কোরআনে আল্লাহ তার নবি
নুহের (আ.) ঘটনায় উল্লেখ করেছেন, নুহ (আ.) তার জাতিকে বলেছিলেন, তোমরা
আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করো, ইস্তিগফারের বরকতে আল্লাহ
বৃষ্টি দান করবেন, তোমাদের সম্পদ ও সন্তান সন্ততিতে বরকত দান করবেন। আল্লাহ
বলেন,
আর বলেছি, ‘তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম
ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদেরকে
ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা
দেবেন আর দেবেন নদী-নালা। (সুরা নুহ: ১০-১২)
অর্থাৎ গুনাহমুক্তির ফলে
ইস্তিগফার ও ক্ষমা প্রার্থনার ফলে পরকালের নেয়ামত তো রয়েছেই, দুনিয়ার
জীবনেও আল্লাহ বরকত দান করেন। দুনিয়ার সুখ-সমৃদ্ধি, ধন-সম্পদ ও উত্তম
সন্তান-সন্ততি দান করেন।
বিপরীতে গুনাহ করলে মানুষ রিজিক থেকে বঞ্চিত
হয়। আল্লাহর নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হয়। উত্তম সন্তান-সন্ততি থেকেও বঞ্চিত হয়।
গুনাহের আখেরাতের শাস্তি তো রয়েছেই, দুনিয়াতেও গুনাহ আল্লাহর রহমত থেকে
বঞ্চিত হওয়ার কারণ হয়। সাওবান (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
দোয়া ছাড়া আর কিছুই ভাগ্য পরিবর্তন করে না,
নেক কাজ ছাড়া আর কিছুই আয়ু বাড়ায় না এবং পাপ ছাড়া আর কিছুই মানুষকে রিজিক
থেকে বঞ্চিত করে না। (সুনানে ইবনে মাজা: ৪০২২)
অর্থাৎ দোয়ার মাধ্যমে
মানুষের তাকদীরে মুআল্লাক বা কাজ সংশ্লিষ্ট ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে, নেক
কাজ করলে হায়াত বৃদ্ধি পেতে পারে বা জীবন বরকতময় হতে পারে এবং গুনাহ করলে
মানুষ রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়।
তাই কোনো গুনাহে জড়িয়ে পড়লে যত দ্রুত
সম্ভব ওই গুনাহ থেকে বিরত হোন এবং তওবা করুন। মানুষ যখন গুনাহ করে, আল্লাহর
অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়, তখন সে দুর্ভাগ্য, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও জাহান্নামের
পথে এগিয়ে যায়। গুনাহের জন্য অনুশোচিত হয়ে ইস্তেগফার করলে, আল্লাহর পথে
ফিরলে আল্লাহ দুনিয়ার জীবনে রহমত ও বরকত দান করেন, রিজিক বৃদ্ধি করে দেন।
আখেরাতেও তার জন্য রয়েছে ক্ষমা ও জান্নাত।