দাউদকান্দি
উপজেলার চক্রতলা কলনীপাড়া গ্রামে স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক কোলাহলের জেরে
কাইয়ুম মিয়া (৩৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার
(২৫ এপ্রিল) গভীর রাতে দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চক্রতলী
কলনীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. কাইয়ুম মিয়া উপজেলার দৌলতপুর
ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের জালাল উদ্দীন মিয়ার পুত্র। তিনি স্ত্রী-সন্তান
নিয়ে শ্বশুরবাড়ির পাশে বসবাস করতেন।
নিহতের বাবা জালাল উদ্দীন ও ছোট
ভাই সুজন জানান, দীর্ঘ ১১ বছর আগে চক্রতলা কলনীপাড়া গ্রামের মৃত নূরু মিয়ার
মেয়ে আখি আক্তারের সঙ্গে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে
ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো। ঝগড়ার কারণে ছেলের সুখের কথা চিন্তা করে বাবা জালাল
উদ্দিন কাইয়ুম মিয়ার সংসার ভিন্ন করে দেন। তখন থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে
শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন কাইয়ুম।
এরপর থেকে ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ
রাখে না বাবা ও ভাইয়েরা। তবে মাঝেমধ্যে খবর পেতেন স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হলে
কাইয়ূমের স্ত্রীর বড়ভাই তাজুল ইসলাম ও মামা শ্বশুর আবুল হোসেন প্রায়ই
কাইয়ুমকে মারধর করত।
কাইয়ুমের বাবা বলেন, শুক্রবার রাত ২টার দিকে আমার
বড় মেয়ে ফোন করে আমাকে জানায় আমার ছেলে কাইয়ুম নাকি ফাঁসি দিয়ে মারা গেছে।
রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার ছেলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন।
গলায় কোনো ফাঁসির চিহ্ন দেখতে পাই নি। আমরা নিশ্চিত স্ত্রী ও তার ভাই,
মামা মিলে আমার ছেলেকে খুন করে ফাঁসি দেওয়ার নাটক সাজাচ্ছে। আমি
হত্যাকারীদের বিচার ও ফাঁসি চাই।
ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের অভিযুক্ত স্ত্রী
আঁখি বেগম, তার বড়ভাই তাজুল ইসলাম ও মামা আবুল হোসেনকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, কাইয়ূম মারা যাওয়ার পর থেকে তারা ভয়ে বাড়ি থেকে
পালিয়েছে।
দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জুনায়েত চৌধুরী
বলেন, শনিবার ভোরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায়
নিয়ে আসি। প্রাথমিকভাবে সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে নিহতের গলায় কোনো
ফাঁসির দাগ না থাকায় ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
মরদেহ প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ
জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।