কুমিল্লার
বুড়িচংয়ের ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডে বিএনপি কমিটি নিয়ে
অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভারেল্লা উত্তর
ইউনিয়ন সভাপতি মুজিবুর রহমান।
বুধবার (২২ এপ্রিল) বিকালে রামচন্দ্রপুর
এলাকায় একটি সভায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। মুজিবুর রহমান বলেন,
১৯৯০ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত ১০ বছর যাবত বুড়িচং উপজেলা
ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি দায়িত্বে রয়েছি।
আমরা হঠাৎ
রাজনীেিত আসিনি। ১৯৯০ সাল থেকে ছাত্রদল করেছি। বিএনপির ইতিহাসে আমার আমলটা
খুব ক্রাইসিস মুহুর্ত ছিল। স্বৈরাচারের নির্যাতন অত্যাচারের সময়ে আমি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের দায়িত্ব পালন
করেছি। ৫ আগস্টের পর দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের নেতা
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপিকে বেগবান করার জন্য সকল
কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নে যারা দীর্ঘদিন
পরিশ্রম করেছে, লড়াই সংগ্রাম ও অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে দলকে টিকিয়ে
রেখেছেন। এমন ত্যাগী নেতাদের বাছাই করে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
কিন্তু যারা আওয়ামীলীগের সময় ঈগলের রাজনীতি করেছে, আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ
করেছে তারা কমিটি গঠন নিয়ে অপপ্রচার নেমেছে। আমি এসব ত্যাগী নেতাদের ছাড়া
রাজনীতি করতে পারব না। প্রয়োজনে পদত্যাগ করব। এমন লোক বিএনপির সভাপতি হতে
চান যার মেয়ের জামাই ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি মেয়ের জামাইয়ের ছাত্রলীগে
সভাপতি প্রার্থীর জন্য ২০-২৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এমন তথ্যও আমার কাছে।
যেহেতু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন হবে যে কেউ কমিটিতে সভাপতি
প্রার্থী হতে পারবেন ।
ইউনিয়ন কমিটির বিএনপির নেতারা বলেছেন, ৫১
সদস্যের মধ্যে ২৫ জন ইউনিয়ন কমিটি করবে। আর বাকি ২৫ জন থানার
দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা করবেন। একজনকে লটারি করে নিতে হবে । আমি বিএনপি’র
কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়কদের বললাম যারা দীর্ঘদিন আন্দোলন
সংগ্রাম করেছে, মামলা-হামলার ও অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ঘরে
ঘুমাতে পারেননি। এসব মানুষদের বাদ দিয়ে আমি রাজনীতি করতে পারবো না।
ত্যাগী
নেতাদের বাদ দিয়ে আমি ভারেল্লা ইউনিয়নের রাজনীতিতে থাকতে চাই না। আপনারা
আমাদের উপর কোন কিছু চাপিয়ে দিবেন না। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আমাদেরকে নিয়ে
কুমিল্লার একটি হোটেলে বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে কথা ছিল পাঁচজন-পাঁচজন করে
বসবে। কিন্তু আমি গিয়ে দেখি ওই পক্ষের সেখানে শতাধিক লোক উপস্থিত হয়েছেন।
যারা গত নির্বাচনে ঈগলের নির্বাচন করেছেন। গত নির্বাচনে যেসব ত্যাগী নেতারা
নির্বাচন বয়কট করে লিফলেট বিতরণ করেছিল। তখন ঈগল মার্কা নেতারা পুলিশ দিয়ে
ওই সময় তাদের হয়রানি করেছে। যদি এসব লোকদের সাথে যদি সমঝোতা করি তাহলে
আমার রাজনৈতিক চরিত্র থাকবে না। আমি বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কবির
হোসেন ভাইকে জানালাম ৫জনের কথা বলে ওনারা শতাধিক লোক নিয়ে আসছে। ওনি
বলেছিলেন এটা ঠিক হয়নি।
আমি গত ২১ তারিখে ৩টি ওয়ার্ডের সম্মেলন করার
তারিখ ঘোষণা করেছিলাম। সেই মোতাবেক ৩টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ওয়ার্ড কমিটি গঠন করার জন্য যে সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আছেন তারা কেউ
আমাকে কমিটি করতে নিষেধ করেননি। কেউ যদি বলতে পারে আমাকে কমিটি করতে নিষেধ
করেছে। তাহলে আমি দল থেকে পদত্যাগ করব । গত ১৭ বছর লড়াই সংগ্রামে যারা আমার
সাথে ছিল, যারা ফ্যাসিবাদের আন্দোলন করতে গিয়ে মামলা-হামলার শিকার হয়েছে,
হাটে-ঘাটে মাঠে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমি তাদেরকে বাদ দিয়ে রাজনীতি করব
না। সমন্বয় সমঝোতা চাইলে মাঠে আসেন জনপ্রিয়তার মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবে।
আপনার জনপ্রিয়তা থাকলে আমি আপনাকে ছাড় দেবো।
আমার বিরুদ্ধে যারা
অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এভাবে অপপ্রচার চালাবেন না।
আজকে যিনি ওই পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন খোরশেদ আলম লাভলু । আমার স্পষ্ট মনে
আছে ওনি ট্রাক মার্কা নিয়ে প্রচার প্রচারণা করছেন। খোরশেদ আলম লাভলু
ব্যারিস্টার আব্দুল আল মামুনকে নিয়ে এখানে এসেছিলেন। তখন সাধারণ মানুষকে
খোরশেদ আলম লাভলু বলেছিল, বিএনপি বেইমানের দল, খালেদা জিয়া বেইমানের নেত্রী
, আপনারা কেউ ধানের শীষে ভোট দিবেন না । হয় ট্রাক মার্কায় দিবেন না হয়
নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। নুরু মিয়া নামে একজন আমাকে ফোনে এ বিষয়টি
জানিয়েছিল, আমি দৌড়ে এসে ওনাদেরকে বলেছি, আপনারা এই গ্রাম থেকে চলে যান। ওই
সময় থেকে খোরশেদ আলম লাভলুর সাথে আমার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব শুরু ।
আমি
বিএনপির প্রশ্নে, দলের প্রশ্নে, নেত্রীর প্রশ্নে কোন আপোষ করি নাই ।
কিছুদিন আগে যারা জসিম ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঝাড়ু মিছিল করেছে। তারাই
আজকে কার ঘাড়ে শোয়ার হয়ে এসব করছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমরা শত শত
লোকের সামনে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করেছি । দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে যারা
আমার সাথে ছিল তাদের নিয়ে রাজনীতি করবো। নীতিতে থেকে রাজনীতি করবো,
অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না।