাশ
ঘুম, নেশা নাকি ভাগ্য- কোনটি কেড়ে নিয়েছে এই তিন যুবকের প্রাণ?
কুমিল্লা শহরের পূর্বাংশে শুক্রবার ও পশ্চিমাংশে সোমবার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা
বুড়িচংয়ে বিএনপি’র কমিটি গঠন নিয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ
সিলিন্ডারবাহী পিকআপ উল্টে পুকুরে গোসলরত এক কিশোরের মৃত্যু
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২