# ওয়ার্ড ভিত্তিক মাসে একবার দেওয়া হয় ঔষধ বছরের কোটি টাকা খরচ করেও মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে পারছে না কুমিল্লা সিটি করর্পোরেশন। বিপরীতে মশার উপদ্রব ঠেকাতে সাধারণ মানুষের অসচেতনাতাকেই দুষছেন সিটি করর্পোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রক দপ্তর।
তাদের দাবি, প্রতিদিনই নগরের কোন না কোন এলাকায় ফগার মেশিন ও স্প্রে মেশিন দিয়ে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তবে জনবল সংকট থাকায় পুরো নগর ঘুরে আবারও একই এলাকায় আসতে ৩০ থেকে ৪০ দিন সময় লেগে যায়। অর্থাৎ একটি এলাকায় প্রতি এক মাস অন্তর একবার মশাও ওষুধ ছিটানো হয়।
সিটি কর্পোরোনের এ কার্যক্রমে অসন্তুষ্ঠি জানিয়ে নগরবাসীর দাবি স্বল্প সময়ের ব্যবধানে গুরুত্বে ভিত্তিতে জনবহুল ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম চালানো হলে কিছুটা হলেও স্বস্থি পাবে নগরবাসি। না হয় আসছে বর্ষায় মৌসুমে এবং পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গু, চিগুনগুনিয়াসহ মশা বাহির রোগের প্রকোপ বাড়বে কুমিল্লায় ।
মশক নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রধান মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, সিটি করোপরেশনের ২৭ ওয়ার্ডের মধ্যে উত্তরের ১৮টি ওয়ার্ডে মশার ওষুধ বেশি ছিটানো হয়। দক্ষিণের ৯ওয়ার্ডে জনসংখ্যা কম থাকে বলে সেখানে মশার উপদ্রবও কম ওষুধও ছিটানো হয় কম। প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত সময় পর পর মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। কিন্তু নগরবাসী নিজের সচেতন না হলে ওষুধ ছিটিয়ে লাভ হবে না। তিনি আরও বলেন, ১৩ টি ফগার মেশিন দিয়ে সিটি ২৩জন কর্মী মশক নিধনে কাজ করবে। প্রতিদিন মশক নিধনে ব্যয় হয় ৭০ লিটার ডিজেল, ১৪ লিটার অকটেনসহ পদ্মা ওয়েল সরবরাহকৃত কিটনাশক। কর্মীদের বেতন ভাতা, মশার ওষুধের খরচ ছাড়াই মাসে ব্যয় হয় অন্তত তিন লক্ষ টাকা। জনপ্রতি কর্মীদের বেতন দিতে হয় মাসে ১৫ হাজার টাকা, ২৩ জন কর্মীর মাসে বেতন আসে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার মত।
সিটি করোপরেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বছরের শুধু তেলের খরচ বাবদ ব্যয় হয় অন্তত ৩৬ লক্ষ টাকা এবং বছরের কর্মীদের বেতন আসে ৪২ লক্ষ টাকা। দুই খাতেই মোট ব্যয় হয় ৭৮ লক্ষ টাকা। ওষুধ ও অন্যান্য খরচ বাবদ নুন্যতম ব্যয় ধরলেও বছরে কোটি টাকার মত খরচ হয় মশক নিধন খাতে।
এদিকে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই কুমিল্লায় বেড়েছে মশার উপদ্রব। এতে বাসাবাড়িতে দিনে-রাতে মশারি ছাড়া থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। নগরবাসী বলছেন, মশার যন্ত্রণায় তাঁরা অতিষ্ঠ। মশা তাড়াতে তারা কয়েল জ্বালানো, অ্যারোসলসহ ছিটানোসহ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেও রেহাই মিলছে না। এদিকে নাগরিকদের সুরক্ষা রাখতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
নগরীর টমছমব্রীজ এলাকার ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী মোল্লা আবদুর রহমান বলেন, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা থেকে মশার উপদ্রব বাড়ছে। শুধু রাতে নয় দিনের বেলায়ও মশা কামড়াচ্ছে। বর্ষাকালে ডেঙ্গুর আশঙ্কা করছি। শিশুদের নিয়ে বেশি চিন্তিত।
২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাজমুল হাসান, মশার কামড়ে অতিষ্ঠ। ছেলে মেয়েদের নিয়ে দুচিন্তা হচ্ছে কখন যেন মশার কামড়ে রোগে আক্রান্ত হয়। তাই দিনের বেলায়ও জানালা বন্ধ রাখতে হয়।
বালুতুপা এলাকার ফেরদৌসী বেগম, সুমাইয়া আক্তার ও আজিজুর রহমান বাচ্চু বলেন, এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করা হচ্ছে না। এ এলাকায় দিনের বেলাও মশার উপদ্রব দেখা যাচ্ছে। নগরীর অনেক এলাকায় আবর্জনা ময়লা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে না।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ মামুন বলেন, নাগরিক সচেতনায় পারে মশার উপদ্রব কমাতে। আমরা তো প্রতিদিন এলাকা ভিত্তিক ঔষধ দিয়ে থাকি। বাংলাদেশের সব ক’টি সিটি কর্পোরেশন থেকে কম জনবল হলো কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে। তবু আমরা কাজ চলমান রাখি। মশক নিধনের জন্য জবলব বাড়িয়ে লাভ হবে তখন, যদি নাগরিকরা সচেতন হন। নিজ আঙিনা, বাসার ছাদ পরিষ্কার রাখেন। নয়তো ডেঙ্গু হবে। অন্য রোগেও আক্রন্ত হবে। অপরিচ্ছন্ন রাখায় নাগরিকদের নোটিশ দিয়ে সতর্ক করা হয়।